কসবার ৮টি ইউপি নির্বাচন, বায়েকের একক প্রার্থী আল মামুন ভুঁইয়া

শান্তনু হাসান খান (বিশেষ প্রতিনিধি)।।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের কসবা-আখাউড়ায় মোট ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে এবার ৮টি ইউনিয়নের নির্বাচনের তফসিল আসবে ডিসেম্বরে। আর আখাউড়ার ৫টি ইউনিয়ন তফসিলও চলতি মাসেই। মনিনন্দন, গোপীনাথপুর, মোগরা, আখাউড়া সদর উত্তর, সদর দক্ষিণ ইউপি নির্বাচনে প্রায় ডজনখানিক প্রার্থী এখন এলাকার মাননীয় সাংসদ, সরকারের আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হকের কাছে ধর্না দিচ্ছেন নৌকার টিকিটের জন্য। কিন্তু মন্ত্রীর সাফ কথা একটাই- তৃণমূলে যার যার গ্রহণযোগ্যতা আছে তাকেই জননেত্রী শেখ হাসিনা নৌকার টিকেট দেবেন। আগামীতে যাতে বিদ্রোহী প্রার্থীর আগমন না ঘটে, সে সুবাদে কারো জন্য এককভাবে কাউকো সার্টিফাই করা যায় না। তবে একজন ইনশাল­াহ নৌকার প্রার্থী হবেন। যাতে কোন প্রকার সহিংসতা না ঘটে সেদিকে প্রতিটি আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের প্রতি অনুরোধ থাকবে। তাছাড়াও ২০১৬ তে যারা নৌকার প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের বিষয় পজেটিভ। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া হতে পারে।

এদিকে কসবার কুটি ও খাড়েরা ইউপি নির্বাচন চলতি বছরে আর হচ্ছে না। তবে আলোচিত বায়েক ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান আল মামুন ভূঁইয়া এবারও নির্বাচনে মাঠে থাকছেন। তার পাশাপাশি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ারুল করিম ভূইয়া শাহরিয়ার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম তারাও নমিনেটেড হতে চাইছেন। এছাড়াও সাবেক চেয়ারম্যান বিল­াল হোসেন, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজমল এবং জনৈক মনিরুল হক মনির। তবে জনগণ এবার পরিবর্তন চাইছেন। আর সেই পরিবর্তনের জন্য বর্তমান চেয়ারম্যানকে পছন্দের তালিকায় রেখেছেন। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহরিয়ার ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল-দুজনই ওভার কনফিডেন্ট হয়ে তারা নির্বাচনে মাঠে থাকতে চাচ্ছেন। তবে তারা দুজন এলাকায় অনেক প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে আছেন জনগণের কাছে।

বায়েক ইউপি চেয়ারম্যান আল-মামুন ভূইয়া এখানকার ৮নং ওয়ার্ডের ভোটার। বেড়ে উঠেছেন এ জনপদে। মাটি আর মানুষের সাথে সম্পৃক্ত। পড়াশোনা করেছেন স্থানীয় শেরে বাংলা হাই স্কুলে। পরবর্তী সময় কুমিল­া ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্র ছিলেন। ছাত্র অবস্থায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। সে সময় সমাজ কল্যাণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। এক সময় সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরে কসবা উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি বলেন, আমার অতীতের পলিটিক্যাল ক্যারিয়ার আর এলাকার মানুষের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি বিবেচনা করলে আমার নেত্রী- জননেত্রী শেখ হাসিনা ইনশাল­াহ আমাকে দলীয়ভাবে নমিনেটেড করবেন বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। আর সে বিশ্বাসের উপর ভর করে আগামী নির্বাচনের জন্য পরিবেশ সুন্দর করে রাখার চেষ্টা করছি। দলীয়ভাবে নমিনেটেড হতে পারলে যে কোন প্রার্থীকে ডিঙ্গিয়ে বিপুল ভোটে পুনরায় জয়ী হতে পারবো ইনশাল­াহ। তিনি বলেন, আমার প্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সরকারের আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক এবারও আমাকে দলীয়ভাবে নমিনিয়েশন দিতে সাহায্য করবেন বলে আমার বিশ্বাস। আর পুণরায় নির্বাচিত হলে এ ইউনিয়নকে অত্যাধুনিক ও ডিজিটাইলাইজড ইউনিয়ন হিসেবে জনগণকে উপহার দেয়ার চেষ্টা করবো।

তিনি বলেন, নির্বাচিত হওয়ার পরে উন্নয়নের অসমাপ্ত কাজগুলো সমাধা করার চেষ্টা অব্যাহত রাখবো। এদিকে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার সবচাইতে বড় প্রকল্প দারিদ্রদের জন্য গৃহায়নে ৪০০ ঘর ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। বাকী রয়েছে ১০০টি। আর তখনই এখানকার হতদরিদ্র মানুষদের মাথা গোজার ঠাঁই চূড়ান্ত হবে। আমার বায়েক ইউনিয়ন যেহেতু সীমান্তবর্তী- সে কারণে অনেক খবর মিডিয়াতে ভাইরাল হয়। সব কথাগুলো সঠিক নয়। সীমান্তে চোরাচালান কিংবা গরু চুরিরমত ঘটনা আগে ছিল এখন আর নেই। স্থানীয় প্রশাসন ও বিজিবি’র সহায়তায় চোরাচালান প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে।

৬১ বছরের আল মামুন ভূঁইয়া-সারা জীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করেছেন। তার প্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এ অঞ্চলের বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম সিরাজুল হক বাচ্চু মিয়া। তাঁর আমল থেকেই এ অঞ্চলে আওয়ামীলীগের গোড়াপত্তন। মাঝখানে বিএনপি-জাতীয়পার্টি এলাকাটির আধিপত্য বিস্তার করেছিল। আর বর্তমানে আমাদের সাংসদ এডভোকেট আনিসুল হক ঘুরে দাড়াতে সাহায্য করেছেন।

এবার ওভার কনফিডেন্ট আছে- মাননীয় মন্ত্রীর পৃষ্ঠপোষকতায় জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকার টিকেট দিবেন। মামুন ভূইয়া বলেন, নির্বাচিত হলে বায়েককে ঢেলে সাজাবো। আর সেটা হবে আমার মাননীয় এমপি’র দিক নির্দেশনায়। ৬১ বছরের মামুন ভূইয়া এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত। মসজিদ, মাদ্রাসা, ঈদগাঁহ সহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে একজন নন্দিত ব্যক্তি। এলাকায় তিনি গ্রাম্য সালিশ বিচারের জন্য বেশ সনামধন্য একজন মানুষ হিসেবে বেশ পরিচিত। তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে জননেত্রী শেখ হাসিনার এবারের প্রতিপাদ্য- “আমার গ্রাম-আমার শহর” বাস্তবায়িত করতে আমি ব্যক্তিগতভাবে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24।।

 

আরো দেখুনঃ