কুমিল্লা প্রতিনিধি।।
বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের পূর্বহুড়া গ্রামে পূর্বশত্রুতার জের ধরে রাস্তা অবরোধ করে সন্ত্রাসী হামলার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়ে, বাড়ী-ঘর ভাংচুর করে একই এলাকার ফকির দৌলত আহমেদ ধনু ভান্ডারীর বখাটে ছেলে সাজেদুল হক পাশা ও তার সহযোগী মোকতুল হোসেন এর ছেলে সাব্বির।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে অনেকদিন ধরে পূর্বহুড়া গ্রামের পূর্বপাড়ার তাজুল ইসলামের সাথে (৫৮) একই গ্রামের মৃত: আব্দুল আজিজ এর পুত্র মোবারক হোসেন (৬০) ও তাহার ভাইদের সাথে জমি সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে দীর্ঘদিন ঝামেলা চলমান আছে, যাহার দেওয়ানী মামলা নং ৩৬২/২১ এর বাদী তাজুল ইসলাম এবং বিবাদী মোবারক হোসেন ও তার ভাই লোকমান হোসেন। এই জমি সংক্রান্ত মামলার সূত্র ধরে (বিবাদীর) সহযোগী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু মৃত কানু মিয়ার ছেলের সাথে এবং ঐ একই ব্যাক্তির অনুসারী মৃত আ: আজীজ এর পূত্র মোবারক মিয়া (৫৫) ও তার ভাইদের সাথে দীর্ঘদিন ধওে তাজুল ইসলামের পরিবারের মামলা চলমান আছে।
এই মামলার জের ধরে পহেলা অক্টোবর রবিবার রাত আনুমানিক ১১টার সময় ফকির দৌলত আহমেদ ধনু (৬৫) মিয়ার বখাটে পুত্র সাজেদুল হক পাশা ও তার সহযোগী একই গ্রামের মোকতুল মিয়ার বখাটে ছেলে মো: ছাব্বির কে সাথে নিয়ে দেশীয় লাঠি হাতে করে কোশাইয়াম গ্রামের দক্ষিণের বেলুয়া জলায় খালি নির্জন এলাকায় তাজুল ইসলামের ছেলে সুমন আহমেদ কে হামলার উদ্দ্যেশ্যে অপেক্ষা করতে থাকে, কারন তারা নিশ্চিত ছিলো তাজুল ইসলাম এর ছেলে সুমন আহমেদ ও তার সাথে থাকা ব্যাক্তিরা এই সড়ক ধরেই গ্রামের বাড়ী থেকে শহরে যাবে। রাতের বেলায় নির্জন এই সড়কটিতে ছিনতাইকারী সচরাচর থাকে বলে এই সড়কে সাধারনত রাত ৯/১০ টার পরে জনসাধারন চলাচল করার সাহস পায়না।
খবর নিয়ে জানা যায় এই দুই ব্যাক্তি প্রায় সময় রাত গভীর হলেই তাহার ব্যাক্তিগত মোটরসাইকেল নিয়ে (যাহার নাম্বার কুমিল্লা ল-১৩-৩৮১৬) নির্জন এই সড়কে অবস্থান করে থাকে। তাদের হামলা করার দৃঢ়তা ও নির্জনে অবস্থানের বিষয়ে সুমন আহমেদ ও তার সহযোগীদের নিকট সুষ্পষ্ট কোন তথ্য ছিলোনা। এ সময় সাজেদুল হক পাশা ও সাব্বির লাঠি নিয়ে উপরে উল্লেখিত নাম্বারের পালসার মোটর সাইকেল নিয়ে সুমন সহ আরো তিনজনের চলন্ত গাড়ীর পিছু নেয়, এবং পিছন থেকে লাঠি তাড়িয়ে আওয়াজ উচু কওে হুমকি দিয়ে বলতেছিলো গাড়ী থামাও, সেই সময় গাড়ীর লুকিং গ্লাসে চলন্ত বাইকে লাঠির চিত্র দৃষ্টিতে পড়তেই চালক মোটর সাইকেল কে সাইড না দিয়ে এক কিলোমিটার দূরে থাকা টহল পুলিশের কাছে গিয়ে গাড়ী থামিয়ে পিছনে ছিনতাইকারী ও ডাকাতের কবলে পড়েছে বলে বিষয়টি উপস্থিত পুলিশকে অবহিত করে, গাড়ীর পিছনে চলন্ত পালসার (কুমিল্লা ল-১৩-৩৮১৬) মোটরসাইকেল এর আরোহীদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিনতাইকারী ও ডাকাতের মতো হিংস্র ছিলো বলে জানা যায়। এমন সময় পুলিশের উপস্থিতি দেখে তারা উভয়ে মোটর সাইকেল থেকে লাঠিগুলো পাশ্ববর্তী ধানের জমিতে ফেলে দেয় এবং পুলিশ তাদের কে আটক করার পরে তাদের অসংলগ্ন আচরন দেখে তাদেরকে জেরা করতে থাকে।
এমন সময় তাদের মোটর সাইকেল আটকের ফলে তারা নার্ভাস হয়ে পুলিশের প্রশ্নের কোন উত্তর না দিতে পেরে শুধু একটা কথাই বার বার বলছিলো ”স্যার ফেসবুক ফেসবুক, ৪বছর ৪বছর, স্টিকার স্টিকার” এর বাইরে কোন কথা পুলিশের কাছে বলতে শোনা যায়নি। তবে পুলিশ তাদেরকে ধমক দিয়ে জানতে চায় কেন গাড়ীর পিছনে তাড়া করতে থাকে এবং সন্তোষজনক কোন উত্তর না পেয়ে তাদেরকে আটক করে রাখে পাশাপাশি গাড়ীতে সাথে থাকা সংবাদকর্মীর পরিচয় পেয়ে তাদেরকে নিরাপদে নির্ভয়ে চলে যেতে সহযোগীতা করেছে বলে জানা গেছে। এ সময় সুমন আহমেদ ও তার সহযাত্রীরা শহরে নিজ বাসার উদ্দ্যেশ্যে চলে আসে।
এ সময় পুলিশ এর এক সদস্য মোটর সাইকেল আরোহীদের কে বুঝানের চেষ্টা করছিলো অভিযোগ থাকলে থানায় যেতে, এভাবে ধাওয়া করে হামলা করলে বিপদে পড়তে হবে।
এ বিষয়ে সুমন আহমেদ জানায়, সেদিন শহরে বাসায় আসার পরে তাহার নিকট মোবাইলে কল আসে এবং জানতে পারে ফকির দৌলত আহমেদ ধনু মিয়ার ছেলে সাজেদুল হক পাশা, তার সহযোগী সাব্বির সহ অজ্ঞাত কয়েক জনকে সাথে নিয়ে নিয়ে তাদের বাড়ীঘরে ভাংচুর চালায়। পরবর্তী সময়ে সেই রাতেই আনুমানিক একটার সময় একজন সংবাদ কর্মী সহ পূনরায় তাহার নিজ বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায় তাহার ঘরে ভাংচুর করা হয়েছে, সেসময় ভাংচুর এর ভিডিও ধারন করে ওরা শহরে ফিরে আসে বলে নিশ্চিত করে। ধারনা করা হয় ওত পেতে থাকা ঐ দুই সন্ত্রাসী সাজেদুল হক পাশা ও সাব্বির নির্জন সড়কে হামলা করতে না পেরে বাড়ীতে এসে এসময় তাজুল ইসলামের বাড়ী ভাংচুর করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।
সুমন আহমেদ আরো অভিযোগ করেন, কয়েকদিন পর পরেই গ্রামের বাড়ীতে আসতে হয়, আর সেই আসাটাই আমার জন্য বিপদ হয়ে দাড়াঁয়, ফকির ধনু মিয়ার ছেলে সারাদিন বখাটে পোলাপানদের সাথে মিশে এলাকার পরিবেশ নষ্ট করে ফেলেছে। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বেশ কয়েকদিন আমার উপর হামলার চেষ্টা চালালেও আল্লাহর রহমত থাকায় এখনো পর্যন্ত সফল হতে পারেনি। শুধু এখানেই শেষ নয় এখন পর্যন্ত জানে মেরে ফেলার হুমকি অব্যাহত আছে বলে জানা যায়। আরো জানা যায় হামলা মামলা ও হুমকির বিষয়টি অব্যাহত থাকায় বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করা হবে বলেও জানা যায়।
অভিযোগের বিষয়ে, অভিযুক্ত সাজেদুল হক পাশার সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তাকে সরাসরি বা মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে বুড়িচং থানায় যোগাযোগ করা হলে উল্লেখিত বিষয়ে কোন অভিযোগ করা হয়নি বলেই নিশ্চিত হওয়া গেছে, তবে জানা যায় হামলা ও ভাংচুর কারীগণ থানায় অভিযোগ হতে পারে এই খবর পাওয়া মাত্রই উল্টো নিজেরা থানায় যায় ভূয়া অভিযোগ করতে, এসময় থানায় কর্মরত অফিসার অভিযোগের তেমন কোন গ্রাউন্ড না পেয়ে তাদের অভিযোগ না নিয়ে সবাইকে নিজেদের বাড়ীতে ফেরত পাঠায় বলে জানতে পারি,তবে উল্লেখিত বিষয়ে প্রতিবেদক এর অনুসন্ধান অব্যাহত আছে।
এফআর/অননিউজ