পঞ্চগড়ে অবৈধ উপায়ে চা অপসারনের দায়ে চা কারখানার অনুমোদন ও নিবন্ধন স্থগিত

ডিজার হোসেন বাদশা, পঞ্চগড় প্রতিনিধি:

অবৈধ উপায়ে চা অপসারনের দায়ে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় পপুলার টি ফ্যাক্টরী নামে একটি চা কারখানার চা প্রক্রিয়াকরনের অনুমোদন ও নিবন্ধন স্থগিত করেছে বাংলাদেশ চা বোর্ড।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চা বোর্ডের উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা) (ভারপ্রাপ্ত) সুমন সিকদার সাক্ষরিত একটি চিঠিতে এই আদেশ জারি করা হয়।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, চা আইন -২০১৬ এর ধারা ২০ লঙ্ঘনের অপরাধে কারখানাটির চা প্রক্রিয়াকরণের অনুমোদন ও নিবন্ধন স্থগিত করা হয়েছে। পরে স্থগিতাদেশটি বাংলাদেশ চা বোর্ডের ওয়েবসাইটে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেম ফেসবুকের ভ্যারিফাইট পেজে আপলোড করা হয়েছে। তবে কারাখানার অনুমোদন ও নিবন্ধন স্থগিতের বিষয়ে কোন চিঠি পায়নি বলে জানিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।

আরো জানা যায়, দেবীগঞ্জ উপজেলার দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের তালতলা সরকার পাড়া এলাকায় অবস্থিত পপুলার টি ফ্যাক্টরী নামের ওই কারখানাটি গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর বেলা ১১ টায় চা বোর্ডের ‘ক’ ফরম জাল কপি ব্যবহার করে ১৩ হাজার কেজি চা অবৈধ উপায়ে কারখানা থেকে অপসারণ করছিল। অর্থাৎ নিলামকেন্দ্র ব্যতিরেকে অবৈধ উপায়ে চা বোর্ডের ‘ক’ ফরমটি নকল ফরম পূরণ করে পপুলার টি ফ্যাক্টরি চট্টগ্রাম নিলাম কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তা দেশের অন্যত্র অবৈধ উপায়ে বিক্রি করার চেষ্টা করেছিল। এমন সংবাদের ভিত্তিতে দেবীগঞ্জ পৌরসভার পাটোয়ারী পাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা পঞ্চগড় কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ। পরে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা মেলায় তৈরী চা গুলো জব্দ করে চা কারখানাটিকে চায়ের ভ্যাট সহ মোট ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। একই সাথে জব্দকৃত তৈরী চা গুলো পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের মনিরামজোত এলাকায় জেমজুট নামে একটি কারখানার ভেতরে কর্তৃপক্ষের জিম্মায় রাখা হয়। এ ঘটনায় চা কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে কারখানাটি ফরম “ক” এর জাল কপি ব্যবহার করে অবৈধভাবে চা অপসারণ করছিল মর্মে সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় চা আইন ২০১৬ এর ২০ ধারা মোতাবেক কারখানাটির অনুমোদক ও নিবন্ধন স্থগিত করে বাংলাদেশ চা বোর্ড। একই সাথে কারখানাটি বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশনা চিঠিতে দেয়া হয়েছে।

পপুলার টি ফ্যাক্টরীর ম্যানেজার মিজানুর রহমান বলেন, আমরা ইতিমধ্যে চা বোর্ডের একটি চিঠি পেয়েছি। কিন্তু সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে। কোন হার্ড কপি পাইনি। তবে সেদিনের জন্য তো আমরা ভ্যাট সহ অনেক টাকা জরিমানা দিয়েছি। ক্ষমা প্রার্থনা করেছি। আপাতত চলতি মৌসুমে দুই মাসের জন্য চা প্রক্রিয়াজাতকরণ বন্ধ আছে। কিন্তু চা বোর্ড যদি কারখানাটি স্থায়ী বন্ধ করে দেয় তাহলে চা শ্রমিক সহ ৬০-৭০ জন মানুষের কি হবে।

পঞ্চগড় চা বোর্ডের আঞ্চলিক কার্যালয়ের উন্নয়ন কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফ খান বলেন, চা বোর্ডের ‘ক’ ফরম জালিয়াতি করে অবৈধ উপায়ে তৈরী চা পরিবহনের সময় ১৩ হাজার কেজি তৈরী চা জব্দ করা হয়। পরে চা বোর্ডের আইন লঙ্ঘনের দায়ে কারখানাটির অনুমোদন ও নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। এ ব্যাপারে চা বোর্ড পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করবে।

আরো দেখুনঃ