নড়াইলে দুই সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টা। হাসপাতালে ভর্তি

নড়াইল প্রতিনিধি

স্বামীর দ্বিতীয় দিয়ের পর নির্যাতন ও ভরণপোষণ না দেয়ায় নড়াইলে দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন এক হতভাগা মা ! আশংকাজনক অবস্থায় তিনজনকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত মা ও এক সন্তানের জ্ঞান ফেরেনি।

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে নড়াইল পৌর এলাকার ভওয়াখালীতে এ ঘটনা ঘটে । ঘটনার পর থেকে স্বামী মিঠু শেখ তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে পলাতক রয়েছে।

প্রতিবেশিরা জানান, নড়াইল পৌরসভার ভওয়াখালী এলাকার ভাড়াটিয়া মিঠু শেখ সম্প্রতি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর থেকে তার স্ত্রী শিউলি বেগমের (৩২) তেমন খোঁজখবর রাখেন না। দ্বিতীয় বিয়ে করায় প্রথম স্ত্রী শিউলি ও তার দুই সন্তানের ভরণপোষণ দিচ্ছিলেন না। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো। সামান্য কিছু হলেই প্রথম স্ত্রীর ওপর নেমে আসতো অমানবিক নির্যাতন।

বুধবার সকালে মিঠু তার স্ত্রী শিউলিকে বেদম মারধর করেন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মনের কষ্টে দুই সন্তানসহ মা শিউলি বেগম বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। প্রথমে দুই সন্তানকে জুসের মধ্যে বিষপান করিয়ে পরে নিজে বিষপান করেন। মিঠুর গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলায়। তিনি নড়াইল শহরে হোটেলে কাজ করেন। আর স্ত্রী শিউলির বাবার বাড়ি নরসিংদি জেলায়। এ ঘটনার পর দ্বিতীয় স্ত্রীসহ মিঠু পলাতক রয়েছে।

ভাড়াটিয়া প্রতিবেশিরা আরো জানান, ভওয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী শিশু সন্তান রাব্বিকে (৭) স্কুল থেকে ডেকে এনে মা শিউলি বেগম তাকে এবং ছোট বোন ইলমাকে (৪) জুসের সঙ্গে বিষপান করান। আশংকজনক অবস্থায় প্রতিবেশিরা তাদের উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এর মধ্যে বুধবার বিকেল পর্যন্ত ছেলে রাব্বির জ্ঞান ফিরলেও বোন ইলমা ও মায়ের জ্ঞান ফেরেনি।

প্রতিবেশিসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ জানান, কোনো কারণ ছাড়া প্রায়ই স্ত্রী শিউলিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায় স্বামী মিঠু শেখ। এছাড়া সন্তানদের দেখভালসহ সংসারের ভরণপোষণও দিতে চায় না। এমন অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় মিঠুর যথাযথ শাস্তি দাবি করেন প্রতিবেশিরা।

শিউলির শাশুড়ী জানান, তার ছেলে ও বৌমা ঢাকায় থাকতেন। চার বছর আগে নড়াইলে চলে এসেছেন। ছেলে দ্বিতীয় বিয়ে করার পর নাতি-নাতনি ও বৌমা তার কাছেই থাকতেন। এর মধ্যে এমন একটা ঘটনায় মেনে নিতে পারছেন না।

এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

আরো দেখুনঃ