কুমিল্লায় রোগীর শরীরে ভুল ব্লাড ট্রান্সফিউশন; হসপিটাল ও ডাক্তারের বিরুদ্ধে মামলা
কুমিল্লা প্রতিনিধি।।
কুমিল্লা শহরের প্রাণকেন্দ্র মিডল্যান্ড হসপিটালে এক রোগীকে এ পজেটিভ ব্লাড গ্রুপের জায়গায় বি পজেটিভ ব্লাড ট্রান্সফিউশন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগীর পরিবার থেকে জানাযায় গত ১২ই মার্চ (রবিবার) বিকাল ৪টায় ৩৫ মিনিটে বরুড়া উপজেলা লক্ষিপুর ইউনিয়নের পাঁচথুবী গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হাসিনা আক্তার কুমিল্লা মিডল্যান্ড হসপিটালে চিকিৎসা নিতে আসেন। তিনি জরায়ুর প্রবলেম নিয়ে হসপিটালে ভর্তি হন।
রোগী হাসিনা আক্তারের ব্লাড গ্রুপ টেস্ট করে রোগীর পরিবারকে বললো, বি পজেটিভ ব্লাড লাগবে। তারপর, ব্লাড ক্লালেশন এবং ব্লাড ক্রস ম্যাচিং করে রোগীর অপারেশন থিয়েটারে ব্লাড ট্রান্সফিউশন। তারমাঝে ডাঃ নাজনীন জাহান লুবনা বললো, এক ব্যাগে ব্লাড হবে না, আরেক ব্যাগ ব্লাড লাগবে। অপারেশন সময়কালীন প্রথম ব্যাগ ব্লাড ট্রান্সফিউশন সময় রোগীর চটপট, চেচামেছি। যখন দুইঘন্টাও অপারেশন শেষ হচ্ছে না, রোগীর পরিবার তখন, অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করে দেখতে পেলো জোর জবর দস্তি করে ডাঃ নাজনীন জাহান লুবনার সামনে ব্লাড ট্রান্সফিউশন চলছে। এর মাঝে মিডল্যান্ড হসপিটালের ল্যাব বন্ধ করে দেয়। ল্যাব টেকনোলজিস্ট বললো, আপনারা অন্য একটি হসপিটালে গিয়ে ব্লাড কালেকশন ও ব্লাড ক্রস ম্যাচিং করে নিয়ে আসেন। রোগীর একজন স্বজন, ডোনার ও হসপিটালের একজন কর্মচারী অন্য একটি হসপিটালে ব্লাড কালেকশন ও ক্রসম্যাচিং করতে গিয়ে দেখা যায় রোগীর ব্লাড গ্রুপের সাথে ডোনারের ব্লাড গ্রুপ মিলছে না।
তারপর, ডাঃ নাজনীন জাহান লুবনা ও হসপিটাল কর্তৃপক্ষ টের পেয়ে রোগী রেখে তাড়াহুড়া করে রোগীর পরিবারকে বললো আল্লাহ আল্লাহ করেন, রোগীর অবস্থা ভালো না, আপনারা অন্য হসপিটালে নিয়ে যান। এই বলে হসপিটাল ত্যাগ করেন ডাঃ লুবনা।
একজন রোগী অপারেশন থিয়েটারে ব্লাড ট্রান্সফিউশন সময় রোগীর কাপনি, চটপট করলে এই সময় করনীয় কি? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ডাঃ বলেন, ব্লাড ট্রান্সফিউশন সময় রোগীর কাপনি ও চটপট করলে ব্লাড বন্ধ করে দেওয়া।
এই বিষয় ডাঃ নাজনীন জাহান লুবনা বলেন, এখানে আমার কোন দোষ নেই, ল্যাব টেকনোলজিস্ট কারনে এই প্রবলেম হয়েছে।
মিডল্যান্ড হসপিটালের ল্যাব টেকনোলজিস্ট বেলায়েত হোসেন স্বপন দোষ স্বীকার করতে তিনি রাজি নন। তিনি তার মত গোঁজা মিল দিয়ে দায় সারাতে চাচ্ছেন।
এই বিষয়েবরোগীর বোন জামাই (ভাই) আব্দুল মালেক বলেন, ডাঃ নাজনীন জাহান লুবনা ও ল্যাব টেকনোলজিস্ট আমার বোনের জীবনটা শেষ করে দিলো। তিনি এখন হাঁটতে চলতে পারছেন না। তার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ।
রোগীর আত্মীয় মহিউদ্দিন মাহি বলেন, ডাক্তার ও টেকনোলজিস্ট এর অবহেলায় আজকে এই গঠনা ঘটেছে। অল্পের জন্য রোগী বেচে গেলো। কিন্তু রোগীর বিভিন্ন প্রবলেম দেখা দেওয়া শুরু করেছে।
৩০শে মার্চ (বৃহস্পতিবার) কুমিল্লা আদালতে মামলা হয়। মামলা নং সি আর- ৩৭৩। ধারা- ৩৩৮/৪১৮/৩৪।
ভুক্তভোগীর আইনজীবী জয়নাল আবেদীন মাঝারী বলেন, কুমিল্লার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিঃ ১নং আমলী আদালতে হসপিটাল, ডাক্তার ও টেকনোলজিস্ট বিরুদ্ধে সি আর – ৩৭৩ মামলা করা হয়েছে। আদালত সিভিল সার্জন তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।