‘মৃত’ ঘোষণার পর জীবিত হয়ে অবশেষে মারা গেলেন এডভোকেট সুধাংশু সাহা

মো. সাজ্জাদ হোসেন, মুরাদনগর

ঢাকার একটি শীর্ষ হসপিটাল থেকে মৃত ঘোষণা করার ২৪ ঘন্টা পর জীবিত হয়েও অবশেষে ৭২ ঘন্টার মধ্যেই মারা গেলেন এডভোকেট সুধাংশু রঞ্জন সাহা (৭৬)। তিনি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার শ্রীকাইল ইউনিয়নের চন্দনাইল গ্রামের কৃতি সন্তান ও একজন আয়কর আইনজীবী এবং চন্দনাইল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা।

এলাকায় গিয়ে জানা যায়, এডভোকেট সুধাংশু রঞ্জণ সাহার মুত্যু সংবাদ গত মঙ্গলবার প্রথমে শোনার পর এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছিল। চন্দনাইল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বুধবার দুপুর দুইটায় শেষ শ্রদ্ধা জানাতে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়। এ ছাড়াও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের পক্ষ থেকে ‘শোকাহত’ জানিয়ে ব্যানার লাগানো হয়েছিল। চন্দনাইল বাজার কমিটির পক্ষ থেকেও এডভোকেট সুধাংশু রঞ্জণ সাহার মৃত্যুতে সমবেদনা জানানো ব্যানার বাজারে ঝুলতে দেখা যায়। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজনের আইডি থেকে এখনো শোক জানিয়ে পোস্ট করা হয়।

বিস্বস্ত সূত্রে জানা যায়, গত ২১ মার্চ মঙ্গলবার হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এডভোকেট সুধাংশু রঞ্জণ সাহাকে ‘ক্লিনিক্যাল ডেট’ ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এলাকার মাইকেও মৃত্যু সংবাদ ঘোষণা করা হয়। শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতিও নেওয়া হয়। কিন্তু ২২ মার্চ বুধবার সকালে ঢাকার হসপিটাল থেকে এলাকায় ‘মরদেহ’ আনার সময় ‘মৃত’ ব্যক্তির শরীর নড়ে ওঠে এবং শ্বাস প্রশ্বাস আছে বলে লক্ষ করা যায়। তখনই দ্রæত আগের হসপিটালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। বুধবার দুপুরেই ঢাকার সেই প্রসিদ্ধ নামকরা হসপিটালের ইমার্জেন্সি বিভাগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন তিনি মৃত নন, এখনো হার্টবিট সচল আছে। তাই তাকে দ্রæত পুনরায় ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রেখে চিকিৎসা চালানো হয়। অবশেষে ২৪ মার্চ শুক্রবার রাত ১১টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন বলে দ্বিতীয় বার মৃত ঘোষণা করা হয়।

চন্দনাইল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, এডভোকেট সুধাংশু রঞ্জণ সাহার শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য গত বুধবার বিকেলে চন্দনাইল শ্মশানে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিল। বিভিন্ন স্থান থেকে ব্রাহ্মণ নিয়ে আসা হয়। ঢাকা থেকে বাড়িতে আসার পথে আড়াই হাজার ফেরিঘাট এলাকায় পৌঁছার পর ‘জীবিত’ হয়ে উঠলে পুনরায় হসপিটালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। ফলে পূর্ব নির্ধারিত চন্দনাইল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও শ্মশানের শেষকৃত্য কর্মসূচি বাতিল করা হয়। অবশেষে শুক্রবার রাতে তিনি ঢাকা এভারকেয়ার হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে শনিবার তার মরদেহ এলাকায় আনা হয়। দুপুরে তাঁর প্রতিষ্ঠিত চন্দনাইল হাইস্কুল মাঠে তাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বিকেলে চন্দনাইল শ্মশানে দাহ করা হয়।

আরো দেখুনঃ