কুমিল্লার বুড়িচংয়ে জানাযার নামাজে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ৩ জন, গুরুতর আহত ১ জন
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
১৭ ডিসেম্বর রবিবার বিকেলে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার পূর্বহুড়া গ্রামের পূর্বপাড়া আল মদিনা জামে মসজিদের সামনে জানাযার নামাযে ন্যাক্কারজনক এই হামলার ঘটনা ঘটে।
উক্ত ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী এবং জানাযায় অংশ নেয়া লোকজন এর দেয়া তথ্যে জানা যায় যে সেদিন আসর এর নামাজের পর পূর্বহুরা গ্রামের মৃত হাকিম আলীর মরদেহ জানাযার জন্য পূর্বহুড়া মসজিদের সামনের মাঠে নিয়ে যাওয়া হয় এবং আশেপাশের ৪টি গ্রামের অসংখ্য মুসুল্লি জানাযার নামাজের প্রস্তুতি নেয়ার সময় আচমকা পূর্বহুড়া গ্রামের দৌলত আহম্মেদ ধনু মিয়ার পুত্র সাজেদুল হক পাশা ও তার সঙ্গীয় লোকজন নিয়ে দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রতিবেশী আহসানুজ্জামান সোহেল এর উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মাথায় ও শরীরে এলোপাতাড়ি আঘাত করে মারাত্মক জখম করে এসময় হামলায় আহত সোহেলকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে তার ফুফাতো ভাই আফ্রিদি সহ জানাযায় শরীক হওয়া লোকজন।
পরবর্তীতে জানাযায় আগত আশেপাশের ৪টি গ্রামের লোকজন একহয়ে পাশা ও তার সঙ্গীদের ধাওয়া দিলে তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
উক্ত ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় চা দোকানদার কামাল মিয়া জানান, আমরা আসর এর নামাজ শেষে মসজিদ প্রাঙ্গনে জানাযার নামাজের কাতারে দাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম ঠিক তখনি পাশা আচমকা সোহেলের উপড়ে হামলা করে তাকে রক্তাক্ত করে। পরে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় সাবেক মেম্বার রবিউল তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে।
পূর্বহুড়া গ্রামের প্রত্যক্ষদর্শীরা অনেকেই বিষয়টিকে নিয়ে নিন্দা জানার পাশাপাশি এলাকাবাসীরা বলেন, জানাযার মতো জায়গায় যারা হামলা করে তাদের কঠিন বিচার চাই যাতে ভবিষ্যতে এধরনের ঘৃণ্য কাজ কেউ করার সাহস না পায়।
উক্ত ঘটনায় কুমিল্লা সদর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুরুতর আহত সাংবাদিক মো.আহসানুজ্জামান সোহেল এর সাথে প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি জানান ফকির দৌলত আহমেদ ধনু মিয়া বহুদিন যাবৎ গ্রামের সহজ সরল মানুষের বিশ্বাসকে পুঁজি করে নানারকম কুসংস্কারের ভয় দেখিয়ে ঝাঁরফুক করে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা চালিয়ে আসছে, পাশাপাশি তার পুত্র সাজেদুল হক পাশা পিতার আধিপত্য থাকায় এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়া সহ লোকজন দিয়ে গ্রামে গাজা ইয়াবা ফেন্সিডিল বিক্রি, টাকার বিনিময়ে অন্যের জমিদখল করে আসছিলো, এতে করে এলাকার যুব সমাজকে ধংশের পথে ঠেলে দিচ্ছে তাই আমি পিতা পুত্রের হাত থেকে গ্রামবাসীকে বাঁচাতে এলাকায় জনসচেতনতা সৃষ্টি করার লক্ষে কাজ করছি এবং তাদের অপকর্মগুলি তুলে অনেক দিন পূর্বে সংবাদ প্রকাশ করি। সংবাদ প্রকাশের পর থেকে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে সাজেদুল হক পাশা বেশ কয়েকবার সন্ত্রাসী হামলার চেষ্টা করে এজন্য ব্যক্তিগত নিরাপত্তা চেয়ে বুড়িচং থানায় গত ২৭/১১/২০২৩ ইং তারিখে একটা সাধারন ডায়েরী করি। কারনে আমি গ্রামের বাড়িতে আসা বন্ধ করে দেই। গত রবিবার আমার প্রতিবেশী বড়ভাই হাকিম আলীর মৃত্যু হলে তার জানাযা ও দাফনে অংশগ্রহনের জন্য বাড়িতে আসি আর যখনি আমি জানাযার জন্য মসজিদের মাঠে যাই পাশা তার লোকজন নিয়ে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে চাপাতি সহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে, পরে রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয়রা আমাকে হাসপাতালে পাঠায়।
এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি তবে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করে সাধারন ডায়েরীর কপি ও হামলার ছবি বুড়িচং থানায় পাঠানো হয়েছে, সুস্থ হয়ে থানায় গিয়ে মামলে করবেন বলে জানা যায়।
উক্ত ঘটনায় সাজেদুল হক পাশার পিতা ধনু মিয়া বলেন সোহেল আমাদের নামে বেশকিছুদিন যাবৎ ফেসবুকে লেখালেখি করতেছে বিধায় আমার ছেলে ক্ষিপ্ত হয়ে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে মনে হয় আমি মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করেছি বিষয়টি স্থানীয় ভাবে মীমাংসার চেষ্টা চলছে।
এদিকে আহত সাংবাদিক আহসানুজ্জামান সোহেল এর বাবার সাথে কথা হলে তিনি বলেন ধনু মিয়া ও তার সন্ত্রাসী ছেলে সাজেদুল হক পাশা অনেকদিন যাবৎ প্রতিনিয়ত হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলো, আমার ছেলেকে দেখে নিবে বলে পাশা এর আগেও আমার ছেলের উপর বেশ কয়েকবার হামলা করেছিল। নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারন ডায়েরী করা হলেও কোনো কিছুতেই তারা থামছেনা আমরা নিজেদের জীবন নিয়ে চরম আতংকে দিন পার করছি তাদের ভয়ে আমার ছেলে কুমিল্লায় বাসা ভাড়া করে থাকতে হচ্ছে তার পরেও হামলার হাত থেকে রেহাই পেলোনা আমি প্রশাসনের নিকট আমার পরিবারের নিরাপত্তার দাবী জানাচ্ছি।
এফআর/অননিউজ