৫০ বছরের বিবাদ নিষ্পত্তি, ভারতের কাছ থেকে ৭৫ শতক জমি ফেরত পেল বাংলাদেশ
অনলাইন ডেস্ক।।
দীর্ঘ ৪৫ বছর পর নিষ্পত্তি হলো বিবাদ। আর সেইসঙ্গে ভারতের দখলে থাকা নওগাঁর সীমান্তের ৭৫ শতাংশ জমি পেল বাংলাদেশ। বুধবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে ধামইরহাট সীমান্তে আগ্রাদ্বিগুন ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর ফুটবল মাঠে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর মধ্যে কমান্ডার পর্যায়ে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকে এই জমির মালিকানা ছেড়ে দেয় ভারত। এসময় বিজিবি’র পক্ষে ৬ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন নওগাঁর পত্নীতলা ব্যাটালিয়ন (১৪ বিজিবি)র অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ হামিদ উদ্দিন। অপরদিকে ১২ সদস্য বিশিষ্ট বিএসএফ’র প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ভারতের পতিরাম আরাদপুর ১৬৪ ব্যাটালিয়ন বিএসএফ কমান্ড্যান্ট শঞ্জয় কুমার মিশ্রা।
১৪ বিজিবির পক্ষে জানানো হয়, নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার আগ্রাদিগুন সীমান্তে ২৫৭/২০ আর পিলারে কাছে জমি নিয়ে বিজিবির সঙ্গে বিএসএফ’র দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। আর জমিটি বাংলাদেশের ১০০ গজ অভ্যন্তরে হওয়ায় ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত সেখানে বাংলাদেশের কৃষকরা চাষাবাদ করে আসছিল। ১৯৭৭ সালের পর ওই জমিটি ভারতের বিএসএফ নিয়ন্ত্রণে নেয়। এরপর থেকে সেখানে বাংলাদেশের কৃষকেরা আর চাষাবাদ করতে পারছিল না।
এনিয়ে দুই দেশের মধ্যে অসংখ্যবার পত্র চালাচালি হয়েছে। কিন্তু বিরোধ নিস্পত্তি না করে শুধু কালক্ষেপন করা হচ্ছিল। এর একপর্যায় ১৪ বিজিবির পক্ষ থেকে বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য জমি জরিপসহ পতাকা বৈঠকের আমন্ত্রণ জানায় বিজিবি। পতাকা বৈঠকের আহ্বানে সাড়া দেয় বিএসএফ। এর প্রেক্ষিতে বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত পত্নীতলা ব্যাটালিয়ন (১৪ বিজিবি) এবং প্রতিপক্ষ ১৬৪ ব্যাটালিয়ন বিএসএফ আরাদপুরের মধ্যে সীমান্ত পিলার ২৫৮/৬-এস এর নিকটবর্তী বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আগ্রাদ্বিগুন ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর ফুটবল মাঠে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপর উভয় দেশের সার্ভেয়ার দ্বারা জমি পরিমাপ করা হয়। মাপজোপ শেষে ৭৫ শতাংশ জমিসহ অতিরিক্ত কিছু জমি পায় বাংলাদেশ। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত কোনো পক্ষই বর্ণিত জমিটি ভোগদখল করতে পারবে না এরূপ সিদ্ধান্ত নিয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে পতাকা বৈঠকটি শেষ হয়। এসময় ভারতের ভূমি অফিসের কর্মকর্তা ও বাংলাদেশের ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পত্নীতলা ব্যাটালিয়ন (১৪ বিজিবি) অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ হামিদ উদ্দিন বলেন, প্রায় ৪৫ বছর থেকে ওই জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। অবশেষে দুই দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে মাপজোপ শেষে উভয় দেশের ল্যান্ড সার্ভেয়ার কর্তৃক জরিপকার্য পরিচালনা করা হয়। জরিপ শেষে দেখা যায় যে বিরোধপূর্ণ জমিটি বাংলাদেশের ভূ-খণ্ড।
তিনি বলেন, জরিপকার্যের ফলাফল দ্রুততার সঙ্গে পত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশকে অবহিত করবেন বলে বিএসএফের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও সীমান্তবর্তী জনসাধারণের নিরাপত্তা এবং সীমান্তে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে উভয় অধিনায়ক একসঙ্গে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা করেন।
ফরহাদ/অননিউজ