কুষ্টিয়ায় আমন ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরা
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি।।
আমন ধানে নবান্ন উৎসবকে ঘিরে কৃষকের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক। এখন কৃষক তার উৎপাদিত ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছে। বাতাসে পাঁকা ধানের সুমিষ্ঠ ঘ্রাণে মুখরিত হওয়ায় মন-প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছে কৃষক পরিবারের। এবারের মাঠ জুড়ে সোনালী ধান বলে দিচ্ছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য নবান্ন এসে পড়েছে।
কৃষকের সাথে পাড়া-পড়শী, আত্বীয়-স্বজন ব্যতিক্রম এই উৎসবে যোগ দিয়েছে। নতুন ধানের চাল তৈরি করে নানা ধরনের পিঠা-পুলি খাওয়ার উৎসবের অন্য রকম এক আনুষ্ঠানিকতার বার্তা যেনো বইছে।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার ছয় ইউনিয়নে রোপা আমন চাষ করেছেন কৃষকরা। ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকেরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন আমন ধান ঘরে তুলতে। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় এ বছর কৃষকেরা অনায়াসে ধান কাটা, মাড়াই ও শুকানোর কাজ করতে পারছেন। ফলন ভালো ও বাজারে ধানের ভালো দাম থাকায় খুশি কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৬ হাজার ৭৩৮ হেক্টর। তবে লক্ষ্যমাত্রা কমে আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৫৩৫ হেক্টর। এরমধ্যে হাইব্রিড চাষ হয়েছে ৫২৫ হেক্টর।
ফলন হেক্টরে ৬ টন। উফসি জাতের মধ্যে বিধান ৩৯, ৪৯, ৭১, ৮৭, ৭৫ চাষ হয়েছে ৫ হাজার ৯৯০ হেক্টর। ফলন প্রতি হেক্টরে ৪ দশমিক ৮ টন। স্থানীয় জাত বাদশা ভোগ ২০ হেক্টর। ফলন ১ দশমিক ৮ টন।
সরেজমিনে মাঠ ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার মোকারিমপুর, জুনিয়াদহ , ফকিরাবাদ, বাহাদুরপুর, ধরমপুর, চাঁদগ্রাম, বাহিরচর, মির্জাপুর, মওলাহাবাসপুর মাঠে রোপা আমন ধান চাষ হয়েছে। এখন এসব মাঠের পাকা ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষকেরা।
কৃষকেরা জানান, এ বছর প্রতি বিঘায় রোপা আমন ধানের উৎপাদন হয়েছে গড়ে ১৬ থেকে ২৫ মণ। বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা। প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ১হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায়। সে হিসাবে বিঘায় উৎপাদিত ধান বিক্রি করা হচ্ছে ২০ হাজার টাকার মতো। এবার ভালোই লাভ থাকছে কৃষকের।
কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, এবার ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। বৃষ্টির জন্য কয়েকটি সেচ কম লেগেছে। মাঝে পোকার উপদ্রব হলেও মোকাবিলা করা হয়েছে।পাঁচ বিঘা জমিতে আমনের আবাদ করেছি। এবার সব কৃষকরই ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে’
ভেড়ামারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়খুল ইসলাম বলেন, এবারে আমনের লক্ষ্যমাত্রা যা ছিলো তা অর্জিত হয়নি। এর পেছনে কারণ পুষ্টির চাহিদা মিটাতে জোর দিয়ে ফল বাগান ও সবজি চাষের কারণে ধানের জমি কমে গেছে। এবার আবহাওয়া অনুক‚ল থাকলেও মাঝে রোগ পোকার আক্রমণ হয়। কৃষি অফিস থেকে ব্যবস্থা নেওয়ায় প্রতিরোধ করা গেছে। ফলে ফলন ভালো হয়েছে বলে তিনি জানান।