তাহসানের মায়ের গাড়ির ড্রাইভারও ছিলেন আবেদ আলী
আনলাইন ডেস্ক।।
দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা ও সঙ্গীতশিল্পী তাহসান খানের মা ড. জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগম যখন পিএসসি’র চেয়ারম্যান ছিলেন, তখন তার ব্যক্তিগত গাড়ির ড্রাইভার ছিলেন প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার সৈয়দ আবেদ আলী।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) রাতে বিভিন্ন সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে। পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিকও গণমাধ্যমকে দেওয়া তার বক্তব্যে বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন।
পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান, সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ড. মোহাম্মদ সাদিক জানান, ড. জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগম ও এটিএম আহমেদুল হক চৌধুরী যখন পিএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন তখন আবেদ আলী পিএসসির চেয়ারম্যানের গাড়ি চালক ছিল। ইকরাম আহমদ যখন চেয়ারম্যান ছিলেন, তখন সে বরখাস্ত হয়। পরে তাকে চাকুরিচ্যুতও করা হয়।
জানা গেছে, প্রফেসর ড. জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগম ছিলেন দেশের অন্যতম প্রধান সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) -এর জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত অষ্টম চেয়ারম্যান। ২০০২ সালের ৯ মে তিনি পিএসসি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন এবং ২০০৭ সালের ৭ মে পর্যন্ত এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
১৯৯৭ সালের দিকে রাজধানী ঢাকার ইন্দিরা রোডের পশ্চিম রাজাবাজার এলাকার একটি ব্যাচেলর মেসে থাকতেন আবেদ আলী। ওই মেসেই আবেদ আলীর পরিচয় হয় সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর এলাকার শাহিন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। শাহিনের মামা মেজবাহ চাকরি করতেন সচিবালয়ে। শাহিনের মাধ্যমেই পিএসসিতে গাড়িচালক হিসেবে চাকরি হয় তার।
প্রফেসর ড. জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগম যখন পিএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন, ততদিনে সৈয়দ আবেদ আলী প্রমোশন লাভ করে পিএসসির চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত গাড়িচালক হন। সে সময় থেকেই মূলত সৈয়দ আবেদ আলী প্রশ্নফাঁস চক্রে জড়িয়ে পড়েন। এরপর দীর্ঘসময় ধরে তিনি একটি চক্রের সঙ্গে প্রশ্নফাঁস করে আসছিলেন। তবে, ওই সময়ে তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরেই ছিলেন।
নন-ক্যাডারের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পিএসসির চাকরি থেকে ২০১৪ সালে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
পিএসসির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নন-ক্যাডারে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘সহকারী মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার’ পদের লিখিত পরীক্ষা ২০১৪ সালে ২২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়। সেই পরীক্ষায় এক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে হলের বাহির থেকে অবৈধভাবে সরবরাহকৃত সংশ্লিষ্ট প্রশ্নের উত্তরসহ ৪টি লিখিত উত্তরপত্র হাতেনাতে ধরা হয়। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ আইনের ধারায় মামলা করা হয়। ওই মামলার তদন্তে সৈয়দ আবেদ আলীর সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত থাকার তথ্য-প্রমাণ মেলে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
প্রসঙ্গত, ড. জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগম ১৯৬৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মান ও ১৯৬৭ সালে স্নাতক পাশ করেন এবং ১৯৭৭ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
এ বিষয়ে পিএসসি’র সাবেক চেয়ারম্যান ড. জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগমের কনিষ্ঠ পুত্র জনপ্রিয় অভিনেতা ও সঙ্গীতশিল্পী তাহসান খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে সোমবার (৮ জুলাই) রাতে সিআইডির পক্ষ থেকে রাজধানীর পল্টন থানায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন আইনে এই মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং ১৫। মামলায় আসামির সংখ্যা অর্ধ শতাধিক দেখানো হয়েছে। আর আবেদ আলীসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সূত্রঃ বিডি24লাইভ
একে/অননিউজ24