‘ ঘর ভেঙ্গে দেওয়ায় তিন সন্তান নিয়ে খুপড়িতে থাকেন দেবিদ্বারের এক দম্পত্তি

দেবিদ্বার প্রতিনিধি।।
কুমিল্লা দেবিদ্বারে মায়ের প্রাপ্য সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে ভাগিনার পরিবারের উপর অমানবিক অত্যাচার ও তাদের বসতঘর ভেঙ্গে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বসতঘর ভেঙ্গে দেওয়ায়, টিন-পলিথিন দিয়ে একচালা খুপড়ি বানিয়ে থাকছেন এই দম্পত্তি। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পুলিশ ও এলাকার বিভিন্ন মহলে অভিযোগ করেছিলেন বহুবার। প্রতিকার না পেয়ে এখন তিন সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন পার করছেন জালাল-শাহিনুর দম্পত্তি।

সাম্প্রতি সরজমিনে গিয়ে জানা গেছে, বাবার মৃত্যু পর, ৩২ বছর আগে মায়ের সাথে উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে নানার বাড়িতে এসেছিলেন জালাল। নানার বাড়িতে সবার সাথে বেড়ে উঠা তার। এরইমধ্যে বাবার সহায়সম্পত্তি না থাকায় নানার দেওয়া জায়গাতে ঘর উঠান সে। কিছুদিন পর জালালের মা ফরিদা খাতুন নিজে দেখেই পারিবারিক ভাবে বিয়ে করান। তবে অজ্ঞাত কারনে তার এ বিয়ে বেশি দিন টিকেনি। দ্বিতীয় বিয়ে ভেঙ্গে যায় একই ভাবে। মায়ের মৃত্যুর আগে ফের বিয়ে করেছেন । তদের ঘরে জন্ম হয় তিন সন্তান। মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই একের পর এক অভিযোগ এনে তাদেরকে ওই বাড়ি থেকে বের করে দিতে শুরু হয় জালালের মামা নায়েব আলীর অত্যাচার। উচ্ছেদ অত্যাচারের মধ্যে ৯ বছর কাটে এই দম্পত্তির।

ভুক্তভোগী জালাল ও তার স্ত্রী শাহিনুরের সঙ্গে কথা হয়েছে শনিবার দুপুরে। তারা জানায়, বাচ্চাদের নিয়ে আমরা খুবই কষ্টে আছি। কত জনের কাছে গেলাম, কেউ কিছুই করল না আমাদের জন্য। গত সেপ্টেম্বর মাসের ২৮ তারিখ সকালে মামা তার দলবল নিয়ে এসে আমাদেরকে মারধর করে আমাদের ঘর ভেঙ্গে দিয়েছে। উপায়ন্তর না পেয়ে টিন-পলিথিন দিয়ে একচালা খুপড়ি বানিয়ে থাকা লাগছে রোদ-বৃষ্টির মধ্যে।

সুলতানপুর গ্রামের স্থানীয় আনোয়ারসহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নায়েব আলী ঐ গ্রামের একজন প্রভারশালী সালিশদার। এজন্য কেউ কিছু বলতে পরেনা তাকে। জালারের স্ত্রীর সাথে নায়েব আলীর পরিবারের ঝগড়া হয়েছিল। এর পর রাগ করে তার ঘর ভেঙ্গে দিয়েছে। গ্রামের কয়েক জনের মাধ্যমে নায়েব আলী জালালকে কয়েক লক্ষ টাকা দিতে চেয়েছিল, এখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য। সন্তানাদি নিয়ে এমন ছোট্ট একচালাতে থাকা খুবই কষ্টকর।

জালালের মামা নায়েব আলী জানায়, ঘর ভেঙ্গে দেওয়া টা আমার ঠিক হয়নি। আমার বাবার আগে বোন মারা গেছে। সে জায়গা পাবে না। তাদের পারিবারিক কলহের কারনে, এলাকায় আমার মানসম্মান নষ্ট হয়। এজন্য তাদেরকে অন্যত্র জায়গা দেওয়ার ব্যাবস্থা করব বলেছি।

দেবিদ্বার ফতেহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান কামরুজ্জামান মাসুদ মুঠোফোনে, এবিষয়ে এখন পর্যন্ত আমাকে কেউ কিছু জানায়নি।

দেবিদ্বার থানার নবাগত অফিসার ইনর্চাজ নয়ন মিয়া জানায়, আমি নতুন এসেছি দেবিদ্বার থানায়। অভিযোগ দিয়ে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা জানায়, এটাত জমি সংক্রান্ত বিরোধ, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এফআর/অননিউজ

আরো দেখুনঃ