ইঞ্জিনিয়ার রিপন মৈশানের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, পদ ফিরিয়ে দিলো বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

ইঞ্জিনিয়ার মোঃ শফিউল আজম মৈশান রিপনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে তাকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদ পুনর্বহাল করা হয়েছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বহিষ্কার প্রত্যাহার সংক্রান্ত এ সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুসারে এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর বলে জানানো হয়।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্বে দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে রিপনকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব স্তরের দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তবে রিপনের আপিল ও আবেদন বিবেচনায় নিয়ে দলীয় নীতিমালার আলোকে এই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে তাকে পুনরায় দলে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়।

সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, “ইতোপূর্বে দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আপনাকে দলের সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। আপনার আবেদনের প্রেক্ষিতে দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক আপনার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে প্রাথমিক সদস্য পদ ফিরিয়ে দেয়া হলো। এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে।”

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, “এখন থেকে দলীয় নীতি ও শৃঙ্খলা মেনে দলকে শক্তিশালী ও গতিশীল করতে আপনি কার্যকর ভূমিকা রাখবেন বলে দল আশা রাখে।”

রাজনৈতিক অঙ্গনে ইঞ্জিনিয়ার রিপন মৈশান একজন পরিচিত মুখ। তিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ, দলীয় কর্মসূচিতে নিয়মিত উপস্থিতি এবং আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা রাখার জন্য দলীয় মহলে তাকে একজন সাহসী তরুণ নেতা হিসেবে অভিহিত করা হয়। বিশেষ করে বিগত সময়ে রাজনৈতিক আন্দোলনের সময় একাধিকবার কারাবরণও করেন তিনি।

রিপনের রাজনৈতিক প্রয়াস এবং নিবেদন তাকে তার দলের তৃণমূল কর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। তার সহযোদ্ধা ও এলাকার সিনিয়র নেতারা মনে করেন—দলে তার ফিরে আসা স্থানীয় বিএনপি কাঠামোকে শক্তিশালী করবে এবং তরুণ কর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে।

পারিবারিক পরিচয়ে রিপন ময়নামতির সম্ভ্রান্ত মৈশান পরিবারের সন্তান। তার বড় ভাই দিদারুল আলম দিদার কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা, বুড়িচং উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। রিপনের আরও দুই বড় ভাই হারুন রশীদ মিঠু ও আব্দুর রাজ্জাক টিটু ছাত্রদলের সাবেক সক্রিয় নেতা এবং বর্তমানে বিএনপিতে দায়িত্বশীল অবস্থানে রয়েছেন। রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠা রিপন ছাত্রজীবন থেকেই দলীয় আদর্শ ও কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত ছিলেন।

স্থানীয় দলীয় নেতাদের মতে, রিপন মৈশানের প্রত্যাবর্তন কুমিল্লার বিএনপি রাজনীতিতে নতুন ভারসাম্য সৃষ্টি করবে। বিশেষ করে তরুণদের নেতৃত্বে সংগঠনকে মাঠে ফিরিয়ে আনতে এবং ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কর্মসূচি বাস্তবায়নে তার অভিজ্ঞতা সহায়ক হবে। তারা মনে করছেন—এই সিদ্ধান্ত দলের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করে।

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারকে স্বাগত জানিয়ে বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা বলেন—ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীর রাজনীতিতে শৃঙ্খলার সাথে সংগঠনের প্রতি দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করাই এখন প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। দলীয় সংগঠনের ঐক্য দৃঢ় করতে শাস্তির পাশাপাশি সংশোধন এবং পুনঃস্থাপনের সংস্কৃতি থাকা জরুরি—এমন অবস্থানও প্রকাশ করেন তারা।

প্রাথমিক সদস্য পদ ফিরে পাওয়ার পর রিপন তার প্রতিক্রিয়ায় জানান—দলে ফিরে আসার সুযোগ পেয়ে তিনি কৃতজ্ঞ। তিনি জানান, দলীয় আদর্শে অটল থেকে নেতৃত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে দলের জন্য সর্বোচ্চ দিয়ে কাজ করে যেতে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ইঞ্জিনিয়ার রিপন মৈশান আবারও সক্রিয়ভাবে বিএনপির রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ পেলেন—যা স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তাৎপর্যপূর্ণ একটি বার্তা বহন করছে।

আরো দেখুনঃ