কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন-২০২২ এ ১৯ নং ওয়ার্ডে কামাল জনপ্রিয়তার শীর্ষে
কুমিল্লা প্রতিনিধি।।
কুমিল্লা পৌরসভা থেকে সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত হয় ২০১২ সালে। নাগরিকদের সুবিধার জন্য সাবেক পৌরসভার ১৮টি ওয়ার্ড এবং সদর দক্ষিণের ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে মোট ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে সিটি কর্পোরেশন চালু রয়েছে। এখানে ২৭টি ওয়ার্ডে ২৭ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের মোট ৯ জনকে নিয়ে ৩৬জন কাউন্সিলর বিদ্যমান। দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জনগণ সুবিধা ভোগ করছেন।
আগামী মার্চের যে কোন সময় নতুন তফসিল ঘোষণা হলে সম্ভাব্য প্রার্থীরা একটু নড়েচরে বসবেন বলে অনেকে আশা করছেন। কাউন্সিলরদের সীমাবদ্ধতা আর বাজেটের কারণে অনেক উন্নয়ন সফলতার মুখ দেখেননি। তারপরেও বিশাল কর্মযজ্ঞের মধ্যদিয়ে ১৯নং ওয়ার্ডে যথেষ্ট উন্নয়ন সাধন করা হয়েছে বলে দাবী করছেন বর্তমান কাউন্সিলর জাকির হোসেন। তিনি আগামীতে আবারো কাউন্সিলর পদের প্রার্থী হিসেবে মাঠে থাকছেন। তার পাশাপাশি আরও ২/৩ জন দলের সমর্থন নিয়ে নমিনেটেড হতে চাইবেন। তাদের মাঝে অন্যতম জনপ্রিয় প্রার্থী নাজমূল হাসান চৌধুরী কামাল। পাশাপাশি আরো দু’ চারজন মাঠে থাকার চেষ্টা করবেন। বাকিরা মৌসুমী প্রার্থী হয়ে আসবেন বলে অনেকে মনে করেন। তফসিল ঘোষণা হলে হাত গুটিয়ে বসে যাবার সম্ভাবনাও প্রচুর। এ ক্ষেত্রে বর্তমান কাউন্সিলর জাকির আর কামাল পুরো দমে মাঠে থাকছেন নির্বাচনের শেষ অব্দি।
এদিকে বর্তমান কাউন্সিলর এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করাতে জনপ্রিয়তা কমে যায়নি রাজাপাড়া, ঢুলিপাড়া আর নেউয়ারার জনগণ মনে করছেন। তবে বিষয়টি বিতর্কিত এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে জনগণ যদি ম্যান্ডেড দেন- তাহলে ইনশালাহ আগামীতেও থাকতে চাইবো বললেন নতুন প্রার্থী কামাল। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন হোক এটা প্রত্যাশা করি মনে প্রাণে। এদিকে সরেজমিনে দেখা যায় ১৯নং ওয়ার্ডে বিস্তীর্ণ এলাকায় দৃশ্যমান তেমন কোন উন্নয়ন চোখে পড়ার মত নয়। যা ঘটেছে তার সবটাই সিটি কর্পোরেশনের বাজেট আর সরকারের রুটিন ওয়ার্ক। এ সকল সমস্যা নিরসনে আগামী দিনে কাউন্সিলর প্রার্থী নাজমূল হাসান চৌধুরী কামাল নির্বাচনে অংশ নিবেন বলে নিশ্চিত করেছেন। কামাল অল্প সময়ের মধ্যে তরুণদের পাশাপাশি ভোটারদের কাছেও সমানভাবে প্রিয়ভাজন হয়ে উঠেছেন। আগামীতে তরুণরাই তাকে নির্বাচনে জয়ী করতে তার পেছনে একাট্টা। এ বিষয়ে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম কিবরিয়া মোহন বলেন, তারুণ্যের প্রতীক নিয়ে কামাল জনগণের মাঝে আস্থা অর্জন করেছেন। দল থেকে সমর্থন পেলে হয়তো ওঠে আসবে আগামীতে।
৪০ বছরের নাজমূল হাসান চৌধুরী কামাল বেড়ে উঠেছেন এই জনপদে। মাটি আর মানুষের সাথে সম্পৃক্ত সেই স্কুলে পড়ার সময় থেকেই। নেউড়া প্রাথমিক শিক্ষা শেষে ইউসুফ হাই স্কুলের ছাত্র ছিলেন। পরবর্তী সময় সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্র। কলেজে পড়ার সময় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু। ১৯৯৬ থেকে ছাত্র রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথেও সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। এক সময় তিনি মহানগর ও ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতিতে জনগণের পছন্দের তালিকা চলে আসেন। তিনি বলেন, আমার অতীতের ক্যারিয়ার আর জনগণের সাথে সম্পৃক্ততার বিষয়টি যদি এলাকার মানুষ পছন্দ করে তাহলে ইনশালাহ আমি কামিয়াব হবো। নির্বাচিত হলে এলাকার পুঞ্জিভূত সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করে পর্যায়ক্রমে সবাইকে নিয়ে সমন্বয় করে এলাকার উন্নয়ন সাধন করার চেষ্টা করবো। আর সেটা হবে আমার মাননীয় সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এর দিক নির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে। তিনি বলেন, আমার ওয়ার্ডের রসুলপুর-ঢুলিপাড়া-রাজাপাড়াসহ ব্যাপক এলাকায় এখনো অল্প বৃষ্টি মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। এছাড়াও নোয়াপাড়া-ধনেশ্বর পর্যন্ত ব্যাপক উন্নয়ন করার পরিকল্পনা আছে। তিনি বলেন, এলাকায় শতভাগ বিদ্যুৎ, ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে আরো আধুনিকায়ন, সেনিটেশন ব্যবস্থা উন্নত করার প্রচেষ্টা থাকবে। সর্বোপরী একটি মাদকমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা চালু করার মধ্য দিয়ে ১৯ নং ওয়ার্ডকে অত্যাধুনিক নাগরিক সুবিধা সম্বন্বিত ডিজিটালাইজড করার চেষ্টা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করবো। অসামাজিক কর্মকান্ড আর ইভটিচিংসহ মাদকের ছোবল থেকে যুব সমাজকে রক্ষা করার জন্য আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তিনি আরো বলেন, পরিবেশ সুন্দর রাখার প্রচেষ্টায় আমার এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামরার আওতায় এনে একটি মনিটরিং এর মাধ্যমে অপরাধ নির্মূল করার প্রচেষ্টা করে যাবো।
কামাল আরো বলেন, এলাকায় মাদক ও সন্ত্রাস মুক্ত ওয়ার্ড নির্মাণে আমি জনগণের সহযোগিতা চাইবো আগামীতে। আমি নির্বাচিত হলে হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে রাজস্ব কর্মকর্তার সাথে আগামীতে বৈঠকে বসবো। কেননা বাণিজ্যিক এলাকার হোল্ডিং ট্যাক্স আর আবাসিক এলাকার হোল্ডিং ট্যাংক্সের যথেষ্ট বৈসম্য রয়েছে। এটা দূর করার চেষ্টা করবো। এছাড়াও আমার এলাকায় যত্রতত্র পড়ে থাকা ময়লার স্তুপ অপসারণের জন্য ভালো ডাম্পিং এর ব্যবস্থা করবো। উলেখ্য যে, যেহেতু এটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন-জনগণ চাইছেন স্থানীয়ভাবে কারা জনগণের কাজ করবেন তাদেরকে প্রাধান্য দেবেন। মেয়র নিয়ে কোন ফ্যাক্টর কাজ করে না এলাকাতে। আমি নির্বাচিত হলে জনগণের নাগরিক সুবিধা প্রদানের যত প্রকার কনসেপ্ট আছে তা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবো আগামী দিনগুলোতে। এলাকার জনগণও চাইছেন, কামাল এর মতো একজন সামাজিক ও ক্লিন ইমেজের মানুষ উঠে আসুক ১৯ নং ওয়ার্ডে।
কামাল বলেন, করোনা কালে জনগণকে সাহায্য করতে যথেষ্ট কাজ করেছি। যদি একটি প্লাটফর্ম পেতাম তাহলে কাজের ও সেবার মান দ্বিগুণ করা সম্ভব হতো। এদিকে করোনাতে জনগণের পাশে থেকে দাফন সম্পন্ন করে এলাকাতে নন্দিত হয়ে আছেন। তিনি অক্সিজেন সরবরাহ করা আর ব্লাড ডোনেশনের মতো অনেক জনহিতকর কাজ করে মানুষের কাছে সমাদৃত হয়ে আছেন। সেভ দ্যা ফিউচার ফাউন্ডেশনের সভাপতি ছাড়াও মানবতার দেয়াল নামক একটি স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের সাথে দীর্ঘদিন কামাল নি:স্বার্থভাবে সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে আসছেন।
আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ।।