সাজেকে আটকে পড়া পর্যটকরা ফিরছে , পাহাড়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি।।
প্রায় চারদিন আটকা থাকার পর নিরাপদে সাজেক থেকে ফিরছেন পর্যটকরা। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টার দিকে সাজেক থেকে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে পর্যটকবাহী গাড়িগুলো ।পর্যটকেরা নিজ নিজ গন্তব্যের চলে যাচ্ছে। তাই পর্যটকদের মনে স্বস্তি ফিরেছে।
পার্বত্য যানবাহন সমিতির লাইনম্যান বেরণ চাকমা বলেছেন, পর্যটকদের গাড়ি সাজেক থেকে খাগড়াছড়িতে পৌঁছে গেছে। তবে ৭২ ঘন্টা ধরে সাজেকে পার্বত্য যানবাহন সমিতি ও খাগড়াছড়ি জীপ সমিতি মিলে ৬০ টি চান্দের গাড়ি আটকে ছিল।
সিলেট থেকে সাজেক উদ্দেশ্য আসা পর্যটক সোহেল বলেছেন, আমরা ৯ জনের একটি টিম আসছিলাম সাজেক দেখতে। এখানে আসার পর চলমান পরিস্থিতি কারণে আটকা পরে যায়। আজ সকালে সেনাবাহিনী সহযোগিতায় খাগড়াছড়ি পৌঁছেছি, একটু পরে সিলেট উদ্দেশ্য চলে যাবো।
পর্যটক নয়ন বলেছেন, ৩ দিন ছিলাম সাজেকে আটকে আজকে বাড়ি ফিরেছি সে আনন্দ, অনুভূতি কি ভাবে বুঝাবো আপনাকে বুঝতে পারছি না।
৭২ ঘণ্টা অবরোধের কারণে শনিবার থেকে সাজেকে আটকা ছিলেন প্রায় দেড় হাজার পর্যটক।
খাগড়াছড়ি সড়ক পরিবহন চালক সমবায় সমিতির সদস্য মিন্টু কুমার দত্ত বলেছেন, ৭২ ঘণ্টা অবরোধ পরে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে সড়কে গাড়ি চলাচল করছে। যাত্রী ও মালামাল নিয়ে গ্রাম থেকে শহরে যাচ্ছে গাড়ি গুলো।
এদিকে পার্বত্য অঞ্চলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। মানুষেরা নিজ কর্মস্থলে নির্ভিগ্নে ছুটে যাচ্ছে। খাগড়াছড়ি বাজারে আগের মতো কোলাহল বেড়েছে, হাটবাজারে বসেছে ব্যবসায়ীরা, মানুষজন আসছে কেনাবেচা করছে, সৃষ্টি হচ্ছে যানযট।
বাজারে প্রাণ কেন্দ্র শাপলা চত্বরে শাপলা স্টোর মালিক বলেছেন, ৩ দিন পরে বাজারে চোখে পড়ার মতো মানুষ দেখতে পাচ্ছি, তাই বেচাবিক্রি হচ্ছে।
শহরতলি ১২ নাম্বার থেকে ব্যাটারী চালিত টমটম চালক তপন চাকমা বলেন, যাত্রী নিয়ে বাজারে আসছি, রাস্তায় কোনো অসুবিধা হয়নি। কিছু সবজি বাজার কিনে আবার যাত্রি নিয়ে চলে যাবো।
খাগড়াছড়ির বৈষম্য বিরোধী ছাত্র নেতা মহিউদ্দিন বলেন, পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে তাই আলুটিলা ঘুরে আসছি।
এর আগে গেল বুধবার খাগড়াছড়ির নিউজিল্যান্ড এলাকায় চুরির ঘটনায় মামুন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করে দীঘিনালা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি লারমা স্কয়ারের দিকে যাওয়ার সময় পাহাড়িরা বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে লারমা স্কয়ারে দোকানপাট ও বসতবাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে পুড়ে যায় শতাধিক দোকানপাট ও বসতবাড়ি। এ ঘটনায় পাহাড়ি ৪ যুবক নিহত হয়। এতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে খাগড়াছড়ি ।