নড়াইলের পেড়লী গ্রামে আজাদ শেখ হত্যাকান্ডকে পূঁজি করে অব্যাহতভাবে আসামউপক্ষের বাড়িঘর ভাংচুরের

নড়াইল প্রতিনিধি।।
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পেড়লী গ্রামে আজাদ শেখ হত্যাকান্ডকে পূঁজি করে আসামউপক্ষের বাড়িঘর অব্যাহতভাবে ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সর্বশেষ গত ২৬ নভেম্বর আসামী পক্ষের ১০/১২টি বাড়ি ও একটি দোকানঘর ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভূক্তভোগীরা জানান, গত রোববার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর পেড়লী গ্রামের আলতাফ হোসেন শেখ, নুর ইসলাম, বাবলু ভূঁইয়া, ওলশান ভূঁইয়া, মকবুল ভূঁইয়া, মলফুজ ভূঁইয়া, ফজলু ভূঁইয়া, অপু ভূঁইয়ার বাড়িসহ ১০-১২টি বাড়ি ও ইয়ার আলীর দোকান প্রতিপক্ষের লোকজন ভাংচুর করে।

ক্ষতিগ্রস্ত আলতাফের স্ত্রী শাছুন্নাহার এবং ভাবি নাসরিন বেগম জানান, প্রতিপক্ষ গ্রুপের লোকজন গত রোববার সন্ধ্যার পর অতর্কিতভাবে তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ঘরের কাঁচের জানালাসহ অন্যান্য মালামাল ভাংচুর করে তান্ডব চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।

ক্ষতিগ্রস্ত ভূঁইয়া বাড়ির নারী সদস্য হেলেনা বেগম ও হামিদা মালা জানান, হত্যাকান্ডের পর থেকে আসামীপক্ষের পুরুষশূণ্য পরিবারে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা ভয়ে ভয়ে বাড়িতে থাকে। কোন ঘটনা ছাড়াই রোববার সন্ধ্যার পর প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের বাড়িতে ভাংচুর ও তান্ডব চালায়। এ ঘটনায় এসব বাড়ি-ঘরের জানালা দরজার ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে। প্রতিনিয়ত তারা অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন। এসব পরিবারগুলোর উপর প্রতিপক্ষের লোকজন বর্বর যুগের সদৃশ্য অমানবিক ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে হরহামেশা। বসতবাড়ি আগুনে জালিয়ে দেয়াসহ ভাংচুর, ধান, গরু, স্বর্ণ, নগদ টাকা ও মূল্যবান সামগ্রী লুটপাটের পর সহায়-সম্বল হারিয়ে অনেকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। অনেক শিক্ষার্থী প্রতিপক্ষের ভয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে না পারায় লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছে।

মামলার ১নং আসামি শহিদুল মোল্যা অভিযোগে জানান, গত ২০ জুলাই আজাদ হত্যাকান্ডের পর কয়েকদিন ধরে চলে আসামিপক্ষের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এ হত্যাকান্ডের পর বাদি পক্ষের লোকজন আসামিদের বাড়িতে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, গরু, জমির দলিলসহ মূল্যবান জিনিস লুটপাট করে নিয়ে যায়।

মামলার বাদি পক্ষের মো: নজরুল ইসলাম বলেন ‘রোববার আজাদ হত্যাকান্ডের আসামিদের কিংবা প্রতিপক্ষের বাড়ি ভাংচুরের কোন ঘটনা ঘটেনি। আমরা আমাদের লোকজনকে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করার জন্য বলেছি। কোন ধরনের সহিংসতার সঙ্গে আমাদের লোকজনের কোনপ্রকার সম্পৃক্ততা নেই।

পেড়লী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল আজিজ জানান, পেড়লী গ্রামে যদি কেউ অরাজকতা সৃষ্টির মাধ্যমে আইন-শৃংখলার অবনতির চেষ্টা করে তাকে ছাড় দেয়া হবে না। হামলাকারীকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে। পুলিশ এ ব্যাপারে সজাগ রয়েছে বলে তিনি জানান।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কালিয়া উপজেলার পেড়লী গ্রামের সালাম শেখের ছেলে আজাদ শেখকে (৩৫) গত ২০ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পেড়লী খানকাপাড়া চৌরাস্তা মোড়ে প্রতিপক্ষের লোকজন পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করার পর রাত ৯টার দিকে মারা যান। এ ঘটনায় মৃত আজাদ শেখের ছোট ভাই সাজ্জাদ শেখ বাদি হয়ে ২০জনের নাম উল্লেখ করে ২৩জুলাই কালিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এফআর/অননিউজ

আরো দেখুনঃ