মাঘের হঠাৎ বৃষ্টিতে পেয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪টাকা
হিলি প্রতিনিধি।।
মাঘ মাসে হঠাৎ বৃষ্টিপাতের কারনে বাজারে দেশীয় পেয়াজের সররবাহ কমায় চাহীদা বেড়েছে আমদানিকৃত পেয়াজের। অপরদিকে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে চাহীদার তুলনায় আমদানি কমায় পেয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। মাত্র দুদিনের ব্যবধানে পেয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪টাকা করে। একইভাবে দুদিনের ব্যবধানে বাজারে দেশীয় পেয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩টাকা করে। এদিকে হঠাৎ করে আবারো পেয়াজের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন নিন্ম আয়ের মানুষজন, সেই সাথে বিপাকে পড়েছেন বন্দরে পেয়াজ কিনতে আসা পাইকারগন।
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে ইন্দোর ও নাসিক জাতের পেয়াজ আমদানি হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার বন্দরে যে ইন্দোর জাতের পেয়াজ বিক্রি হয়েছিল ১৮ থেকে ১৯ টাকা সেই একই পেয়াজ বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২২ থেকে ২৩টাকা কেজি দরে। এছাড়া নাসিক জাতের পেয়াজ ৩৫ থেকে ২৬ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ৩৮ থেকে ৩৯টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে হিলির কাচাবাজারের দোকানগুলোত ভারতীয় পেয়াজ নেই সব দোকানেই দেশীয় পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে তবে দাম একটু বেশী। দুদিন আগে যে পেয়াজ বিক্রি হয়েছিল ২২ থেকে ২৩ টাকা কেজি দরে সেই পেয়াজ বিক্রি এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ২৬টাকা কেজি দরে।
হিলি বাজারে পেয়াজ কিনতে আসা সাদ্দাম হোসেন বলেন, তেল চালসহ সব জিনিসের দাম বৃদ্ধি যার কারনে আমাদের সংসারের ব্যায়ভার মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এর উপর আবারো পেয়াজের দাম বাড়ছে গত দুদিন আগে যে পেয়াজ ২২টাকা কেজি দরে ক্রয় করে নিয়ে গেলাম আজ সেই পেয়াজ কিনতে এসে দেখি দাম ২৫ থেকে ২৬টাকা। এতে করে আমাদের মতো সাধারন মানুষদের বেশ সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। পেয়াজের দাম যদি কমে তাহলে আমাদের জন্য ভালো হয়।
হিলি বাজারের পেয়াজ বিক্রেতা শাকিল খান বলেন, বাজারে দেশীয় পেয়াজের দাম কম হওয়ার কারনে ক্রেতারা ভারতীয় পেয়াজ না ক্রয় করে সকলেই দেশীয় পেয়াজ ক্রয় করায় আমরা দেশীয় পেয়াজ বিক্রি করছি। চাহীদা না থাকার কারনে কোন দোকানেই ভারতীয় পেয়াজ নেই। তবে মাঘ মাসে হঠাৎ করে বৃষ্টিপাত হওয়ার কারনে দেশীয় বিভিন্ন অঞ্চলে যেখানে পেয়াজ আবাদ হয়েছে সেসব অঞ্চলে ক্ষেত থেকে পেয়াজ উঠাতে পারেনি কৃষকরা যার কারনে বাজারে পেয়াজের সরবরাহ খানিকটা কম রয়েছে। এতে করে পেয়াজের দাম কেজি প্রতি ৩টাকা করে বেড়েছে। তবে আবহাওয়া ভালো হলে ক্ষেত থেকে পেয়াজ উঠানো শুরু হলে বাজারে পেয়াজের সরবরাহ যেমন বাড়বে তেমনি পেয়াজের দাম কমে আসবে বলেও জানান তিনি।
হিলি স্থলবন্দরের পেয়াজ ব্যবসায়ী স্বপন মুন্সি বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পর্যাপ্ত পরিমানে দেশীয় পেয়াজ আবাদ হওয়ায় বাজারে যেমন দেশীয় পেয়াজের সরবরাহ বেশী রয়েছে তেমনি দাম কম থাকায় বাজারে ভারতীয় পেয়াজের চাহীদা কমেছে। যার কারনে ভারত থেকে পেয়াজ আমদানি করে লোকশান গুনতে হওয়ায় পেয়াজের আমদানি কমিয়েছেন বন্দরের আমদানিকারকরা। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার বৃষ্টিপাত হওয়ার কারনে দেশের বিভিন্ন দেশীয় পেয়াজের মোকামগুলোতে পেয়াজের সররবাহ খানিকটা কমায় দাম কিছুটা বেড়েছে।যার কারনে দেশের বাজারে আমদানিকৃত ভারতীয় পেয়াজের চাহীদা আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। মুলত চাহীদার তুলনায় বন্দর দিয়ে পেয়াজের আমদানি কম ও সরবরাহ কমের কারনেই পেয়াজের দাম কিছুটা বাড়ছে।তবে সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে আসলে দাম আবারো কমে আসবে বলেও জানান তিনি।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেয়াজের আমদানি অব্যাহত থাকলেও আমদানির পরিমান কিছুটা কমেছে। বন্দর দিয়ে বৃহস্পতিবার যেখানে ১০ট্রাকে ২৬৮টন পেয়াজ আমদানি হয়েছিল সেখানে শনিবার বন্দর দিয়ে ৩টি ট্রাকে ৮৩টন পেয়াজ আমদানি হয়েছে।