দায়িত্ব গ্রহণ করলেন বিজিবির নতুন ডিজি নাজমুল হাসান
অনলাইন ডেস্ক।।
দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান। রোববার (২৯ জানুয়ারি) ঢাকায় বিজিবি সদরদপ্তরে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। দায়িত্ব গ্রহণের পর তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান বিজিবির বিভিন্ন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ইউনিট প্রধানরা।
গত ১৭ জানুয়ারি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসানকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এর আগে, বিজিবির নতুন মহাপরিচালক নাজমুল হাসান আনসার বাহিনীর মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। প্রেষণে তাকে এ নিয়োগ দিয়ে তার চাকরি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে ন্যস্ত করা হয়েছে।
মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান ১৯৬৯ সালের ২ জানুয়ারি ফরিদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮৬ সালের ১৫ জুলাই ১৮তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদী কোর্সের সঙ্গে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে যোগদান করেন এবং ১৯৮৮ সালে ২৪ জুন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পদাতিক কোরে কমিশন লাভ করেন।
তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর অব সায়েন্স (বিএসসি) ডিগ্রি এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স অব ডিফেন্স স্টাডিজ (এমডিএস) ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি মিরপুরের ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ থেকে ‘আর্মি স্টাফ কোর্স’ এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ থেকে ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স (এনডিসি)’ সম্পন্ন করেন।
মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান স্কুল অফ ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড ট্যাকটিকস এ জেনারেল স্টাফ অফিসার গ্রেড-৩ (প্রশিক্ষণ), একটি কম্পোজিট ব্রিগেডের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডজুট্যান্ট অ্যান্ড কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল এবং আর্মি হেডকোয়ার্টার্সে ডেপুটি প্রভোস্ট মার্শালের দায়িত্ব পালন করেন।
এ ছাড়া তিনি কুমিল্লায় ডাইরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্সে (ডিজিএফআই) কর্নেল জেনারেল স্টাফ, ঢাকায় ডিটাচমেন্ট কমান্ডার এবং ডিজিএফআই সদর দপ্তরে কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯২ এবং ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি রিজিয়নে কাউন্টার ইন্সারজেন্সি অপারেশনের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দুটি পদাতিক ব্যাটালিয়ন, একটি মিলিটারি পুলিশ ইউনিট এবং একটি পদাতিক ব্রিগেডের নেতৃত্ব দেন। এ ছাড়া তিনি ১১ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) এবং বগুড়া এরিয়ার এরিয়া কমান্ডার হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
মেজর জেনারেল নাজমুল হাসান দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পেশাগত প্রশিক্ষণ, সেমিনার ও কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ইন্টারন্যাশনাল ডিফেন্স ম্যানেজমেন্ট কোর্স, মালেশিয়ায় অনুষ্ঠিত পিস কিপিং অপারেশন সেমিনার, চীনে অনুষ্ঠিত চতুর্থ ইন্টার-অ্যাকশন অ্যান্ড কনফিডেন্স বিল্ডিং মেজারস ইন এশিয়া কনফারেন্সে ইন্টেলিজেন্স ব্রিফিংয়ে অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া তিনি থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ‘প্রিভেনশন অব ভায়োলেন্ট এক্সট্রিমিজম’ এবং মালয়েশিয়াতে অনুষ্ঠিত ‘লার্নিং এক্সচেঞ্জ অন প্রিভেন্টিং অ্যান্ড কাউন্টারিং ভায়োলেন্ট এক্সট্রিমিজম’ শীর্ষক আঞ্চলিক কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯৪ সালে বসনিয়া হার্জিগোভিনার বিহাচ পকেট প্লাটুন কমান্ডার এবং ২০১০ সালে সুদানের (দারফুরের) নিয়ালাতে সেক্টর রিজার্ভ কমান্ডিং অফিসার হিসেবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন সফলভাবে সম্পন্ন করেন।
মেজর জেনারেল নাজমুল হাসান বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, শিক্ষা সফর, ভ্রমণ এবং পবিত্র হজ্জব্রত পালন উপলক্ষে বিশ্বের ১৯টি দেশ ভ্রমণ করেছেন। তিনি একজন ভালো বাস্কেটবল, ভলিবল, টেনিস এবং ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়া গলফ খেলার প্রতি তার প্রবল আগ্রহ রয়েছে।
তার সহধর্মিণী হলেন মনোয়ারা বেগম। তিনি এক কন্যাসন্তানের জনক।