স্বামীর আয়ের উপর নির্ভর করে চুলা জ্বালাতে হয় না জহুরা বানুর ভিজিডি কার্ড দিয়েছে ভাতের নিশ্চয়তা
সুভাষ বিশ্বাস, নীলফামারী প্রতিনিধি।।
![](https://onnews24.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
ভিজিডির চাল ও প্রশিক্ষন দরিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারীদের দুবেলা পেট ভরে ভাত খাবার নিশ্চয়তা দিয়েছে, এখন আর স্বামীর আয়ের উপর নির্ভর করে রান্নার চুলা জ্বালাতে হয় না।
অনাহারে অদ্ধাহারে দিন কাটতো গোলাপী বেগমের স্বামী অসুস্থ্য ১৩ বছরের সন্তান বাক প্রতিবন্ধি অন্যের বাড়ীতে ঝিয়ের কাজ করে যে খাবার মিলতো তা ভাগ করে খেত ২ কন্যা শিশু সহ ৫ জন। পেট ভরা ভাত কবে খেয়েছিল সে কথা ভুলে গিয়েছিল গোলাপী। গোলাপীর আর্থিক স্বচ্ছলতা নেই, দরিদ্রসীমার নিচে বসবাস। সরকারি রাস্তার পাশে অন্যের জমিতে পাট খড়ি দিয়ে ঝুপরি ঘর বানিয়ে স্বামী সন্তান নিয়ে বাস করেন গোমনাতি ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের দক্ষিন মাষ্টার পাড়ার রাস্তার পাশে। গোলাপী বেগম বলেন, ভিজিডির চাল পেয়ে এখন আর না খেয়ে থাকতে হয় না পরিবারের কোন সদস্যকে, দু বেলা দু মুঠো ভাত পেট ভরে খেতে পাওয়ায় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিরকৃজ্ঞ আমি। চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আমি ভিজিডি কার্ড পাই।
একই ওয়ার্ডের জহুরা বানু, স্বামী- মজনু ইসলাম, রিক্সা চালক মেম্বারপাড়াতে বন বিভাগের জমিতে বসবাস করেন। জহুরা বানু বলেন, স্বামীর আয়ের ওপর রান্নার চুলা জ্বালাতো। অন্যের বাড়ীতে কাজ শেষে যে খাবার টুকু পেতাম স্বামী সন্তান নিয়ে দু মুঠো খেয়ে দিন কাটাতাম। ভিজিডি কার্ডের চাল পেয়েছি, আমাকে ভাতের চিন্তা আর করতে লাগে না। দুই বেলা পেট ভরে খেতে পারি।
৮নং ওয়ার্ডের পমিলা আক্তার, স্বামী- লুৎফর রহমান, অধাঙ্গ প্যারালাইস ভারি কোন কাজ করতে পারে না তাই তাকে কেউ কাজে নেয় না সঙ্গে ১টি ৭ বছরের শিশু কন্যা রয়েছে। পমিলা আক্তারও অন্যের বাড়ীতে কাজ করে স্বামী সন্তানের মুখে খাবার তুলে দেয়। অনেক সময় নিজেকে না খেয়ে রাত পার করতে হয়েছে, এ কথা গুলো বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন পমিলা আক্তার। আমার প্রধান মন্ত্রী মাসে ৩০ কেজি চাল দেয়, সেই চাল দিয়ে আমার ১ মাসের খাবার হয়। আমাকে ও স্বামী সন্তানকে ভাত না খেয়ে থাকতে হয় না। গোমনাতি ইউনিয়নে শুধু গোলাপী, জহুরা, পমিলা ঝরনা, রুপারী নয় এরকম হাজার হাজার পরিবারের ভাত খেয়ে বেঁচে থাকার অবলম্বন ভিজিডি কার্ড।
গোমনাতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, ইউনিয়নে ভিজিডি কার্ড যাচাই-বাচাই কমিটি রয়েছে, দরিদ্র সীমার নিচে যারা বসবাস করছে তারা অগ্রাধিকার পায় এই ভিজিডি কার্ড সুবিধার, আমরা তো সকল দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে দিতে চাই, কিন্তু বরাদ্দ অল্প থাকায় সীমাবদ্ধাতা তৈরী হয়। গোমনাতি ইউনিয়নে ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৩৮২ জন বরাদ্দ পায় ভিজিডি কার্ডের, অনলাইনে আবেদন করে ১০৪৭ জন।
জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আনিসুর রহমান জানান, এই অধিদপ্তরের মাধ্যমে নারীদের আর্থিক দৈনতা যেমন অবসান ঘটেছে পাশাপাশি ভিজিডি সুবিধাভোগীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষন দিয়ে আত্মনির্ভরশীল করার প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে। জেলা মোট ভিজিডির সুবিধাভোগীর সংখ্যা ১৯ হাজার ৮২২ জন এর মধ্যে নীলফামারী সদর উপজেলায় ৩১৭৬, ডিমলা উপজেলা ৬৩৯৩, জলঢাকা উপজেলা ৩৪২৩, কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ৩৪৪৭, ডোমার উপজেলায় ৩৪৪৯ ও সৈয়দপুর উপজেলা ২৬৯৪জন চক্রহিসাবে ২ বছরের জন্য এই সুবিধা পাবে ভিজিডি কার্ড ধারীরা।
আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24