কুষ্টিয়ায় ঠিকাদারের গাফিলতিতে সাধারণ মানুষের যাতায়াতে চরম ভুগান্তি
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি।।
কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার সদকী ইউনিয়নের কালীতলা ভায়া-খোকসা-পাংশা সড়কে অবস্থিত শহরতলীর মহেন্দ্রপুর অভিমুখী প্রধান সড়কের গড়ের মাঠ ব্রিজটি ঠিকাদারের গাফিলতিতে নির্মাণ কাজ শেষ হাওয়া নিয়ে শঙ্কা স্থানীয়দের। বহুল কাক্ষিত গড়ের মাঠের সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ কবে হবে’ তা নিয়ে সন্দিহান সাধারণ মানুষ। ব্রীজ নির্মাণের কাজ ঠিকাদারদের গাফিলতিতে, ব্রীজের কাজ হচ্ছে না বললেই চলে। কাজের মেয়াদ বাড়ানোর পরের ব্রীজটির কাজ সম্পন্ন হচ্ছে না। শুকনো মৌসুমে ধুলা, বর্ষা মৌসুমে কাদার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
সেতুটি নির্মাণের জন্য বিকল্প রাস্তা তৈরি করা হলেও এতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রতিনিয়ত ওই রাস্তা দিয়ে ভ্যানসহ অনান্য যানবহন উল্টে মানুষ আহত হচ্ছে । দুই বছর ধরে অনেক ভ্যান, মটরসাইকেল, ট্রাক, অটোরিকশা বিকল হয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। বর্ষা মৌসুমে হেঁটে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে রাস্তাটি দিয়ে। ব্রীজের নির্মাণকাজ ৪০ ভাগ শেষ হয়নি ২ বছরেও। ব্রীজটির পাশে মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে এতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে মাঠ জুড়ে।
শত-শত মানুষের দুর্ভোগের অবসান ঘটিয়ে গড়ের মাঠে ব্রীজের নির্মাণ কাজ ১৭ই জুলাই ২০২০ সালে কুষ্টিয়া -৪ মাননীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ উদ্বোধন করেন । ২ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকা ব্যায়ে নির্মিত কুমারখালী জিসি ,গোপগ্রাম জি,সি, সড়ক চেইনেজ ১১০০ মি: ও ২৫,০০ মি: প্রকল্পের নাম খুলনা বিভাগীয় পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প। বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর এলজিইডি কুমারখালী। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান খান এন্টারপ্রাইজ কুষ্টিয়া, কাজ সমাপ্ত সময় গত বছর ২০২১ সালের ২৭ ফেব্রæয়ারি তে শেষ হাওয়ায় কথা থাকলেও ঠিক কত দিনে নির্মাণ কাজ শেষ হবে তা কেউ জানে না।
পাবনা ভাঁড়ারা ইউনিয়ন মেম্বার মেহেদী হাসান বলেন, প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে আমাদের কুমারখালীতে আসতে হয়। এই ব্রীজের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায়, আমাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভ্যান , অটোরিকশা অন্যান্য যানবাহন প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে ।
স্থানীয় বাসিন্দা আলামিন জানান, এতো দিনে বড় -বড় সেতু নির্মাণ হচ্ছে । আর এই টুকু ব্রীজ নির্মাণ হচ্ছে না, এটা দুঃখের কথা। নির্মাণাধীন ব্রীজের পাশে বিকল্প পথ তৈরি করায় প্রথম থেকেই পথচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই রাস্তা দিয়ে কুমারখালী কুষ্টিয়া যোগাযোগের একটি মাত্র মাধ্যম কিন্তু ব্রীজটির কারণে চলাচল অসম্ভব। কলেজ শিক্ষার্থী তারেক বলেন, সাইকেল নিয়ে শুকনোর সময় ধুলা, বৃষ্টির সময় কাঁদার কারণে যেতে পারিনা।
মুদি ব্যাবসায়ী সবুজ বলেন, দোকানের মালামাল আনতে পারিনা এই ব্রীজের কারণে, এখন যে অবস্থা পায়ে হেঁটে চলাচল করতে অসুবিধা হচ্ছে। ভ্যান চালক শামীম জানান, খালি ভ্যান নিয়ে গেলেও উল্টে যায় ভ্যান। ব্রীজের পাশে যে রাস্তাটি আছে এখন মরণ ফাঁদ।
বর্ধিত সময়ের মধ্যেও অপেশাদার ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে শেষ হচ্ছে না সেতুর কাজ । ফলে এ সেতু দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষের প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সদকী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বলেন, হাসিমপুর, জগন্নাথপুর, ভবানীপুর, আমবাড়িয়া, হাবাসপুর, এদ্রাকপুর, গ্রামের হাজারও মানুষের দুর্ভোগ ব্রীজটির জন্য দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করা হোক সেই দাবি করছি।
কুমারখালী উপজেলা প্রৌকশলী আব্দুল রহিম জানান, ব্রীজটির গার্ডারের অ্যাপার্টমেন্ট ঢালাই কাজ একপাশে সম্পন্ন করা হয়েছে, এবং’ অন্য পাশে ঢালাইয়ের কাজ চলছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে ব্রীজের কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান টিপু বলেন, তিন মাসের মধ্যে ব্রীজের কাজ সম্পন্ন করা হবে। ব্রীজটির নিচে অনেক সময় লাগার কারণে বেশি সময় লেগেছে।
ব্রীজ নির্মাণে জনবল বাড়িয়ে যথাসময়ে কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।