কারাগারে সড়ক বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী টিটু, সাংবাদিক হয়রানির প্রতিবাদ

এম এ কবীর, ঝিনাইদহ ।।

স্ত্রী শাহানাজ পরভীনকে যৌতুকের দাবীতে নির্যাতন, স্ত্রীর প্রবাসী ভাই এর স্ত্রীর সাথে পরকীয়া করে অনৈতিক কাজের ভিডিও ধারণ করে ব্লাকমেইল এবং অর্থ আত্মসাৎ সহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইবুনালে চার মামলার আসামী আহসানুল কবীর টিটুকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

টিটু মাগুরা সড়ক বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কোর্টপাড়া এলাকার মৃত গোলাম মজনুর ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায় টিটুর সাথে আবাইপুর ইউনিয়নের পাঁচপাখিয়া গ্রামের মৃত হাফিজুর রহমানের মেয়ে শাহানাজ পারভীন এর বিয়ে হয় ১০ বছর আগে। তাদের রয়েছে দু’টি ফুটফুটে শিশু সন্তান। বিয়ের ৬ বছরের মাথায় টিটু’র স্ত্রী শাহানাজ পারভীনের ভাইয়ের বউ এক সন্তানের জননী শেফালী খাতুনের সাথে পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ে। এরপর থেকেই শুরু হয় স্ত্রী শাহানাজ পারভীনের উপর নির্যাতন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩০ অক্টোবর যৌতুকের টাকার জন্য শাহনাজকে বেধড়ক মারপিট করে ঘরে আটকে রাখে টিটু। হাসপাতালে যেতে ও বাঁধা দেয়। এঘটনায় শাহানাজ পারভীন বাদী হয়ে শৈলকুপা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১১ (গ) ধারায় মামলা করেন। মামলা নং ৬,তারিখ- ০৩/১১/২০২১ ইং। এরপরই টিটু তার পরকিয়ার অন্তরঙ্গ মেলামেশার ছবি ও ভিডিও তার স্ত্রীর ভাই মনিরুলের কাছে পাঠানো সহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেয় এবং তাকে ব্লাকমেইল করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক টিটু।

এদিকে কুরুচিপূর্ণ অন্তরঙ্গ মেলামেশার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে শেফালীর স্বামী মনিরুল বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ২০০০ (সংশোধন/০৩) এর ৯ (১) ধারা এবং পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮(১)(২)(৩) ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকে টিটু পলাতক থাকে। অবশেষে মঙ্গলবার বিকালে ঝিনাইদহ র‌্যাব টিটুকে গ্রেফতার করে। এরপর রাতেই শৈলকুপা থানায় তাকে হস্তান্তর করা হয়। বুধবার তাকে আদালতে প্রেরণ করলে বিজ্ঞ আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।

উল্লেখ্য টিটু এবং শেফালীর পরকীয়ায় আসক্ত হওয়া,তিনটি ফুটফুটে শিশুর জীবন ধ্বংস করা, আপন দু’ভাই বোনের সংসার ভেঙে যাওয়ার এই সংবাদ ঝিনাইদহের
সাংবাদিকরা বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশ করে। প্রকাশিত এই সংবাদের প্রেক্ষিতে শেফালী ঝিনাইদহের তিন সাংবাদিক মনিরুজ্জামান সুমন,এইচ এম ইমরান,শামীমুল ইসলাম শামীম এবং তার তালাক দেয়া স্বামী মনিরুলের বিরুদ্ধে খুলনার সাইবার ট্রাইবুনাল আদালতে মামলা দায়ের করে। আদালত মামলাটি পিবিআই কে তদন্তভার দেয় যা বর্তমানে তদন্তপর্যায়ে আছে। এ দিকে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে একজন অপরাধীর মামলার প্রতিবাদে ঝিনাইদহের সাংবাদিকরা আন্দোলনে রাস্তায় নামে,তারা মানব বন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে এর প্রতিবাদ জানায়।

আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24।।

আরো দেখুনঃ