সাইফুল ইসলাম,কুমিল্লা।।
কুমিল্লায় আওয়ামীলীগ নেতা এনামুল হত্যার প্রধান ২ আসামী আমান ও সাঈদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত সুইস গিয়ার উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত ১৯মে কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী মডেল থানার ২নং উত্তর দূর্গাপুর ইউপির আলেখারচর দক্ষিন পাড়া জামে মসজিদ এর কাছে পাকা রাস্তার উপর দুষ্কৃতকারীরা দূর্গাপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক'কে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। এ হত্যাকান্ডের সংবাদ জানার পর তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন, আসামীদের সনাক্ত ও গ্রেফতারের লক্ষ্যে জেলা গোয়েন্দা শাখাসহ কোতয়ালী থানা পুলিশকে দিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে নিহতের পিতা আব্দুল ওদুদ বাদী হয়ে এজাহারনামীয় ১০ জন সহ অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করলে পেনাল কোড রুজু করা হয়। জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি টিম ও কোতয়ালী থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে এজাহারনামীয় ৭নং আসামী কাজী নিজাম উদ্দিন এবং ১০নং আসামী মোঃ জাকির হোসেনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি থানার লৌহগং এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত এজাহারনামীয় ২নং আসামী কাজী আমান উল্লাহ ও ৩নং আসামী আবু সাঈদকে গত ২০মে সকালে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামী কাজী আমান উল্ল্যাহ ও আবু সাঈদ আওয়ামীলীগ নেতা এনামুল হক এর হত্যাকান্ডে প্রত্যক্ষভাবে অংশ গ্রহন করে।
তিনি আরোও বলেন, মাদ্রাসার কমিটি, গত ইউপি নির্বাচন ও মসজিদ কমিটি নিয়ে জহির ও এনামুলের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। সর্বশেষ জহিরের ফেন্সিডিল খাওয়ার ভিডিও প্রকাশ ও এই ভিডিও নিয়ে এনামুলের প্রচারণার কারনে সম্প্রতি এ বিরোধ চরমে উঠে। তাছাড়া এনামুলের সাথে আসামী আমান উল্ল্যাহ ও সাঈদ এর ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল। এসব বিষয় নিয়ে জহির, আমান উল্ল্যাহ ও সাঈদ গংরা নিহত এনামুলকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৯মে শুক্রবার আসামীগণ সবাই একই মসজিদে জুম্মার নামাজ পড়ার পরিকল্পনা করে এবং রাতেই আসামী আমান উল্ল্যাহ একটি সুইস গিয়ার সংগ্রহ করে নিজের কাছে রাখে। জুম্মার নামাজ শেষে আওয়ামীলীগ নেতা এনামুল হক মসজিদ থেকে বাহির হয়ে বাড়ীতে যাওয়ার পথে জনৈক হাজী সিরাজুল ইসলাম এর বাড়ীর পূর্ব পার্শ্বে পাকা রাস্তার উপর গ্রেফতারকৃত আসামী কাজী আমান উল্লাহ ও আবু সাঈদ সুইচ গিয়ার দিয়ে ভিকটিম এনামুল হক'কে গলায় ও বুকে এলোপাথারী আঘাত করে হত্যা করে। ঘটনার পর আসামীদ্বয় এলাকা ছেড়ে খাগড়াছড়ি পালিয়ে যায়।