ইটভাটা মালিকের বিরুদ্ধে ৩ ফসলি কৃষি জমি দখল করার অভিযোগ

মুরাদনগর প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন চৈনপুর চয়নিকা ইটভাটা মালিকের বিরুদ্ধে ৩ ফসলি কৃষি জমি জোরপূর্বক দখল করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চৈনপুর গ্রামের কৃষকগণ শনিবার দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন।

ভূক্তভোগি কৃষক নবী নেওয়াজ সরকার, বিল্লাল হোসেন ভুইয়া, মঞ্জু মিয়া, মুর্শিদ আলম ভুইয়া, কফিল উদ্দিন, শাহআলম, জাকির হোসেন ও গোলাম কিবরিয়া ভুইয়া বলেন, আমরা কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। চয়নিকা ইটভাটার কর্তৃপক্ষ ছলচাতুরী করে আমাদের ৩ ফসলি কৃষি জমি জোরপূর্বক দখল করে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে আমাদের মতো কৃষকদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। আমরা আমাদের জমিতে কাজ করতে গেলে হুমকি-ধমকিসহ মারধরের শিকার হতে হয়। সম্প্রতি মঞ্জু মিয়া তার নিজের জমিতে চাষাবাদ করতে গেলে ইটভাটায় কর্মরত ব্যক্তিরা তাকে বেধরক মারধর করে। তাদের ভয়ে কোন কৃষক অভিযোগ করতেও সাহস পাচ্ছে না। ইটভাটা কর্তৃপক্ষ ৯ কৃষকের ৪ একর জমি জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে। বিগত ৩ বছর যাবত আমরা আমাদের কৃষি জমিতে যেতে পারছি না। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা দু:খ প্রকাশ করে আরো বলেন, এ দেশ কৃষি প্রধান দেশ। আমরা আমাদের ৩ ফসলি কৃষি জমি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছি। জমিতে ফিরে গিয়ে আমরা কৃষিতে স্বনির্ভর হতে চাই।

কৃষক হাজী মোস্তফা কামাল ভুইয়া বলেন, আমি আমার কৃষি জমি ইটভাটায় দিতে রাজি ছিলাম না। ইটভাটার পরিচালক এডভোকেট নজরুল ইসলাম, নেছার আহমেদ রাজু ও ম্যানেজার নুরুল হুদা প্রতারণার মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করে আমার জমিগুলো হাতিয়ে নেয়। বৈশাখ মাসে আমার পত্তনের টাকা পরিশোধ করার কথা থাকলেও আমাকে দেম দিচ্ছি বলে ফাঁকিবাজি করছে। এ ইটভাটা থেকে ২০২১ সালের ২২ আগষ্ট আমি ৩ লাখ ইট ক্রয় করেছিলাম। মাত্র ১০ হাজার ইট দিয়ে বাকী ইটগুলো না দেওয়ার পাঁয়তারা করছে ইটভাটা কর্তৃপক্ষ। ইটভাটা যে আমার এতবড় সর্বনাশ ডেকে আনবে, তা আমার জানা ছিল না। আমি আমার জমি ইটভাটাকে আর দিব না। আমার ফসলি জমি ফিরিয়ে দিলে পূর্বের মতো কৃষি কাজ করে ফসল ফলাতে চাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নিরীহ কৃষক বলেন, আমার একখন্ড জমি ছিল। যে জমিতে ৩ বার ধান চাষ করে সংসারের খোরাক চালাতাম, সে জমি এখন ইটভাটার গর্ভে। আমার কাছ থেকে জমি নিতে অনেক লোভ লালসা দেখিয়েছে। বলেছে, ফসল ফলিয়ে যা পাও তার চেয়ে বেশী টাকা আমরা দেব। এখন টাকা দিবে দূরের কথা ঘরের খোরাক যোগাতেও আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। আমি আমার জমি ফেরত পেলে পূর্বের মতো কৃষি কাজ করে দু:খ দূর্দশা গুছাতে পারব।

এ বিষয়ে চয়নিকা ইটভাটার পরিচালক নেছার আহমেদ রাজু বলেন, জোর করে জমি দখলের প্রশ্নই ওঠে না। কৃষকদের কাছ থেকে জমিগুলো পত্তন নিয়ে ইটভাটা চালু করেছি। ইতিমধ্যে কিছু কৃষক জমি পত্তন দিতে চাচ্ছে না। যদি না দেয়, তাহলে আমরা তাদের জমি ফিরিয়ে দেব।

এফআর/অননিউজ

আরো দেখুনঃ