নড়াইলের লোহাগড়ায় ৮মাসের সন্তানকে গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতন, মাদকসক্ত পিতা গ্রেফতার

আবদুস সাত্তার, নড়াইল

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর ৮ মাসের শিশু সন্তানকে গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতন চালিয়েছে মাদকাসক্ত পিতা। এঘটনায় নির্যাতিত শিশুর মা কুলসুম বেগম বাদী হয়ে শিশুটির পিতা মামুন শেখ ও সৎ মা মাফুজা আক্তারকে আসামী করে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

এদিকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়লে এবং থানায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ শিশুটির পিতা মামুন শেখকে গ্রেফতার করেছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে , গত ১৩ বছর আগে লোহাগড়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের দাউদ শেখের ছেলে মামুন শেখের সাথে পার্শ্ববর্তী মোহাম্মদপুর উপজেলার কালিশংকরপুর গ্রামের আফিল মোল্যার মেয়ে কুলসুম বেগমের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে দুইটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।

মামুন শেখ মাফুজা আক্তার নামে একজন মহিলার সাথে প্রেজম সম্পর্কে জড়িড়য়ে পড়ে এবং দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর থেকে প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে দুরত্ব বাড়তে থাকে মামুনের। প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের কোন খোঁজ খবর ও ভরণপোষণ প্রায় বন্ধ করে দেয় স্বামী মামুন। ভরণপোষণের দাবি করায় প্রায় বাকবিতন্ততা এবং শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয় প্রথম স্ত্রী কুলসুমের।
প্রথম স্ত্রী কুলসুম অভিযোগ করেন, ২৭ ফেব্রæয়ারী যৌতুকের জন্য তার স্বামী মামুন বাঁশের লাঠি দিয়ে মারপিট করে এবং গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় মামুনের দ্বিতীয স্ত্রী মাফুজা আক্তারও কুলসুমের চুলের মুঠি ধরে মারপিট করে পালিয়ে যায়।

দ্বিতীয় স্ত্রী চলে যাওয়ায় রাগান্বিত হয়ে মামুন শেখ বিকালে দুধের শিশু বাচ্চা আল হাবিবকে( বয়স ৮ মাস) নিয়ে বাড়ী পাশের আম গাছের ডালের সাথে পা উপর দিকে দিয়ে ঝুলিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। এসময় লাঠি দিয়ে শিশুকে নির্যাতনের দৃশ্য ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়। শিশুটির অমানবিক নির্যাতনের দৃশ্য দেখে কুলসুমের শাশুড়ী ও প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে শিশুটিকে রক্ষা করে।

লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, নির্যাতিত নারী বাদি হয়ে শিশু ও নারী নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত মামুনকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার মোসাঃ সাদিরা খাতুন বলেন,‘ আমরা বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তাৎক্ষণিকভাবে শিশুটির পিতা মামুন শেখকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর জানতে পারলাম, মানুষ একজন মাদকাসক্ত। একজন পিতা পিতা কিভাবে এ ধরনের নারকিয় জঘন্যতম ঘটনা করতে পারে বোধগম্য নয়। আসামী মামুন শেখকে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্য আসামীকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

আরো দেখুনঃ