কুমিল্লায় মহাঅষ্টমী পূজা অনুষ্ঠিত
কুমিল্লা প্রতিনিধি।।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজোর তৃতীয়দিন মহাষ্টমী। সারাদেশের ন্যায় বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় কুমিল্লা ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী রাজরাজেশ্বরী কালী বাড়িসহ জেলার প্রতিটি পূজামণ্ডপে অনুষ্ঠিত হয় মহা অষ্টমী পূজা। তদুপলক্ষে শ্রী শ্রী রাজ রাজেশ্বরী কালী বাড়িতে পুষ্পাঞ্জলি শেষে বলিদান করেন ভক্তরা।
পঞ্জিকা অনুসারে গত বৃহস্পতিবার দিবা ৭টা ৫৩ মিনিট ৫৮ সেকেন্ড অষ্টমী তিথি আরম্ভ হয়ে আজ শুক্রবার দিবা ৭টা ১৭ মিনিট ১১ সেকেন্ড পর্যন্ত। এরপর নবমী আরম্ভ। মহাঅষ্টমী তিথিতে ১০৮টি পদ্মে মায়ের অর্চণা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এ তিথিতে সন্ধী পূজা ও কালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়- জেলায় গেলো বছরের তুলনায় এবছর ৯৩টি পূজামন্ডপ কমেছে। ২০২৩ সালে জেলায় ৮শ’ ৪১টি পূজামন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছিল আর এবছর ৭৪৮টি পূজা মন্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয় উৎসব। এরমধ্যে কুমিল্লা মহানগরীতে ৬৬টি পূজা, আদর্শ সদর উপজেলায় ২৬টি পূজা, মুরাদনগর উপজেলায় ১৪৫টি, দেবীদ্বার উপজেলায় ৮২টি, হোমনা উপজেলায় ৪৮টি, লাকসাম উপজেলায় ৩০টি প্রতীমা পূজা, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় ১১টি প্রতীমা পূজা, বুড়িচং উপজেলায় ৩৬টি, দাউদকান্দি উপজেলায় ৪১টি, চান্দিনা উপজেলায় ৬৫টি, চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় ২২টি, মনোহরগঞ্জ উপজেলায় ১১টি, লাইমাই উপজেলায় ১৬টি, বরুড়া উপজেলায় ৮৭টি, নাঙ্গলকোট উপজেলায় ১১টি, তিতাস উপজেলায় ১৪টি, সদর দক্ষিণ উপজেলায় ২৮টি ও মেঘনা উপজেলায় ৯টি পূজামন্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব।
এদিকে, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কুমিল্লা জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নির্মল চন্দ্র পাল ও সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র সরকার জানান- দুর্গোৎসব সনাতন ধর্মের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। এ বছর শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মায়ের পূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে আমরা আশাবাদী। এজন্য জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে সাদুবাদ জানাই।
অপরদিকে, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কুমিল্লা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক অচিন্ত দাশ টিটু ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ আদর্শ সদর উপজেলা শাখার সভাপতি যোগেশ সরকার বলেন- এ বছর কুমিল্লা মহানগরীতে ৬৬টি ও আদর্শ সদর উপজেলায় ২৬টি পূজামন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ কুমিল্লা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ তাপস কুমার বকসী বলেন- ঢাক, কাঁসর, ঘণ্টা, শঙ্গ এবং উলুধ্বনিতে মুখরিত প্রতিটি মণ্ডপ। শিল্পীদের রংতুলির ছোঁয়া, বিভিন্ন কারুকাজ ও নানা আলোকসজ্জায় উৎসবের সাজে সেজেছে প্রতিটি মন্ডপ। ধূপ-আগরবাতির গন্ধ মোহিত করে তুলেছে আঙিনা। ভক্তদের পূজা- অর্চনা, দেবী-দর্শন,দেবীর পায়ে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান ও প্রসাদ গ্রহণের মাধ্যমে দিনব্যাপী চলেবে পূজার আনুষ্ঠানিকতা। এরআগে গত বুধবার মহাষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে শুরু হয় শারদীয় দুর্গোৎসব আর ১৩ অক্টোবর রোববার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসব।
সনাতনী শাস্ত্র অনুযায়ী- এ বছর দেবী দুর্গা এসেছেন দোলায় বা পালকিতে চড়ে আর বিজয়া দশমীর দিন ঘোটকে বা ঘোড়ায় মর্ত্যলোক ছেড়ে কৈলাসে চলে যাবেন।