বাঙ্গরায় মসজিদের মুসল্লিকে কুপিয়ে হত্যা, আহত ১১, আটক ১

সাজ্জাদ হোসেন, মুরাদনগর প্রতিনিধি।।

মসজিদে সানি আজান দেওয়াকে কেন্দ্র করে হানিফ খান (৪৩) নামের এক মুসল্লিকে কুপিয়ে হত্যা ও ১১ জনকে আহত করা হয়েছে। শুক্রবার কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন কুড়াখাল বাইতুন নূর কেন্দ্রিয় জামে মসজিদে জুমার নামাজ চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ শাহীন ভুইয়া নামের একজনকে আটক করেছে।

মসজিদের মুসল্লিসহ এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুড়াখাল কেন্দ্রিয় জামে মসজিদটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইমামের সামনে সানি আজান দেওয়া হয়। গত শুক্রবার মসজিদের দরজায় সানি আজান দেওয়াকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ চলে আসছিল। গতকাল শুক্রবারও দরজায় সানি আজান দিতে গেলে প্রতিবাদ করেন মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি হাবিব খান। তিনি মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুল মালেকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া মাত্রই পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা একদল লোক ধারালো ছুরি, রামদা, লোহার রড, টেটা বল্লম, লাঠিসোটা নিয়ে নিরীহ মুসল্লিদের উপর অতর্কিতে হামলা চালায়। হামলায় বারান্দাসহ মসজিদ রক্তাক্ত জখম হয়ে ১২ জন আহত হয়। আহতদের মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কবর্তব্যরত ডাক্তার হানিফ খানকে (৪৩) মৃত ঘোষণা করেন। সে ওই গ্রামের আবদু খানের ছেলে। এ সময় গুরতর আহত ইমন খান (২৫) ও খায়ের সরকারকে (৪০) উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

মসজিদের মুসল্লিরা জানায়, দরজায় সানি আজান দেওয়া নিয়ে মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি হাবিব খান প্রতিবাদ করার সাথে সাথেই সভাপতি আব্দুল মালেক, ডিজে কালাম, শাহীন ভুইয়া, এলেম খান, রাজিব মিয়া, আমির হোসেন, কামাল খান ও ফরিদ মিয়ার নেতৃত্বে মসজিদের ইমাম কামরুজ্জামানের ইন্ধনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। তারা এতিমখানার কমিটি নিয়েও ষড়যন্ত্র করছে। মসজিদ ও এতিমখানা কমিটির দ্বন্দের জের ধরেই পরিকল্পিত ভাবেই ঠান্ডা মাথায় এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, মসজিদসহ কুড়াখাল শাহসুফি সৈয়দ দাইম উল্লাহ হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার কমিটি নিয়ে ওই চক্রটি দ্বন্দ লাগিয়ে রেখেছে। যার ফলে তারা মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদেরকেও মারধর করেছে। এই চক্রটি এহেন প্রভাব খাটিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে। এমন কর্মকান্ডে তীব্র নিন্দা ও দু:খ প্রকাশ করেছেন মুরাদনগর উপজেলা কওমী মাদরাসা সংগঠনের সভাপতি মুফতি দ্বীন মোহাম্মদ আশরাফ ও উপজেলা বে-সরকারি এতিমখানা কল্যান পরিষদের সভাপতি হাফেজ বাশারিত ভুইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক কাজী মোহাম্মদ লোকমান। তারা উক্ত ঘটনায় জড়িতদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতারপূর্বক আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। নিহত হানিফ খানের মা, স্ত্রী ও ৪ শিশু সন্তান রয়েছে। পুত্রের মৃত্যুর খবর পেয়েই বার বার মূর্চা যাচ্ছেন বৃদ্ধ মা আয়শা খাতুন। স্ত্রী আফরোজা বেগমের আহাজারিতে এলাকার আকাশ বাতাস ভারি হয়ে ওঠেছে। প্রতিবেশী কেউ তাদের কান্না থামাতে পারছে না।

বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, জুমার নামাজের সানি আজান মসজিদের ভিতরে ও বাহিরে দেয়া নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে। এ ঘটনায় জড়িত শাহীন ভুইয়া নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। উক্ত বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24।।

আরো দেখুনঃ