কুয়াকাটায় আয়রণ ব্রিজ সংস্কার হয়নি ৮ মাসেও
অনলাইন ডেস্ক।।
আট মাস ধরে কুয়াকাটার আয়রণ ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ে আছে খালে। ঝুঁকি নিয়ে কাঠের তক্তা দিয়ে চলাচল করছেন ৫ গ্রামের অত্যন্ত ১৫ হাজার মানুষ। পারাপারে ভোগান্তি হয় কুয়াকাটায় আগত ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের। অথচ ব্রিজটি সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছেন না কেউ।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের মম্বিপাড়া ও পৌরগোজা গ্রামের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত বড়হর খালের ওপর ২০০৫ সালে আয়রণ ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে এটি সাধুর ব্রিজ নামে পরিচিতি পায়। ব্রিজ নির্মাণের সময় ঠিকাদারের ব্যাপক অনিয়মের কারণে স্থানীয়রা একাধিকবার কাজ বন্ধ করতে বাধ্য করছিলেন। কিন্তু তারপরও নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ শেষ করেন ঠিকাদার। বড়হর খালে জোয়ার-ভাটায় লবনাক্ত পানি প্রবাহিত হওয়ায় কয়েক বছরের মধ্যে ব্রিজের নিচের লোহার এ্যাঙ্গেলগুলো মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে যায়। ব্রিজের কংক্রিটের সবগুলো এলামেলো হয়ে জীর্ণ দশায় পরিণত হয়। কিন্তু গত বছরের ১১ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) রাত আটটার দিকে শ্রী মাধব সৈদ্দাল নামের এক ব্যবসায়ী একটি টমটম গাড়িতে ২৫ বস্তা সার নিয়ে পার হবার সময় ব্রিজের দক্ষিণাংশ ভেঙ্গে যায়। পরবর্তীতে চলাচলের জন্য কাঠের তক্তা দিয়ে প্রাথমিক মেরামত করা হয়েছিল। তবে এ অবস্থায় পরে আছে দীর্ঘ আট মাস। রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে তক্তাগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে মটোরসাইকেল, অটোভ্যান, ইজিবাইক পারাপার হচ্ছে। কাঠের তক্তা ভেঙ্গে ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা। এদিকে ব্রিজের মূল কাঠামো বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পরেছে। যে কোনো সময় পুরো ব্রিজটি বিধ্বস্ত হবার আশংকা রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. কামাল হোসেন সরদার বলেন, সার বোঝাই টমটম গাড়ি (স্থানীয় ডাক) পার হতে গিয়ে ব্রিজটি ভেঙ্গে গেছে। পরবর্তীতে কাঠের তক্তা দিয়ে পথচারিদের চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। বর্তমানে পুরো ব্রিজটি ঝুকিপূর্ণ হয়ে পরেছে। যে কোনো মুহূর্তে বিধ্বস্ত হতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই ব্রিজ দিয়ে ৫ গ্রামের মানুষের চলাচল। এ ছাড়া কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা এ ব্রিজ পার হয়ে উপকূলের অলংকার খ্যাত রাখাইন সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৌদ্ধমন্দির ‘মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধসীমা ঘরের সৌন্দর্য দেখতে যান। এ কারণে জনগুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে ব্রিজটি।
লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর আমি কলাপাড়া উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তাকে অবহিত করেছিলাম। প্রাথমিকভাবে ভাঙ্গা অংশটুকু সংস্কার করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু নানা কারণে এখনও সংস্কার হয়নি। কাঠের তক্তা দিয়ে মানুষ চলাচল করছে। ব্রিজটি অপসারণ করে একটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবনা দেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে কলাপাড়া উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী ফয়সাল বারী পূর্ণ বলেন, আমি বিষয়টি অবগত আছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। আপাতত নতুন ব্রিজ নির্মাণের প্রকল্প নেই। উপজেলার পুরানো ব্রিজগুলো সংস্কারের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। আগামী অর্থ বছরে সংস্কার করা হবে।
শান্ত/অননিউজ