নড়াইলের বড়কুলা গ্রামে উঠতি সন্ত্রাসীদের ভীতিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় জিম্মি

নড়াইল প্রতিনিধি

নড়াইল সদর উপজেলার শিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নে বড়কুলা গ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ এলাকার উঠতি সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। মাঝে মধ্যে এই এলাকায় গরু, ছাগল,হাস, মুরগী এমনকি বাড়িঘরে হামলা দিয়ে লুটপাট চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে একটি ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।

এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে সুভারঘোপ গ্রামের এনামুল মোল্যা(৩৫), রহমত আলী(৩২), আলীম মিয়াসহ(৩৩) একটি চক্র বড়কুলা এলাকায় সংখ্যালঘু স¤প্রদায় মানুষের বাড়িতে হানা দিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সর্বস্ব লুট করছে। এ ঘটনায় পারুল সমাজপতি নামে এক মহিলা সদর থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে গোবরা এলাকা থেকে এনামুল মোল্যাকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।

মামলার বাদী পারুল সমাজপতি বলেন, ‘২ ফেব্রুয়ারি রাতে সন্ত্রাসীরা আমার ঘরের পেছনে মাটির ডোয়া কেটে ঘরে প্রবেশ করে। স্বামী অমরেন্দ্র সমাজপতি বাধা দিলে তাকে কুপিয়ে জখম করে। মাথায় বেশ কয়েকটি কোপ দিলে গুরুতর আহত অবস্থা তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন,আমরা ভীত সন্তস্ত্র অবস্থায় আছি। ১৫ ফেব্রুয়ারিতে থানায় মামলা করেছি।’

বড়কুলা গ্রামের শেফালি মন্ডল বলেন, ‘কিছুদিন আগে ইন্দ্র সিকদারের বাড়ির গ্রীল কেটে সব কিছু লুট করে। ভয়ে আমরা কিছু বলতে পারিনা।’

ববিতা সমাজপতি বলেন,‘ এরা হাস,মুরগী,গরু, ছাগল লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। কিছুই বলার কায়দা নেই। চিন্ময় বিশ্বাস বলেন,এই সন্ত্রাসি চক্রের হাতে আমরা জিম্মি হয়ে পড়েছি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,আমাদের রক্ষা করার কেউ কি নেই?

সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘এদের কাছে হিন্দু স¤প্রদায়ের মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে একটি মামলা হয়েছে। একজনকে পুলিশ আটকও করেছে। কিন্তু ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটকের জোর দাবি জানাই।’

মির্জাপুর পুলিশ ফাড়ির কর্মকর্তা এস,এম রেজাউল করিম বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে যাই। গ্রামের অমরেন্দ্র সমাজপতির ঘরের পেছন থেকে মাটি মাখানো একটি চাপাতি ও একটি বাটনফোন উদ্ধার করি। এনামুলকে গোবরা বাজার থেকে আটক করা হয়। তিনি বলেন, ৮/১০ জনের এক গ্রুপ এই ধরণের কাজ করে যাচ্ছে। এনামুল মাদকসহ নারী পাচারের সঙ্গে জড়িত। এদের বিরুদ্ধে থানায়ও মামলা রয়েছে। উদ্ধারকৃত ফোনটি রহমত আলীর।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহামুদুর রহমান বলেন, ‘বড়কুলা ঘটনার সঙ্গে জড়িত যখন একজনকে আটক করা হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি এই চক্রের সকল সদস্যকে আটক করা হবে। যত বড়ই মাস্তান কিংবা নেতা হোক না কেন কেউই আইনের বাইরে নয়।’

আরো দেখুনঃ