কুড়িগ্রামে জমি অধিগ্রহন না করেই ব্যক্তিগত জমিতে সেতু নির্মাণ করছেন এলজিইডি

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি।।

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে জমি অধিগ্রহণ না করেই ব্যক্তি মালিকানা জমির উপর সেতু নির্মাণের অভিযোগ ওঠেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় (এলজিইডির) বিরুদ্ধে।

সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়,উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের পাত্রখাতা গ্রামের সংযোগ সেতু নতুন করে নির্মাণ ২০২৩ সালে শুরু হয়। রংপুর বিভাগ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের ৬৮ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির কাজ শুরু করে এলজিইডি। ৩ কোটি ৪০ লাখ ৩১ হাজার ২৯৬ টাকা ব্যায়ে সেতুটির নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে।

এ ঘটনায় বারবার অভিযোগ করেও সুরাহা মেলেনি ভুক্তভুগীর। সেতু নির্মাণের কাজ অব্যাহত রেখেছে কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করলে গত ৩১ জুলাই ২০২৩ সালে সহকারী কমিশনার স্বাক্ষরিত একটি চিঠি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন। এরই পরিপেক্ষিতে সাবেক ইউএনও মাহাবুবুর রহমান তদন্ত করেন। তদন্তে তৎকালিন ইউএনও সরকারী খাসভুক্ত জমি হিসেবে তদন্ত রিপোর্ট দেয়। যা মনগড়া বলে দাবি করেন জমির মালিক।

জমির মালিক রেজাউল করিম বলেন,’নির্মাণাধীন সেতুটির দৈর্ঘ্য বেশি হওয়ায় আমার জমি পাত্রখাতা মৌজার জেলএল নং ১৫, দাগ নং-৩১৩৫ এ প্রায় ৯ শতাংশ জমি সেতুর মধ্যে পড়েছে এবং একটি অখন্ড জমি সেতুদ্বারা খন্ডিত হয়েছে। ইতিমধ্যে এই জমির মধ্যে সেতুর পিলারও স্থাপন করা হয়েছে। এ নিয়ে সেতু নির্মাণের শুরুতে একাধিকবার এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও কোন লাভ হয়নি।’

জমির আরেক মালিক শামসুল হক বলেন,’এ বিষয়ে প্রতিকারের জন্য গত বছর ডিসি অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি,কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এখানে কাশেম মাষ্টার নামের আরো এক ব্যক্তির ৩ শতক জমি সেতুতে পড়েছে।’

জেলার সচেতন নাগরিক কমিটি(সনাক) সভাপতি এ্যাডভোকেট আহসান হাবিব নিলু বলেন,’সরকারিভাবে ব্যক্তি মালিকানায় জমি অধিগ্রহন না করে কোন স্থাপনা করার সুযোগ নেই। কারও যদি সামান্যটুকু অংশ সরকার ব্যবহার করে তাকে সেটি অধিগ্রহন করে নিতে হবে।’

উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ফিরোজুর রহমান বলেন,’ নির্মানাধীন ব্রীজটির জায়গাটি ব্যক্তি মালিকানা হিসেবে আগে কেউ দাবি করেনি। এখন যেহুতো ব্রিজটি নির্মানের শেষের পথে,উর্দ্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিষয়ে লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও চিলমারীর সাবেক ইউএনও মো. মাহবুবুর রহমান বলেন,’সেতুটি সরকারি জায়গায় করা হচ্ছে।’

এ বিষয়ে চিলমারী উপজেলার সহকারী কমিশনার(ভূমি) মো.গোলাম রব্বানী বলেন,’এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি সরকারি কাজে বাইরে আছি। আপনি আমার অফিসে দেখা কইরেন।’

এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুজ্জামান বলেন,’আমি নতুন এসেছি। এ বিষয়ে কিছু জানিনা। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’

বর্তমান চিলমারীর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.মিনহাজুল ইসলাম বলেন,’আমি উভয় পক্ষের সাথে কথা বলবো। জমি অধিগ্রহনের সুযোগ থাকলে অবশ্যই তা অধিগ্রহন করা হবে।’

এফআর/অননিউজ

আরো দেখুনঃ