পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দূর্ধর্ষ ডাকাতি, চারজনকে আহত করে টাকা ও স্বর্ণ লুট

পঞ্চগড় প্রতিনিধি।।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় শহিদুল আলম (৬৯) নামে এক পল্লী চিকিৎসকের বাড়িতে দূর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পল্লী চিকিৎসকসহ একই পরিবারের চারজন আহত হয়েছে। জানা যায়, এ ঘটনার সময় ডাকাত সদস্যরা নগদ প্রায় লাখ টাকা ও চার ভড়ি ২ আনা স্বর্ণ নিয়ে গেছে।

গত বুধবার (২১ জুন) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার পর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের মান্দুলপাড়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। আহত চার জনের মধ্যে দুজন চিকিৎসাসেবা নিয়ে বাড়িতে ফিরলেও পল্লী চিকিৎসকসহ তার স্ত্রী পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

আহতরা হলেন, তেঁতুলিয়া উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের মান্দুলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও ভজনপুর বাজারের পল্লী চিকিৎসক এবং ফার্মাসীস্ট শহিদুল আলম (৬৯), স্ত্রী রেজিনা আক্তার (৫০), বড় ছেলে রাশেদুজ্জামান রাশেদ (৩৫) ও রাশেদের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন সাথী (২৮)। ছেলে ও বৌমা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে আইনি প্রক্রিয়ার জন্য ছাড়পত্র নিলেও গুরুত্বর অবস্থা থাকায় পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন পল্লী চিকিৎসক শহিদুল ও স্ত্রী রেজিনা আক্তার। বর্তমানে শহিদুল ছেলে রাশেদকে নিয়ে উপজেলার ভজনপুর বাজরে ফার্মেসীর ব্যবসা করেন।

পারিবারিক ভাবে জানা যায়, বুধবার রাতে প্রচন্ড বজ্র ও ঝড়ো বৃষ্টি হচ্ছিল। এর মাঝে রাত ১২টায় রাশেদ ভজনপুর বাজারে থাকা ফার্মেসীর দোকান বন্ধ করে বাড়িতে ফিরে। রাত সাড়ে ১২টার পর একদল ডাকাত বাড়ির মূল গেটের দরজা ভেঙ্গে রাশেদের ঘরে প্রবেশ করে তাদের উপর হামলা ও লুটপাত চালায়। এর মাঝে শব্দ পেয়ে বাবা শহিদুল নিজ ঘরের দরজা খুললে দরজার বাইরে অন্ধকারে ২-৩ জনকে লাঠি ও ছুরি নিয়ে দারিয়ে থাকতে দেখে। এসময় ডাকাতরা তার উপর চড়াও হয়ে হামলা চালায়। স্ত্রী রেজিনা চিৎকারে এগিয়ে এসে স্বামিকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তার উপরেও হামলা চালায় ডাকাতরা। এর মাঝে সকলের উপর এলোপাথাড়ি হামলা চালালে রক্তাক্ত অবস্থায় স্বামীকে কোনমতে কৌশলে ঘরে নেয়। এর মাঝে মোবাইল ফোনে জামাইকে খবর দেয় রেজিনা। বেশ কিছু সময় পর ডাকাতরা পালিয়ে গেলে স্ত্রী রেজিনা প্রতিবেশীদের সহায়তায় রাতেই হাসপাতালে ভর্তি হয়। একই সময় পুলিশকে খবর দেয়া হয়।

আহত পল্লী চিকিৎসকের স্ত্রী রেজিনা আক্তার জানান, ছেলে রাশেদ বাড়ি ফেরার পর ডাকাতরা ঝড়- বৃষ্টিকে কাজে লাগিয়ে এ হামলা চালিয়েছে। এতে আমার পাশাপাশি স্বামী, ছেলে ও বৌমা আহত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে স্থানীয় বা আমাদের জমির বিরোধের প্রতিপক্ষের কেউ এ ঘটনা ঘটাতে পারে।

আহত ছেলে রাশেদুজ্জামান রাশেদ জানান, ঘটনার সময় প্রায় ৭ থেকে ৮ জন ডাকাত উপস্থিত ছিলো। তারা এলোপাথাড়ি আমাদের উপর লাঠি ও ছুড়ি নিয়ে আঘাত করতে থাকে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফিরেছি। পারিবারিক ভাবে আলোচনা শেষে থানায় গিয়ে অভিযোগ বা মামলা দায়ের করা হবে।

তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলার কিছু আলামত হিসেবে ইউক্যালিপটাস গাছের ডাল জব্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোন মামলা বা অভিযোগ দায়ের হয় নি। মামলা হলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে আমরা ঘটনা শোনার পর থেকে তদন্ত শুরু করেছি বলেও জানান তিনি।

এসকেডি/অননিউজ

আরো দেখুনঃ