মুরাদনগর উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও সম্পাদককে শোকজ

মুরাদনগর প্রতিনিধি।।

একাধিক জাতীয় দৈনিক ও অনলাইনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারোয়ার চিনুকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে উত্তর জেলা আওয়ামীলীগ।

গত শুক্রবার কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হলেও প্রকাশ্যে গণমাধ্যমে আসে রোববার বিকেলে। নোটিশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম রাজীব।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ‘জাতীয় ও দলীয় সাংগঠনিক কর্মকান্ড পরিচালনা না করার কারণে মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কারণ দর্শানো নোটিশ।

উপর্যুক্ত বিষয়ের প্রেক্ষিতে আপনাদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, যেহেতু আপনারা মুজিব আদর্শের রাজপথের সৈনিক, বঙ্গবন্ধুর ডাকে ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের রনাঙ্গনের যোদ্ধা ছিলেন এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কুমিল্লা উত্তর জেলা শাখার সাবেক আহবায়কের মতো সাংগঠনিক গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে এবং পদে দায়িত্ব পালন করেছেন, সেহেতু ২০২২ সালের ১৫ ডিসেম্বর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের মাধ্যমে আপনাদেরকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচন করা হয় এবং গত গত ২০ জানুয়ারি আপনাদের কার্যনির্বাহী সংসদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলেও সত্যি যে, আপনারা দক্ষ সংগঠক হয়েও সাংগঠনিক কোন কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন না। এমনকি বিভিন্ন জাতীয় দিবসেও আপনারা কোন কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নিচ্ছেন না। অগ্নিঝড়া মার্চ মাসেও ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস এবং ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসেও কোন প্রকার সাংগঠনিক কর্মসূচি ছিল না। বিষয়টি প্রিন্ট মিডিয়া ও বিভিন্ন স্থানীয় দৈনিক পত্রিকাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফলাও করে খবর প্রকাশিত হয়েছে যা অত্যান্ত দুঃখজনক।

আপনাদের অবগতির জন্য আরো জানানো যাচ্ছে যে, বিগত ০৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন হয়রানী ও সহিংস আক্রমণের শিকার হলেও আপনারা নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়াননি, কোন প্রকার খোঁজ খবর নেননি এবং জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আপনাদেরকে এই বিষয়ে বার বার মৌখিক ভাবে নির্দেশনা দেওয়া সত্বেও আপনারা জেলা ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ বরাবর কোন লিখিত প্রতিবেদন দাখিলও করেননি।

এমতাবস্থায় সাংগঠনিক কর্মকান্ড পরিচালনা না করা এবং বিভিন্ন জাতীয় ও দলীয় দিবসে কর্মসূচি পালন না করা অবশ্যই সংগঠনের আদর্শ, শৃংখলা-স্বার্থ পরিপন্থী বলে আমরা মনে করি। এহেন অসাংগঠনিক কর্মকান্ড করার কারণে কেন আপনাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার কারণ জানিয়ে আগামী ১০ (দশ) দিনের মধ্যে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর লিখিত জবাব দেওয়ার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হল।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারোয়ার চিনুর সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, সাংগঠনিক কোন কর্মকান্ড পরিচালনা না করায় মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।

এফআর/অননিউজ

আরো দেখুনঃ