ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ৬৩, ‘বিরতি’ সত্ত্বেও ক্ষুধা সংকট আরও ভয়াবহ

অনলাইন ডেস্ক।।

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর সামরিক হামলা অব্যাহত রয়েছে। রবিবারের হামলায় অন্তত ৬৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যদিও ইসরায়েল প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ধরে সামরিক অভিযান ‘স্থগিত’ রাখার ঘোষণা দিয়েছিল, বাস্তবে সেই বিরতি ফলপ্রসূ হয়নি। একই সময়ে খাদ্য ও পানির অভাবে মানবিক সংকট চরমে পৌঁছেছে, শিশুসহ আরও ৬ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন কুপুষ্টির কারণে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, মানবিক ত্রাণ সরবরাহে সহায়তা করতে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৮টা পর্যন্ত সামরিক অভিযান ‘স্থগিত’ রাখা হবে। এছাড়া সকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ‘সহায়তা করিডোর’ খোলা থাকবে। তবে গাজার বিভিন্ন অঞ্চল বিশেষ করে ডেইর আল-বালাহ এবং গাজার দক্ষিণাঞ্চলে এই সময়েও হামলার খবর পাওয়া গেছে। ডেইর আল-বালাহর একটি বেকারিতে বোমা বর্ষণে বহু মানুষ হতাহত হন। আল-জাজিরার গাজা প্রতিনিধি হিন্দ খোদারি জানান, যেসব এলাকাকে ‘নিরাপদ’ ঘোষণা করা হয়েছিল সেখানেও হামলা চলছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, রবিবার কেবল ক্ষুধাজনিত কারণে আরও ৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে দুইজন শিশু রয়েছে। এ নিয়ে অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া সংঘাতের পর গাজায় কেবল ক্ষুধায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩৩ জনে।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (WFP) তথ্যমতে, গাজার এক-তৃতীয়াংশ বাসিন্দা কয়েকদিন ধরে কোনো খাবার পাচ্ছেন না। প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ ভয়াবহ খাদ্য সংকট বা “ক্ষুধার মতো পরিস্থিতির” মধ্যে রয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানায়, গর্ভবতী ও স্তন্যদায়ী নারীদের অন্তত ২০ শতাংশ চরম পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন।

গাজার বাসিন্দা স্মৌদ বাহদার বলেন, “আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে এসেছি, কারণ আমার সন্তানরা এক সপ্তাহ ধরে না খেয়ে আছে। অন্তত এক পিস রুটি তাদের জন্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।” আরেক বাসিন্দা ফালেস্তিন আহমেদ বলেন, “আগে আমার ওজন ছিল ৫৭ কেজি, এখন ৪২ কেজিতে নেমেছে। আমি ও আমার সন্তান কুপুষ্টিতে ভুগছি। খাবারের দাম আকাশছোঁয়া, আর বাজারে খাবার নেই।”

জর্ডান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত বিমানপথে গাজায় ত্রাণ ড্রপ করেছে, কিন্তু ত্রাণ নামানোর সময় সরাসরি শরণার্থী শিবিরে পড়ায় অন্তত ১১ জন আহত হন। হামাস এই ড্রপিংকে “অমানবিক” ও “বিপজ্জনক” বলেও নিন্দা জানিয়েছে।

ইসরায়েল দাবি করেছে, গাজায় কোনো ‘ক্ষুধার সংকট’ নেই। তাদের ভাষ্য, খাদ্য সরবরাহে কোনো বাধা নেই এবং এসব খবর “প্রচারযুদ্ধের অংশ”। তবে বাস্তবতা ভিন্ন। আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজার জনগণ ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে দিন পার করছে

সূত্র:বিডি২৪লাইভ
ই/অননিউজ ২৪

আরো দেখুনঃ