খাগড়াছড়িতে তোলে ফেলা হয়েছে ১৪৪ ধারা, মাঠে আছে প্রশাসন

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি।।

খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী কাজ করছে।

বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, ১৪৪ আজ বিকেলে ৩ টায় তোলে ফেলেছি। শহরে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও সমানভাবে কাজ করছে। আশা করছি আর কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।

খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার পাহাড়ি ও বাঙালি উভয়ের পক্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় জড়ায়। শহরের পানখাইয়াপাড়া সড়ক ও মহাজনপাড়ায় অন্তত ২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। অনেক দোকানের মালামাল সড়কে এনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

বুধবার সকাল থেকে সীমিতসংখ্যক দূরপাল্লার গাড়ি ছেড়ে গেছে। শহরে অলিতে গলিতে ও অভ্যন্তরীণ সড়কে অল্প সংখ্যক যানবাহন চলাচল করছে। পরিস্থিতির উত্তরণে সেনাবাহিনীর টহলের পাশাপাশি বিজিবি টহল দিচ্ছে ও সড়কে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

স্থানীয়রা দাবী করেছে, প্রশাসন গাফিলতির কারনে পাহাড়ের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। প্রশাসনকে আরো সোচ্চার হতে হবে। আমরা সংঘর্ষ চাইনা খাগড়াছড়িতে শান্তি চাই।

খাগড়াছড়ি সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৌফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। জেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আমরা সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ করছি।

এদিকে দুপুরে খাগড়াছড়ি রিজিয়নের কনফারেন্স রুমে বাঙালি নেতাদের ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে বিশেষ মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসান বলেছেন ‘মঙ্গলবার খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল কলেজের শিক্ষক আবুল হাসনাত মো. সোহেলকে ধর্ষণের অভিযোগে পাহাড়ি দুর্বৃত্তরা পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনায় খাগড়াছড়ি জেলায় পাহাড়ি ও বাঙালি সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, খাগড়াছড়িতে শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষার আহ্বান জানিয়ে ঘটনার প্রেক্ষিতে পাহাড়ি নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছি। এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তিদের বিপক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।বুধবার আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক সোহেল রানাকে পিটিয়ে হত্যা করে পাহাড়ি শিক্ষার্থী ও বহিরাগতরা। এ ঘটনার জেরে বিকেল থেকে শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুট করা হয়।

একে/অননিউজ24

আরো দেখুনঃ