তিন ইউনিয়নের পারাপারের ভরসা বাঁশের সাঁকো

অনলাইন ডেস্ক।।

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের ইছামতী নদীর ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন স্কুলশিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। তিন যুগের বেশি সময় ধরে একটি পাকা সেতুর অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তিন ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ।

শিকারীপাড়া ইউনিয়নের নারায়ণপুর, সুজাপুর, শেরপুর এবং নয়নশ্রী ইউনিয়নের নতুন ও পুরান তুইতাল, বকচর, বরইচড়া, আফজালনগর, চর শৈল্যা, তাশুল্লা, বাংলাবাজার, বিলপল্লী এবং বারুয়াখালী ইউনিয়নের কাউনিয়াকান্দি গ্রামের লোকজন এই সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, তুইতাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বকচর উচ্চবিদ্যালয়, তুইতাল বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও তুইতাল বাজার, মসজিদ, তুইতাল গির্জা, ব্যাংক ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের লোকজনের একমাত্র ভরসা এই বাঁশের সাঁকোটি। প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন ছাত্রছাত্রীসহ পথচারীরা।

তুইতাল এলাকার বাসিন্দা হেমায়েত হোসেন অভিযোগ করে বলেন, “কেউ কথা রাখছে না। জনপ্রতিনিধিরাও প্রতিশ্রুতি দিয়ে বছরের পর বছর পার করে দিচ্ছেন। সাঁকোর ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে কোমলমতি শিশুরা।”

বকচর গ্রামের আব্দুল ওহাব বলেন, “এই সাঁকোর ওপর দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা। খুদে শিক্ষার্থীদের জন্য যেন এটা একটা মরণফাঁদ।”

কাউনিয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা কাজী সালাহউদ্দিন বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকে দেশের অনেক উন্নয়ন হলেও এই নদীর ওপর সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সেতুটি নির্মিত হলে এলাকাবাসীর জন্য যাতায়াত ব্যবস্থাসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন নতুন সুযোগের সৃষ্টি হবে।”

বকচর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সজিব দাস বলেন, “সেতুটি না হওয়ায় তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শত শত শিক্ষার্থী চরম দুর্ভোগের শিকার। বৃষ্টির দিনে বাঁশের সাঁকো ভিজে পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। এতে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ভয়ে বেশ কিছু ছাত্রী নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসে না। বাঁশের সাঁকো পারাপারের ভয়ে অন্য স্কুলে ভর্তি হতে বাধ্য হচ্ছে তারা।”

নয়নশ্রী ইউপি চেয়ারম্যান পলাশ চৌধুরী বলেন, “উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সাঁকোটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে। আশা করছি, শীঘ্রই দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে কাজ শুরু হবে।”

নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. জুলফিকার হক চৌধুরী বলেন, “আমি নতুন এসেছি। তবে, উপর মহলে কথা বলে দ্রুত পাকা সেতু তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

আরো দেখুনঃ