হিলি স্থলবন্দরে পিঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪/৫ টাকা
হিলি প্রতিনিধি
ডলারের মুল্য বেড়ে যাওয়ায় ও আমদানি কমের অজুহাতে মাত্র দুদিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে পাইকাড়িতে পিঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪/৫টাকা করে। দুদিন পুর্বেও বন্দরে ইন্দোর জাতের প্রতি কেজি পিঁয়াজ ১৮ টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ২২ থেকে ২৩টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে হঠাৎ করে পিঁয়াজের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন নিন্ম আয়ের মানুষজনসহ বন্দরে পিঁয়াজ কিনতে আসা পাইকারগন।
হিলি স্থলবন্দরে পিঁয়াজ কিনতে আসা পাইকাড় আইয়ুব হোসেন বলেন, বেশকিছুদিন বন্ধের পর আবারো হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পিঁয়াজের আমদানি শুরু হওয়ায় আবারো আমাদের ব্যবসা বানিজ্য শুরু হয়েছে। মোকামগুলো থেকে চাহীদা পাওয়ার কারনে আমরা বন্দর থেকে পিঁয়াজ ক্রয় করে পাঠাচ্ছিলাম। পিঁয়াজ আমদানি শুরুর পর থেকেই পিঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছিল কমতে কমতে ১৮টাকায় নেমেছিল এতে করে আমাদের যেমন কিনতে সুবিধা হচ্ছিল তেমনি পুজি কম লাগায় মোকামে পাঠাতে সুবিধা হচ্ছিল। কিন্তু আবারো পিঁয়াজের দাম বাড়তির দিকে মাত্র একদিনের ব্যবধানে পিঁয়াজের দাম কেজিতে ৪/৫ টাকা বেড়ে ২২ থেকে ২৩টাকায় দাম উঠে গেছে। এতে করে আমরা যেমন পিঁয়াজ কিনতে ভয় পাচ্ছি তেমনি মোকামে ব্যাপারীরা পিঁয়াজের চাহীদা কমে দিয়েছে তারাও পিঁয়াজের বাজার পর্যবেক্ষন করছে।
হিলি স্থলবন্দরের পিঁয়াজ ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম বলেন, দেশে পিঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রনে ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সরকার পিঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ায় দুমাস বন্ধের পর গত ৫জুলাই থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পিঁয়াজের আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে সম্প্রতি হঠাৎ করে ডলারের মুল্য বেড়ে যাওয়ায় পিঁয়াজের দামের উপর প্রভাব পড়ছে। যেমন যখন ব্যাংকে পিঁয়াজের এলসি খোলা হচ্ছে তখন এক রেট আবার যখন ব্যাংকে বিল ছাড়তে হচ্ছে সেসময় বাড়তি মুল্য পরিশোধ করতে হচ্ছে। সেই সাথে ডলারের সংকটের কারনে ব্যাংকগুলোতে পিঁয়াজের এলসি সেভাবে দিচ্ছেনা, এমনকি নগদ টাকা দিয়েও এলসি খুলতে পারছেনা, এমনকি সব ব্যাংক এলসি দিচ্ছেনা। যার কারনে পুর্বে ছোট বড় সকল আমদানিকারক পিঁয়াজ আমদানি করতে পারলেও বর্তমানে ব্যাংকে এলসি দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা নিয়ন্ত্রন করায় সকলেই পিঁয়াজ আমদানি করতে পারছেনা। বড় যারা আমদানিকারক রয়েছেন শুধুমাত্র তারাই বর্তমানে এলসি করতে পারছেন। এতে করে হিলিসহ দেশের সবগুলো বন্দর দিয়ে পিঁয়াজের আমদানি কমে গেছে। যেখানে সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে পুর্বে প্রতিদিন ৭০/৮০ট্রাক পিঁয়াজ আমদানি হতো এখন সেখানে ৩৫ট্রাক করে পিঁয়াজ আমদানি হয়েছে। পিঁয়াজ আমদানির একই অবস্থা হিলি স্থলবন্দরের ক্ষেত্রেও। এতে করে দেশের বাজারে চাহীদার তুলনায় পণ্যটির সরবরাহ কমায় পিঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়ছে বলেও জানান তিনি।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, বন্দর দিয়ে পিঁয়াজের আমদানি অব্যাহত রয়েছে। বন্দর দিয়ে ২৩ জুলাই শনিবার ১৩টি ট্রাকে ৩৮৮টন পিঁয়াজ আমদানি হয়েছে। ২৪ জুলাই রবিবার ৩৪টি ট্রাকে ৯৬৫টন, ২৫ জুলাই সোমবার ২৯টি ট্রাকে ৮১৫টন, ২৬ জুলাই মঙ্গলবার ১৯টি ট্রাকে ৫২৩টন, ২৭ জুলাই বুধবার ২৮টি ট্রাকে ৭৯৬টন, গতকাল ২৮জুলাই বৃহস্পতিবার ৩০টি ট্রাকে ৮২৫টন পিঁয়াজ আমদানি হয়েছে। আজ শনিবার বন্দর দিয়ে পিঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। পিঁয়াজ যেহেতু কাচামাল দ্রæত পচনশীল তাই কাস্টমসের সকল প্রক্রিয়া শেষে আমদানিকারকগন যেন দ্রæত খালাস করে নিতে পারেন এজন্য বন্দর কতৃপক্ষ সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করে রেখেছে।