সোনাগাজীতে বিকল্প ব্যবস্থা না করে প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ভাঙায় ক্লাস করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা
জাবেদ হোসাইন মামুন, সোনাগাজী (ফেনী)
ফেনীর সোনাগাজীতে বিকল্প ব্যবস্থা না করে তড়িঘড়ি করে মাদরাসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ভাঙায় ক্লাস করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। দশদিন বন্ধ থাকার পর সোমবার সকালে স্কুলে ছুটে আসেন তিন শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালাবদ্ধ থাকায় এবং বিদ্যলয় ভবনের একাংশ ভাঙা থাকায় বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। ঘন্টা খানেক অপেক্ষা করে বাসা-বাড়িতে ফিরে গেল শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবারও একই কারণে শ্রেণি কার্যক্রম হয়নি তাদের। এতে অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজমান।
অভিভাক, শিক্ষক ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, দুর্নীতি ও অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে একটি চক্র সোনাগাজী মাদরাসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ১০ লাখ টাকা মূল্যের পুরাতন ভবন মাত্র ৪২ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ভবনটি ক্রয় করে নিজাম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। সরকারি ছুটির মধ্যে তড়িঘড়ি করে দরজা-জানালা ভেঙে ভবনটির প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে যান তিনি।
স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২ অক্টোবর বিকালে ভাঙার কাজ বন্ধ করে দেন ইউএনও। নিলাম বাতিলের ঘোষণা দিলেও ৯ দিনেও নিলাম বাতিল ঘোষণা করা হয়নি। এদিকে বিকল্প শ্রেণি কার্যক্রমের ব্যবস্থা না করায় গত দুই দিনেও শিক্ষার্থীরা শ্রেণি কার্যক্রম করতে পারেনি। নিলাম কমিটির চার সদস্যের মধ্যে দুই সদস্য প্রশিক্ষণে থাকায় নিলাম কমিটির সভা ডাকতে না পারায় নিলাম বাতিল করা হয়নি বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মনজুরুল হক বলেন, বিকল্প শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সোনাগাজী বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের নবনির্মিত একটি ভবন নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি অ্যড. রফিকুল ইসলাম খোকন ও প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নানের সাথে কথা হয়েছে। আশা করছি বুধবার থেকে শ্রেণি কার্যক্রম করা যাবে।
যথাযথ নিয়ম অনুসরণ না করে নামমাত্র মূল্যে দেয়া নিলাম বাতিল করা হবে। নিয়ম মেনে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। অসুস্থ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে ভুল তথ্য দিয়ে নিলাম নেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত; পৌর শহরের সোনাগাজী মাদরাসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতৃন ভবন নির্মাণ কাজের দরপত্র ঘোষণা হয়।
নতুন ভবন নির্মাণের নিমিত্তে পুরাতন ভবনটি ভাঙার জন্য গোপনে নিলামের জন্য উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের মাধ্যমে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৭৪১টাকা প্রাক্কলিত মূল্য নির্ধারণ করা হয়। সেখানে সরকারি কোষাগারে ভ্যাট ও আয়কর সহ মাত্র ৪২ হাজার ৯৪০টাকা জমা দেয়া হয়েছে। বাকী ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৮০১ টাকা ভাঙার খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে।