ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ ১০ যুবকের বাড়িতে শোকের মাতম

দালালের খপ্পরে পরে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজদের মধ্যে ১০ যুবকের বাড়ি নরসিংদীতে। রায়পুরা এবং বেলাব উপজেলার ওই নিখোঁজদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। এরই মধ্যে রায়পুরার আব্দুল নবীর মৃত্যুর সংবাদ পেলেও বেলাব উপজেলার বাকী নিখোঁজদের পরিবারে চলছে উৎকণ্ঠা। স্বজনদের মৃত অথবা জীবিত ফেরত পাওয়ার পাশাপাশি জড়িত দালালদের বিচারের দাবি ভুক্তোভোগীদের পরিবারের।

জানা গেছে, জেলার এমন কোন উপজেলা নেই যেখানে দালালের খপ্পরে পরে বিদেশ গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়নি প্রবাসপ্রেমিরা। সব শেষ লিবিয়া থেকে ইতালী যাওয়ার পথে ভুমধ্যসাগরে ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ রায়পুরা এবং বেলাব উপজেলার ১০ যুবক। পৈতৃক জমি-ভিটা বিক্রি আর সুদে গ্রহণ করা টাকা দিয়ে বিদেশে পারি জমানোর ইচ্ছাটা পূরণ হলো লাশ হয়ে।

জানা যায়, বেলাব উপজেলার টান লক্ষ্মীপুর এলাকার লিবিয়া প্রবাসী আলম মিয়ার সঙ্গে ৮ লাখ টাকার চুক্তিতে গত তিন মাস আগে লিবিয়া যান নরসিংদীর ১০ জনসহ মোট ২৮ যুবক। সম্প্রতি তারা লিবিয়া থেকে ট্রলারে করে অবৈধ পথে ইতালী যাচ্ছিলেন। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই বাঁধ সাধে নিয়তি। যাত্রীবোঝাই ট্রলারটি উল্টে যাত্রীসহ ডুবে যায় ভূমধ্যসাগরে। এসময় নিখোঁজ হয় ২৮ জন, যাদের মধ্যে ১০ জনই নরসিংদীর। এর মধ্যে আব্দুল নবীর লাশ উদ্ধারের খবর পেলেও বাকীরা রয়েছে নিখোঁজ। পরিবারের জন্য উপার্জন করতে যাওয়া সদসদ্যদের হারিয়ে পরিবারে এখন চলছে আর্তনাদ আর আহাজারি। চোখের জল আর বুকভরা আশা নিয়ে সন্তানকে ফিরে পাবার অপেক্ষায় ক্ষণ গুনছেন তারা।

স্বজনদের অভিযোগ, লিবিয়ায় ও ইতালীতে মানবপাচার চক্রের মূলহোতা বেলাব উপজেলার নারয়ণপুর ইউনিয়নের টান লক্ষীপুর এলাকার লিবিয়া প্রবাসী আলম মিয়া, কামাল হোসেন ও বাংলাদেশে তার সহযোগীদের প্রলোভনেই অবৈধ পথে ইতালি পাড়ি জমান নিখোঁজ যুবকরা। তবে অভিযুক্ত আলমের পরিবারের সদস্যদের দাবি গত মাসের ২২ তারিখে সকলকে নিয়ে ইতালী যাওয়ার কথা ছিল। এর পর থেকে আলমসহ সকলেই নিখোঁজ রয়েছেন।

প্রশাসন বলছে, বিষয়টি শুনে ছায়া তদন্ত করছে পুলিশ। অভিযোগের প্রেক্ষিতে দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। দ্রুত মানব পাচারকারী-দালালদের আইনের আওতায় এনে বিচারের পাশাপাশি বিদেশ গমনে সচেতনতা সৃষ্টির দাবি সংশ্লিষ্টদের।

এফআর/অননিউজ

আরো দেখুনঃ