চার বছরেও শেষ হয়নি সেতু নির্মাণ কাজ কোটি টাকার সেতু পাশে রেখে সাঁকো পারাপার

এম এ ইউসুফ আলী, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)।।

খালের দু’পারের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির কথা ভেবেই চার বছর আগে একটি গার্ডার সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও ঠিকাদারের গাফিলতি ও নানা অজুহাতে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পরেছে স্থানীয়রা। তাই বাধ্য সেতুর পাশেই নিজেদের উদ্যোগে সাঁকো নির্মাণ করে ঝূঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার হচ্ছে এলাকার লোকজন। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কাউখালী খালের ওপর পৌনে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটির কাজের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে।

উপজেলা এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কে ব্রীজ নির্মাণ প্রকল্পের (এলবিসি) আওতায় উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কাউখালী খালের উপর ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণ কাজের দরপত্র আহ্বান করে এলজিইডি। যার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪ কোটি ৭৪ লাখ ৪৭ হাজার ১৬৮ টাকা। দর পত্রের মাধ্যমে কিউসি-পিএস-ডিসিএল নামের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালে নির্মাণ কাজ শুরু করেন। এবং ২০২১ সালের ডিসেম্বরে কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও এখনো প্রায় ২৫ শতাংশ কাজ অসমাপ্ত রয়ে গেছে। তবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি নির্ধারিত মূল্যের ৩ কোটি ৩০ লাখ ৮১ হাজার ১৫ টাকা বিল উত্তোলন করেছেন।

স্থানীয় কাউখালী চরের বাসিন্দা হালিমা বেগম (৩৮) বলেন, এই হাক্কা ( সাঁকো) দিয়া রাইত বিয়াল (রাতের বেলা) আইতে যাইতে কষ্ট । পোলাপান রাতে লেহাপড়া কইররা যাইতেও কষ্ট । এ্যাহন যদি মনে করেন এই ব্রীজটা হয় তাহলে মনে করেন আমাগো যাইতে আইতে সুবিধা । এই হাক্কা ভাইঙ্গা পইড়া মানুষের ঠ্যাং (পা) ভাঙছে । ওই দ্যাহেন না হাক্কা ভাঙ্গা একজনের হাতের কন্ডাও ভাইঙ্গা গেছে। রাইতে ল্যাদা গুরাগারা (ছোট বাচ্চা) নিয়া যাইতে আইতে খুবই কষ্ট।একই এলাকার ফোরকান হাওলাদার (৬৫) নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, তিন-চার বছর হয়েছে ব্রীজটার কাজ হয়নি। এখন যদি দ্রুত কাজটা শেষ হয় আমাগো সাধারণ মানুষের লাইগ্গা খুবই উপকার হবে।
কাউখালী ব্রীজ সংলগ্ন বাজারের ব্যবসায়ী বাহাদুর শিকদার (৪০) জানান , প্রায় ৪ বছর আগে এই ব্রীজটির কাজ শুরু হয়েছে । এখনো শেষ হয়নি । আমরা চাই অতি তারাতারি যেন কাজটি সম্পূর্ণ হয় এবং জনসাধারণ যেন এটা ভোগ করতে পারে । আসা যাওয়া করতে পারে । এই ব্রীজটা হলে এখানে ব্যবসায়ীকভাবে সাবলম্বী হবে। প্রতিদিন নতুন মানুষের আনাগোনা হবে। আমাদের ব্যাচা বিক্রিও বাড়বে। তাছাড়া এখন তরমুজের প্রজেক্টের কাজের জন্য সার, ওষুধ, বেকু, উল্কা এগুলো আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে ও ভোগান্তি।

এদিকে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান স্বত্তাধীকারি বাদল সারোয়ারের মুঠোফোনে (০১৬১২১৮৩০৭৭) যোগাযোগের জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে না পাওয়া মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মিজানুল কবির বলেন, এটাতো করোনার কারনে ব্রীজটার কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। তাদেরকে (ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান) আমরা চিঠি দিয়েছি এবং ফোন করেছি । তারা বলছে যে রিসেন্টলি (সাম্প্রতিক সময়) কাজ আরম্ভ করবে।

উল্লেখ্য, উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কাউখালী খালের উপর নির্মাণাধীন এই সেতুটির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আব্দুল মালেক ।

আরো দেখুনঃ