পৌষ সংক্রান্তির বুড়ির ঘর হিন্দুধর্মাবলম্বীদের প্রাচীন ঐতিহ্য
অনলাইন ডেস্ক।।
রাত পোহালেই পৌষ সংক্রান্তি। বারো মাসে তেরো পার্বণের অন্যতম একটি হলো পৌষ পার্বণ বা মকর সংক্রান্তি। মকর সংক্রান্তি তিথির প্রচলিত ও জনপ্রিয় একটি ঐতিহ্য হলো বুড়ির ঘর বানানো।
মূলত কিশোর বয়সী ছেলেমেয়েরা এ ঘর তৈরি করে। গ্রামীণ জনপদে ঐতিহ্যবাহী এ সংস্কৃতি প্রায়ই বিলুপ্তির পথে। বৃহস্পতিবার বিকেলে কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার নলুয়া চাঁদপুর গ্রামে প্রাচীন এই ঐতিহ্য রক্ষা করতে গ্রামের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের বুড়ির ঘর বানাতে দেখা যায়।
অগ্রহায়ণ ও পৌষ মাসে জমি থেকে ধান কেটে নিলে যে খড় মাঠে পড়ে থাকে, কিশোর-কিশোরীরা সেই খড় কেটে আনে। গ্রাম-বাংলার অনেক অঞ্চলে এগুলিকে নাড়া বলে। এই নাড়া ও বাঁশ দিয়ে বাড়ির পাশে ফাঁকা জমিতে তৈরি করা হয় ঘর।
ছোটদের সহযোগিতা করতে কাজে হাত লাগান বড়রাও। এই বাঁশ ও নাড়ার ঘরেও ফুটিয়ে তোলা হয় নান্দনিকতা। কেউ এই ঘর তৈরি করেন অতি সাধারণভাবে দোচালা, কেউ চার চালা আবার কেউ তৈরি করেন দোতলা ঘর।
তারপর পৌষ সংক্রান্তির আগের দিন রাতে এই ঘরের ভেতর সবাই মিলে মাছ, মাংস, ডিম সাধ্যমতো রান্না করে হয় জমজমাট পিকনিক।পরদিন অর্থাৎ,পৌষ সংক্রান্তির দিন ভোরে সূর্যদয়ের আগে স্নান সেরে ওই ঘরে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে সেই আগুনের উত্তাপে নিজের শরীর উত্তপ্ত করা হয়।
সবশেষে বাড়ি ফিরে মা, ঠাকুরমার হাতে তৈরি পিঠে-পুলি খেয়ে শুরু হয় পৌষ বা মকর সংক্রান্তির মূল আনন্দ।