জন্মনিবন্ধন করতে আর লাগবেনা মা-বাবার নিবন্ধন
অনলাইন ডেস্ক।।
ছোট-বড় সবার জন্যই এখন জন্ম নিবন্ধন প্রযোজ্য। জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যেই শিশুর জন্ম নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক। এ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিবন্ধন না করা হলে ১৮ বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এটি করতে পারবেন।
তবে ১৮ বছর পার হলে ৫০ টাকা ফি দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। না হলে শিশুর স্কুলে ভর্তি করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন, ২০০৪ (২০০৪ সনের ২৯ নং আইন) এর আওতায় একজন মানুষের নাম, লিঙ্গ, জন্মের তারিখ ও স্থান, বাবা-মায়ের নাম, তাদের জাতীয়তা ও স্থায়ী ঠিকানা নির্ধারিত নিবন্ধক কর্তৃক রেজিস্টারে লেখা বা কম্পিউটারে এন্ট্রি প্রদান ও জন্ম সনদ প্রদান করা।
তবে জন্মনিবন্ধন করতে মা-বাবার জন্মসনদ বাধ্যতামূলকের নিয়ম ছিল এতোদিন। তবে এই নিয়ম তুলে দিয়েছে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় (জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন)।
এখন থেকে মা-বাবার জন্মসনদ ছাড়াই জন্মনিবন্ধন করা যাবে। হাসপাতালে জন্ম নেওয়ার পর দেওয়া ছাড়পত্র বা টিকার কার্ড যেকোনো একটি প্রমাণ দেখিয়ে শিশুর জন্মনিবন্ধন করা যাবে।
২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে জন্মনিবন্ধনের নিয়মে পরিবর্তন এনে বলা হয়েছিল, ২০০১ সালের পর জন্ম নেওয়া ব্যক্তিদের জন্মনিবন্ধন করতে হলে তার বাবা-মায়ের জন্মনিবন্ধন সনদ অবশ্যই প্রয়োজন হবে। ওই সময় জন্মনিবন্ধন করতে গিয়ে নানা ভোগান্তি পোহান অভিভাবকরা।
জন্মনিবন্ধন কী কী কাজে লাগে?
জন্ম সনদ হলো একজন মানুষের জন্ম, বয়স, পরিচয় ও নাগরিকত্বের প্রমাণ। রাষ্ট্রের স্বীকৃত নাগরিকের মর্যাদা ও সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে হলে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদর্শন করা বাধ্যতামূলক। জেনে নিন কোন কোন কাজে জন্ম নিবন্ধনের প্রয়োজন হয়-
পাসপোর্ট ইস্যু
বিবাহ নিবন্ধন
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি
সরকারি-বেসরকারি বা স্বায়ত্বশাসিত সংস্থায় নিয়োগদান
ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু
ভোটার তালিকা প্রণয়ন
জমি রেজিষ্ট্রেশন
ব্যাংক হিসাব খোলা
আমদানি ও রপ্তানী লাইসেন্স প্রাপ্তি
গ্যাস, পানি, টেলিফোন ও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রাপ্তি
ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) প্রাপ্তি
ঠিকাদারী লাইসেন্স প্রাপ্তি
বাড়ির নকশা অনুমোদন প্রাপ্তি
গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন
ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি
বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ
শিশু শ্রম প্রতিরোধ ও
জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তি।
জন্মনিবন্ধন না থাকলে যেসব সমস্যায় পড়তে পারেন-
স্কুলে ভর্তির সময় শিশুর বয়স প্রমাণের জন্য জন্ম সনদ চাওয়া হয়। সে সময় কাছে না থাকলে শিশুর স্কুলে ভর্তি হতে সমস্যা হবে।
জন্মনিবন্ধন না থাকলে আপনি জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্যও আবেদন করতে পারবেন না।
এমনকি বিভিন্ন কারণে বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন হলেও যেতে পারবেন না। কারণ বিদেশে যেতে প্রয়োজন হয় পাসপোর্টের। আর পাসপোর্টের আবেদন করতে হলে অবশ্যই ফরমের সঙ্গে জন্মনিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয়পত্র দরকার হবে।
আবার সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত চাকরির ক্ষেত্রেও জন্মনিবন্ধন দরকার হয়। তখন হাতের কাছে এই সনদ না থাকলে হয়তো চাকরিও হাতছাড়া হতে পারে আপনার।
এখন বিয়ের নিবন্ধনেও দরকার হয় জন্মনিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয়পত্রের।
এছাড়া সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়ের পর রেজিষ্ট্রেশনেও জন্ম সনদের প্রয়োজন হয়।