কুষ্টিয়ার কুমারখালী চপড়া ইউনিয়নে পুরুষ শূন্য

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি।।

কুষ্টিয়ার কুমারখালীর আমিরুল ইসলাম হত্যা আজ ১১ দিন । ৩২ আসামীর একজন কেউ গ্রেফতার করতে পারিনি পুলিশ। তবে পুলিশ বলছে ঘটনার পর থেকেই আসামীরা পলাতক রয়েছে। গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিহত আমিরুল ইসলম উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামের সাজ্জাদ হোসেনের ছেলে। তাঁকে গত ১৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার পূর্ব শত্রæতার জেরে প্রতিপক্ষরা কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পাঁচদিন পরে গত শনিবার (২২ জানুয়ারি) থানায় মামলা করেন নিহতের স্ত্রী জহুরা বেগম। মামলা নম্বর ১৬। প্রতিপক্ষের আরিফকে প্রধান আসামী করে ৩২ জনের নামে মামলা করেন তিনি।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তারে পাহাড়পুরে শেখ ও মন্ডল গ্রুপের সাথে ব্যাপারি ও মেম্বর গ্রæপের দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছে। বর্তমান শেখ ও মন্ডল গ্রুপের নেতৃত্ব দেন ভুট্টো ও তরুন নামের দুইজন। আর ব্যাপারি ও মেম্বর গ্রুপের নেতৃত্ব দেন সাদ ব্যাপারি ও কটা মেম্বর। দুগ্রæপের আধিপত্য বিস্তারে গত চার বছরে খুন হয়েছেন চারজন। আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ।

অপরদিকে হত্যার ঘটনায় হামলা ও মামলার ভয়ে পাহাড়পুর গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার পূরুষ শূণ্য হয়ে পড়েছে। হামলা, ভাংচুর ও মামলার আতঙ্কে ঘরের আসবাবপত্র ও গৃহপালিত পশু – পাখি নিয়ে অন্যান্য গ্রামের আত্মীয় – স্বজনদের বাড়িতে নিরাপদে চলে গিয়েছিল নারীও। তবে সময় গড়ার সাথে সাথে নারী ও সন্তানেরা গ্রামে ফিরতে শুরু করেছে। কিন্তু গ্রামে ফিরেও উভয়পক্ষের নারীরা হুমকি প্রদান ও ভাংচুরের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছেন।

শনিবার পাহাড়পুর গিয়ে দেখা যায়, মোড়ে মোড়ে রয়েছে পুলিশের অবস্থান। বেশকিছু বাড়িতে নতুন ভাংচুর চিহৃ। সড়কে নারী ও বাচ্চাদের চলাফেরা। বেশকিছু বাড়ির নারী ও সন্তানেরা ফিরে এসেছে। তবে প্রায় শতাধিক ঘরবাড়িতে কোন পুরুষ সদস্য নেই।

হুমকি ও ভাংচুরের বিষয়ে শেখ মন্ডল গ্রæপের সমর্থক লাল্টুর স্ত্রী সাগরী খাতুন বলেন, কটা মেম্বরের লোকজন আমার ঘরবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। আমাদের লোক হত্যা করে পালিয়েছে। এখন মেম্বরের স্ত্রী শিলা খাতুন প্রায় ১০/১৫ জন মহিলা নিয়ে আবারও আমাদের বাড়িতে ভাংচুর করছে। বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে।

কটা মেম্বরের স্ত্রী শিলা খাতুন বলেন, প্রতিপক্ষের অভিযোগ মিথ্যা। আমাদের পুরুষের পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আমরা ঘরের বাইরে তালা লাগিয়ে প্রাণভয়ে আছি। কিন্তু প্রতিপক্ষের লাল্টুর স্ত্রী লোকজন নিয়ে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

নিহতের স্ত্রী জহুরা বেগম বলেন, খুনের বদলা নিতে প্রতিপক্ষরা বাড়িতে এসে স্বামী কুপিয়ে হত্যা করেছে। থানায় মামলা করেছি। ১১দিনেও কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি। পুলিশ বলছে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। হত্যার সঠিক বিচার চাই।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আকিবুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর থেকেই আসামীরা পলাতক রয়েছে। এখনও কোন আসামী আসামী গ্রেফতার হয়নি। গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে নতুন করে কোন ভাংচুর ও হুমকি প্রদানের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। শান্তি রক্ষায় এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

আরো দেখুনঃ