দুদিনের ব্যবধানে হিলি স্থলবন্দরে পেয়াজের দাম বেড়েছে
সালাহউদ্দিন বকুল, হিলি প্রতিনিধি।।
লোকশানের আশংকায় আমদানি কমের অজুহাতে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে আবারো বাড়তে শুরু করেছে পেয়াজের দাম। মাত্র দুদিনের ব্যবধানে পেয়াজের দাম কেজিতে ২থেকে ৪টাকা করে বেড়েছে। দুদিন আগে বন্দরে প্রতি কেজি পেয়াজ পাইকারিতে (ট্রাকসেল) ৩৪ থেকে থেকে ৩৬টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ৩৮টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাড়তি দামে পেয়াজ আমদানি করে কম দামে বিক্রি করতে হওয়ায় অব্যাহত লোকশানের কারনে পেয়াজর আমদানি কমিয়েছেন দাবী ব্যবসায়ীদের। অপরদিকে পেয়াজের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন পেয়াজ কিনতে আসা পাইকারগন।
হিলি স্থলবন্দরে পেয়াজ কিনতে আসা ইয়াসিন আলী বলেন, পুজার পর বন্দর দিয়ে পেয়াজ আমদানি শুরুর পর থেকে পেয়াজের দাম কমতির দিকে ছিল। এতে করে আমাদের পেয়াজ ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন মোকামে পাঠাতে সুবিধা হচ্ছিল, যদিও মোকামগুলোতে পেয়াজের চাহীদা কম ছিল। কয়েকদিন কমতির দিকে থাকার পরে আবারো পেয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এতে করে আমাদের পেয়াজ কিনতে অসুবিধা হচ্ছে, এর উপর কয়েকদিন ধরে এক দাম থাকার পরে দাম বাড়ায় মোকামে চাহীদা নেই, এছাড়া দামের এমন উঠানামা করার কারনে আমরা পেয়াজ কিনতে যেমন ভয় পাচ্ছি তেমনি পেয়াজ কিনে লোকশানে পড়তে হবে।
হিলি স্থলবন্দরের পেয়াজ ব্যবসায়ী সবুজ হোসেন ও শরিফুল ইসলাম বলেন, দেশের বাজারে পেয়াজের চাহীধা মেটাতে ও দাম নিয়ন্ত্রনে রাখতে শারদীয় দুর্গাপুজার ৬দিন বন্ধ শেষে গত ১৭ অক্টোবর থেকে বন্দর দিয়ে পুনরায় পেয়াজ আমদানি শুরু করেন আমদানিকারকরা। কিন্তু দেশের বাজারে আমদানিকৃত পেয়াজের চাহীদা না থাকায় ও দেশীয় পেয়াজের দাম কিছুটা কম থাকায় আমদানিকৃত পেয়াজ লোকশান করে বিক্রি করতে হচ্ছিল। এর উপর অতিরিক্ত গরমের কারনে পেয়াজ পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারনেও পেয়াজ কমদামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছিল আমদানিকারকরা। এতে পেয়াজ আমদানি করে অব্যাহতভাবে লোকশানের কারনে পেয়াজ আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন বন্দরের আমদানিকারকরা। এছাড়া বর্তমানে ভারতে যে পেয়াজের দাম রয়েছে তাতে করে দেশের বাজারে পেয়াজ আমদানি করে ৪০/৪২টাকা পড়তা। কিন্তু দেশে পেয়াজের বাজার ৩৪থেকে ৩৬টাকায় নেমে এসেছে যার কারনে ভারতে পেয়াজের লোডিং বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে বর্তমানে বন্দর দিয়ে পেয়াজের আমদানি কমে গেছে। যার ফলে দেশের বাজারে পণ্যটির চাহীদার তুলনায় সরবরাহ কমায় দাম বাড়ছে। এছাড়াও দেশীয় পেয়াজের দাম যেটা কমতির দিকে ছিল সেটিও আবারো কিছুটা বেড়েছে যার কারনে আমদানিকৃত পেয়াজের চাহীদা বাড়ায় দাম কিছুটা বাড়ছে। আর পেয়াজ কাচামাল এখানে সিন্ডিকেট করার কোন কিছু নেই, পেয়াজ মজুদ রাখলে তা পচে নষ্ট হয়ে যাবে আর ভারতীয় পেয়াজ বেশি দিন রাখা যায়না। পেয়াজের আমদানি বাড়লে দাম কমবে আর আমদানি কমলে দাম বাড়বে এটাই নিয়ম। এর উপর দেশীয় পেয়াজের দাম উঠানামার উপর ভারতীয় পেয়াজের দাম কম বেশী হয়।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, পুজার ৬দিন বন্ধ শেষে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পুনরায় আমদানি রফতানি বানিজ্য শুরু হয়েছে। বন্দর দিয়ে পেয়াজসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে পেয়াজের আমদানি আগের তুলনায় দিন দিন কমছে। ওই দিন বন্দর দিয়ে ১৭টি ট্রাকে ৪৭৪টন পেয়াজ আমদানি হয়েছিল। পরেরদিন মঙ্গলবার বন্দর দিয়ে ১৩টি ট্রাকে ৩৫৫টন পেয়াজ আমদানি হয়েছিল। বুধবার বন্দর দিয়ে ১০টি ট্রাকে ২৬৫টন পেয়াজ আমদানি হয়েছে। বৃহস্পতিবার বন্দর দিয়ে ৯টি ট্রাকে ২৬৪টন পেয়াজ আমদানি হয়েছে।
আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24।।