নিয়ামতপুরের বুধুরিয়া ডাঙ্গাপাড়া ডাবল হত্যা মামলা এক পক্ষ নিজ বাড়ীতে উঠার দাবীতে মানববন্ধন, অপর পক্ষ প্রতিহতের চেষ্টা প্রশাসনের চেষ্টায় দুই পক্ষ আলোচনার টেবিলে
নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ

নওগাঁর নিয়ামতপুরের চন্দননগর ইউনিয়নের বুধুরিয়া ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে ঘটে যাওয়া ডাবল হত্যার বাদী ও বিবাদী বিগত ৬ মাস যাবত মুখোমুখি অবস্থানে। সম্প্রতি ৭ অক্টোবর মঙ্গলবার বেলা ১০টায় হত্যা মামলার বিবাদী পক্ষের কয়েকশত নারী, শিশু ও পুরুষ নিজ বাড়ীতে উঠার জন্য চিনোড়া মোড়ে অবস্থান নেন। তারা যে কোন মূল্যে নিজ গ্রামের বাড়ীতে উঠবেন। তারা বিগত ৬ মাস যাবত বাড়ী এমনটি গ্রাম ছাড়া।
অপরদিকে বাদী পক্ষে গ্রামের একমাত্র রাস্তা বাঁশ দিয়ে ঘিরে একত্রিত হয়ে অবস্থান গ্রহন করেন। তারাও যে কোন মূল্যে বিবাদী পক্ষকে গ্রামে যেন না ঢুকতে পাওে সে জন্য প্রতিহত করবে।
গ্রামের আইন শৃংখলার অবনতি হওয়ার আশংকায় সহকারী পুলিশ সুপার (নিয়ামতপুর-মান্দা সার্কেল) শাওন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেজাউল করিম, অফিসার ইন চার্জ হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ মানববন্ধনে বাদী পক্ষর আব্দুল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, গ্রামে একটি ঘটনা ঘটেছে। মামলা হয়েছে, আদালত তার বিচার করবে। আমরা যারা রয়েছি হত্যা মামলার সাথে যুক্ত না, বা অনেকে জামিনে রয়েছে তারা কেন নিজ বাড়ীতে অবস্থান করতে পারবে না। ৬ মাস যাবত আমরা গ্রাম ছাড়া, বাড়ী ছাড়া। আমাদের শত শত বিঘা জমির ধান জোর পূর্বক কেটে নিয়ে চলে গেছে। বাড়ী ঘরের আসবাবপত্র লুটপাট করে নিয়ে গেছে। আমরা অনেকবার পুলিশের সাহায্য চেয়েছি কিন্তু সে রকম কোন সাহায্য পাই নাই।
আরেক ভুক্তভোগী নারী নজরুল ইসলামের মেয়ে আইরিন বলেন, আমরা ৬ মাস যাবত বাড়ীর বাইরে বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাড়ী বাড়ীতে ঘুরে বেড়াচ্ছি। আমাদের সন্তানদের লেখাপড়া সব নষ্ট হয়ে গেছে। গেল এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারিনি কয়েকজন। এর দায় কে নিবে? আমরা আজ জীবন দিয়ে হলেও নিজ বাড়ীতে ফিরবো। আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। হারানোর আর কিছু নেই।
বাদী পক্ষের কেউ ক্যামেরার সাথে কথা বলতে রাজী হননি। তবে তারা ক্যামেরার বাইরে বলেছেন, আমরা কোন খুনিদেও গ্রামে ঢুকতে দিবো না। বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাদেও গ্রামে ঢুকতে দিবো না। পুলিশ আর্মি, প্রশাসন যেই আসুক। প্রয়োজনে আমরা জীবন দিবো।
সহকারী পুলিশ সুপার (নিয়ামতপুর মান্দা সার্কেল) শাওন উপস্থিত উত্তেজিত নারী, পুরুষের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা এখানে এসেছি সমস্যার সমাধান করতে। আপনারা একটু ধর্য্য ধরুন। আপনারা যাতে নিজ বাড়ীতে উঠতে পারেন তার ব্যবস্থা প্রশাসন করবে। এতদিন যখন ধর্য্য ধরেছেন, আর একদিন অপেক্ষা করুন। একটি সুষ্ঠু সমাধান বের হবে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেজাউল করিম বলেন, আমরা উভয় পক্ষ থেকে প্রতিনিধি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করবো। আপনারা যাতে শান্তিপূর্ণভাবে সহ-অবস্থান করতে পারেন। যারা অপরাধী আদালত তাদের বিচার করবে। কিন্তু যারা নিরাপরাধ তাদেও যেন কোন ক্ষতি না হয় আইন তা দেখবে। আমরা চাই না এই গ্রামে আবার কোন সংঘর্ষ হোক। আর কারো মায়ের বুক খালি হোক।
অফিসার ইন চার্জ হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা সব সময় চেষ্টা করি যাতে আপনারা ভালো থাকেন, নিরাপদে থাকেন। কিন্তু যদি আপনারা আইন নিজের হাতে তুলে নেন তাহলে আইন শৃংখলার অবনতি হবে। আবারও আপনারা নতুন কওে ঝামেলায় পড়বেন। আপনারা শান্ত থাকুন আমরা আজকের মধ্যে সমাধান বের করবো। উভয় পক্ষের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে।
jn