রাতের খাবার আনতে গিয়ে আগুনে পুড়ে নিহত মুরাদনগরের পম্পা পোদ্দার
মুরাদনগর প্রতিনিধি
দুই মেয়ের জন্য রাতের খাবার আনতে গিয়ে অগ্নিকান্ডে নিহত হয়েছেন পম্পা পোদ্দার (৪৬)। তিনি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর গ্রামের জয়ন্ত পোদ্দারের স্ত্রী। তিনি মাঝে মধ্যে ধর্মীয় পূঁজা বা সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসতেন। গত তিন দিন আগেও নবীপুর গ্রামে এসেছিলেন বলে জানা গেছে। শনিবার বড় মেয়ে কানাডা থেকে দেশে আসলে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে ঢাকায়, নাকি গ্রামের বাড়ি নবীপুরে পম্পা পোদ্দারের লাশ দাহ হবে।
জানা যায়, নবীপুর গ্রামের জয়ন্ত পোদ্দার পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন। তিনি একটি প্রাইভেট অডিট ফার্মের মালিক। তার স্ত্রী পম্পা পোদ্দার একজন গৃহিনী। বৃহস্পতিবার রাতে পম্পা পোদ্দার বাসায় থাকা দুই মেয়ের জন্য বেইলি রোডের ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্টেুরেন্ট থেকে রাতের খাবার আনতে গিয়ে আগুনে পুড়ে মারা গেছে। এই দম্পতির তিন মেয়ে। বড় মেয়ে প্রজ্ঞা পোদ্দার (২৫) কানাডায় লেখাপড়া করছেন। মেজো মেয়ে শ্রেয়া পোদ্দার (১৭) ও ছোট্ট মেয়ে শ্রেষ্ঠা পোদ্দার (১২) ঢাকায় লেখাপড়া করেন।
জয়ন্ত পোদ্দারের ছোট ভাই রানা পোদ্দার মুঠো ফোনে সাংবাদিকদের বলেন, মায়ের মৃত্যুর খবর এখনো দুই মেয়েকে বলা হয়নি। তাদেরকে বলছি তোমাদের মা আইসিওতে আছে। বড় বোন শনিবার দেশে আসলে এক সাথে দেখতে যাবা। মেয়ে দুটিকে তাদের মায়ের মৃত্যুর খবর দেয়া না হলেও তারা কেউ পানিটা পর্যন্ত মুখে নিচ্ছে না। মাকে দেখতে ডানা কাটা পাখির মতো ছটফট করছে। আবার ক্ষণে ক্ষণে বাবাকে শান্তনা দিচ্ছেন এই বলে, ‘দেখ বাবা মা সুস্থ্য হয়ে ঠিকই বাসায় চলে আসবে।’
গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে বেইলি রোডের ভবনটিতে আগুন লাগে। আগুন নেভানোর পর হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। চিকিৎসা নেয়ার আগেই মারা যায় মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর গ্রামের পম্পা পোদ্দার।
মুরাদনগর থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, ঢাকার বেইলী রোডের অগ্নিকান্ডে নবীপুর গ্রামের জয়ন্ত পোদ্দারের স্ত্রী পম্পা পোদ্দার নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিস্তারিত জানতে থানা পুলিশ তাদের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।