রাজহাসঁ কথন

সাইফুল ইসলাম।।

রাজহাঁস বা রাজহংস (Anseriformes) (আন্সারিফর্মিস) বর্গের অ্যানাটিডি গোত্রের বৃহত্তম একদল সদস্য। সাধারণত তিনটি গণের সদস্যদের রাজহাঁস বলে অভিহিত করা হয়। এরা সাধারণ হাঁসের মত শব্দ করেনা, মানুষকে তাড়া করতে দেখা যায় ও দল বেধে চলা ফেরা করে। রাজহাঁস দম্পতি সাধারণত সারাজীবনের জন্য জোট বাঁধে, তবে কখনো কখনো প্রজনন অক্ষমতার বা বাসা বাঁধতে ব্যর্থতার কারণে এদের বিচ্ছেদও ঘটতে পারে। এরা এক এক বারে তিন থেকে আটটি ডিম পাড়ে।

রাজহাঁস পালন করেও বাড়তি আয় করা সম্ভব। সাথে আছে নানারকম সুবিধা। যেমন- রাজহাঁসের মাংস ও ডিম দুই-ই সুস্বাদু। রাজহাঁসের পালক দিয়ে তোষক, বালিশ, তাকিয়া, কুশন ও হেলান দেয়ার নরম জিনিসপত্র তৈরি করা যায়। ডিম ও রাজহাঁস বিক্রি করে বাড়তি আয়ও করা যাবে। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন পাখিও এ রাজহাঁস। পোকামাকড় খেয়ে এরা জায়গাজমি ও বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখে।

বিভিন্ন প্রজাতির রাজহাঁসের মধ্যে টুলুজ জাতের রাজহাঁসের গলা, পেট ও লেজ সাদা হয়। পুরুষ রাজহাঁসের ওজন ১৪ কেজি এবং স্ত্রী রাজহাঁসের ওজন ৯ কেজি হয়ে থাকে। এ মডেলের রাজহাঁসের পা ধবধবে সাদা পালকে ভরা। চীনা রাজহাঁসের গায়ের রং ধবধবে সাদা হয়ে থাকে। পুরুষ রাজহাঁসের ওজন ৯ কেজি এবং স্ত্রী হাঁসের ওজন ৮ কেজি পর্যন্ত হয়।

রাজহাঁসের ডিম পাড়ার সময় সাধারণত ফাল্গুন-চৈত্রে। প্রথম বছরের তুলনায় ৩য় ও ২য় বছরে এরা বেশি ডিম দেয় এবং ডিমের আকার বড় হয়। রাজহাঁসের ডিমের ওজন ১৪৪ থেকে ১৫০ গ্রাম হয়ে থাকে, যা সাধারণ হাঁস ও মুরগির ডিম থেকে প্রায় ৩ গুণ বেশি ওজনের। ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার পর ১০ সপ্তাহ বয়স থেকেই রাজহাঁসের ওজন ৬ থেকে ৮ কেজি পর্যন্ত হয়।

এ হাঁসের বাসস্থানে খোলামেলা ও মুক্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। ঘরের মেঝে পাকা বা কাঁচা হলেও চলে। ঘরের চারদিক দিয়ে মোটা তারের জাল দিয়ে ঘিরে দিতে হয়। তবে ঘরের ভেতর যাতে স্যাঁতসেতে না হতে পারে সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হয়। প্রতিটি হাঁসের জন্য কম করে হলেও ৪ বর্গমিটার জায়গা রাখতে হবে। পানির পাত্র ও খাবার পাত্র আলাদা আলাদা রাখতে হয়। ডিম পাড়ার জন্য প্রতি তিনটি স্ত্রী হাঁসের জন্য ৫০ বর্গ সেন্টিমিটার সাইজের ডিম পাড়ার বাক্স প্রয়োজন।

আরো দেখুনঃ