ভেড়ামারার দিনমজুর জাহাঙ্গীর আলম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকায় গুলিবিদ্ধ
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি।।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার হিড়িমদিয়া গ্রামের খয়মুদ্দিন মন্ডলের ছেলে দিনমজুর জাহাঙ্গীর আলম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকায় গুলিবিদ্ধ। দিনমজুর জাহাঙ্গীর আলম মানবেতন জীবন থেকে পরিত্রাণ পেতে সরকারী-বেসরকারী সহায়তাসহ মানবিক সংগঠনকে এগিয়ে আসার আহŸান জানিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
ভেড়ামারা চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন পরিষেেদর মেম্বার মনজুর আহম্মেদ ভুট্টো বলেন,দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলছে। দেশ উত্তপ্ত, উত্তপ্ত ঢাকাসহ সরাদেশ। ১৯
জুলাই ২০২৪। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার হিড়িমদিয়া গ্রামের খয়মুদ্দিন মন্ডলের ছেলে দিনমজুর জাহাঙ্গীর আলম ঢাকার শাহাজাদপুর খিলবাড়ীর বাসায় অবস্থান করছে।
অনুমান সকাল সাড়ে নয়টা বাজে। জাহাঙ্গীর আলম শুনতে পায় গোলাগুলির আওয়াজ। তিনি বুঝতে পারেন ছাত্র জনতার উপর পুলিশের গুলির নির্মমতা চলছে। প্রত্যেক গুলির শব্দই তার বিবেককে নাড়া দিচ্ছিল। তিনি আর ঘরে বসে না থেকে ছাত্র-জনতার পাশে দাঁড়াতে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন। চলে আসেন ঢাকার ভাটারা থানার
আমেরিকান এ্যাম্বাসির পাশের রাস্তায়। কিছু বুঝে উঠার আগেই গুলিবিদ্ধ হয় এক রিক্সাচালক। রিক্সাচালক লুটিয়ে পড়ে মাটিতে। তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে যায় জাহাঙ্গীর আলম। তখন বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ হয় জাহাঙ্গীর আলম। তিনি লুটিয়ে পড়েন মাটিতে এবং জ্ঞান হারান। জ্ঞান ফিরে দেখেন তিনি বারিধারা উপশম হাসপাতালে মেঝেতে শুয়ে আছেন। তাকে নিয়ে একদল ছাত্র দৌঁড়াদৌঁড়ি করছে। উপশম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জাহাঙ্গীরের আণমের গুলিবিদ্ধ পা এক্সরে করে। এক্সরে রিপোর্ট দেখে জানিয়ে দেন এখানে চিকিৎসা করা সম্ভব না। নিয়ে যেতে হবে কুর্মিটোলা হাসপাতালে। কিন্তু পাঠানো এইত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল যে, ছাত্ররা কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়। নামমাত্র ডাক্তারের সহযোগীতায় দুদিন চিকিৎসা নিয়ে চলে আসে দেশের বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার হিড়িমদিয়া গ্রামে। অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসা প্রদান করা হয়। ইতিমধ্যে ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে ছাত্রদের বিজয় সুনিশ্চিত হয়।
ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মানবতার ডাক্তার লতিফুল কবির লিমন বলেন,স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক ডা: মাহবুব আফাজ ও চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন পরিষেেদর
মেম্বার মনজুর আহম্মেদ ভুট্টো’র সহযোগীতায় জাহাঙ্গীর আলমকে ভর্তি হয় ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। টানা ৫ দিন চিকিৎসা দেওয়ার পর বাড়ী ফিরে যান জাহাঙ্গীর আলম। যথাপযুক্ত চিকিৎসা না হওয়ায় গুলি খাওয়া পায়ে পচন ধরার সম্ভবনা রয়েছে। উন্নত চিকিৎসা করার প্রয়োজন।
পল্লী চিকিৎসক ডা: মাহবুব আফাজ বলেন, উন্নত চিকিৎসা ও গুলি খাওয়া পায়ের ঘা না শুকালেও একমাত্র উপার্জনক্ষম জাহাঙ্গীর আলমের পরিবারে নেমে আসে তীব্র
দৈন্যতা। ভেড়ামারার হিড়িমদিয়া গ্রামের খয়মুদ্দিন মন্ডলের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের ৩ সন্তানের বাবা। বাবা-মা, স্ত্রী সন্তান নিয়ে বিপাকে জাহাঙ্গীর আলমের সংসার।
এখনও পর্যন্ত কোনো মানবিক সংগঠন ও সরকারী কোনো আর্থিক সহযোগীতা পায়নি আন্দোলনের এই দিন মজুর এই সৈনিক।