নুরুন্নাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসির প্রবেশপত্র আটকে ৮০০ টাকা নিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক
মুরাদনগর প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার মুরাদনগর নুরুন্নাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দা হাছিনা আক্তারের বিরুদ্ধে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র আটকে রেখে কেন্দ্র ফির নামে মাত্রাতিরিক্ত অর্থ আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে প্রধান শিক্ষক সৈয়দা হাছিনা আক্তারের দাবি, ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক টাকা নেওয়া হচ্ছে। প্রধান শিক্ষকের এমন অযৌতিক দাবি অস্বীকার করেছেন কমিটির সদস্যরা।
এ দিকে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, ফরম পূরণের সময়ই প্রবেশপত্রের ফি নেওয়া হয়েছে। প্রবেশপত্রের নামে নতুন করে ফি নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। এ বিষয়ে সুস্পষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আগামী ১৫ ফেব্রæয়ারি সারা দেশে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হবে। সূত্র জানায়, মুরাদনগর নুরুন্নাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার সর্বমোট ২৫৮ জন পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। প্রবেশপত্র আটকে রেখে মাত্রাতিরিক্ত ফি নেওয়ায় পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। গত রবি, সোম ও মঙ্গলবার স্কুল চত্বরে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা ফরম পূরণের সময় পুরো টাকা দিয়েছি। তবুও প্রধান শিক্ষক সৈয়দা হাসিনা আক্তার আমাদের মেয়েদের প্রবেশপত্র আটকে রেখে তাদের কাছ থেকে ৮০০ টাকা করে নিচ্ছেন। আমরা এর প্রতিকার চাই। বাইজিদ নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার ছোট বোন পরীক্ষা দিবে। আমি প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রবেশপত্র নিতে গেলে তিনি ৮০০ টাকা চেয়েছেন, বলেছেন, ১০ টাকাও কম হবে না।’
ফরম পূরণের পর প্রবেশপত্র জিম্মি করে টাকা আদায় বিধিসম্মত কি না, ‘এমন প্রশ্নে প্রধান শিক্ষক সৈয়দা হাসিনা আক্তার বলেন, ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তের বাইরে আমি যাওয়ার সুযোগ নেই।’
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক প্রতিনিধি আক্তার হোসেন মেম্বার বলেন, প্রবেশপত্রের জন্য ফি নিয়ে থাকার বিষয়টি আমার জানা নেই। ম্যানেজিং কমিটির সভায় এ ধরণের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। অপর সদস্য আবিদ আলী বলেন, আমি মিটিংয়ে ছিলাম না। আরো দু’জন অভিভাবক সদস্য মোহাম্মদ আলী ও আক্তার হোসেন ভুইয়া বলেন, তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
কুমিল্লা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রবেশপত্র আটকে টাকা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি উপজেলায় পাঠানো হয়েছে। ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ‘প্রবেশপত্র সংগ্রহের সময় টাকা নেওয়ার বিষয়টি অনৈতিক। আমার কাছেও এ বিষয়ে একাধিক অভিযোগ এসেছে। লিখিত অভিযোগ পাইনি। পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন আক্তার নিপা বলেন, আমি বিষয়টি দেখতেছি।
উল্লেখ্য, প্রধান শিক্ষক সৈয়দা হাসিনা আক্তারের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, বিভিন্ন প্রকার দূর্নীতি, আর্থিক অনিয়ম এবং নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
এফআর/অননিউজ