দেওয়ানগঞ্জগামী ট্রেনে ডাকাতি ও দুইজন খুনের ঘটনায় ৫ জন গ্রেফতার
মঈন উদ্দিন রায়হান, ময়মনসিংহ ।।
ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ হয়ে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনের ছাদে ডাকাতি ও দুইজন খুনের ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪। আটককৃতরা হলো- আশরাফুল ইসলাম স্বাধীন (২৬), মাকসুদুল হক রিশাদ (২৮),মো: হাসান (২২) রুবেল মিয়া (৩১) মোহাম্মদ (২৫)। শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে ময়মনসিংহ নগরীর শিকারীকান্দা ও বাঘমারা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর এদের কাছ থেকে লুন্ঠিত মোবাইল, টাকা উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে জামালপুরগামী কমিউটার ট্রেনের ছাদে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এতে ২ জন যাত্রী মারা যায়। আহত হয় ১জন। রবিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে র্যাবের এক প্রেস ব্রিফিং এ জানানো হয়, ট্রেনের ছাদে ডাকাতি ও দুইজন খুনের ঘটনার পর থেকে র্যাবের গোয়েন্দারা তৎপরতা শুরু করে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন, পারিপাশ্বির্কতা বিচার ও নিহতের বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে শনিবার মধ্যরাতে সর্বপ্রথম আশরাফুল ইসলাম স্বাধীনকে ময়মনসিংহ নগরীর শিকারীকান্দা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে লুট হওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সাথে জড়িত মাকসুদুল হক রিশাদ, মো: হাসান, রুবেল মিয়া ও মোহাম্মদকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে তাদের দেওয়া তথ্য মোতাবেক ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র, টাকা ও মোবাইল উদ্বার করা হয়।
এসময় র্যাব আরো জানায়, ট্রেনে ডাকাতির উদ্দেশ্যে কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ৪জন পেশাদার ডাকাত দেওয়ানগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনে উঠে। রিশাদ, হাসান এবং স্বাধীন টঙ্গী স্টেশন থেকে এদের সাথে যুক্ত হয়। ট্রেনটি ফাতেমা নগর স্টেশনে থামলে তাদের সাথে যোগ দেয় মোহাম্মদ সহ আরেক সহযোগি। ট্রেনটি স্টেশন থেকে ছেড়ে দিলে তারা ট্রেনের ইঞ্জিনের পরের বগির ছাদে বসে থাকা যাত্রীদের মোবাইল ও টাকা লুট করা শুরু করে। ডাকাতির এক পর্যায়ে ভিকটিম মৃত মো: সাগর মিয়া ও নাহিদ বাধা দিলে তাদের সাথে ধ্বস্তাধ্বস্তি শুরু হয়। এ সময় ডাকাতরা তাদের হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে ভিকটিমদের মাথায় আঘাত করতে থাকে। এ সময় সাগর ও নাহিদ আঘাতে লুঠিয়ে পড়লে ডাকাতরা ময়মনসিংহ রেল স্টেশনে প্রবেশের পূর্বে সিগন্যালের কাছে নেমে যায়।
প্রেস ব্রিফিং এ র্যাব ১৪’র উইং কমান্ডার রুকুনুজ্জামান জানান, এ চক্রটি নিয়মিত ভাবে ডাকাতি করে আসছে। এরা একটি সংঘবব্দ চক্র। এরা ঢাকার কমলাপুর, এয়ারপোর্ট ও টঙ্গী রেল স্টেশন থেকে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ট্রেনে উঠে। এদের সহযোগি গফরগাঁও-ফাতেমা নগর স্টেশন হতে ট্রেনে উঠে সম্মিলিতভাবে ট্রেনে ডাকাতি ও ছিনতাই করে ময়মনসিংহ স্টেশনে নেমে যায়। এরা ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে ডাকাতি ও ছিনতাই করতো। এ গ্রুপ গুলোর কেউ টার্গেট সনাক্ত করতো, কেউ নিরাপত্তা দেখতো, কেউ লুট করা মালামাল বিক্রি করতো। রিশাদ এ চক্রের মূল হোতা। এ চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24।।