সোনাগাজীতে তিন দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, অভিভাবকদের ক্ষোভ

জাবেদ হোসাইন মামুন, সোনাগাজী (ফেনী)

ফেনীর সোনাগাজীতে ১১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এক যোগে তিন দিন বন্ধ ঘোষণা করেছেন প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। এ নিয়ে অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। অভিভাবকদের দাবি করোনা মহামারি ও তৎপরবর্তী সময়ে দিন দিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঝরে যাচ্ছে। যেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মুখ ফিরিয়ে শিক্ষার্থীরা মাদরাসা ও কিন্ডারগার্ডেনমুখী হচ্ছে। সেখানে সোনাগাজী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার প্রধান শিক্ষকদের যোগসাজসে সরকারি বিধিবহির্ভূতভবে বিদ্যালয় গুলো বন্ধ ঘোষণা দেয়ায় অভিভাবকসহ সচেতন মহলে এ ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যালয়গুলোর প্রধান শিক্ষকগণ সংরক্ষিত ছুটির নামে ছুটি পাওনা রয়েছেন। কিন্তু অপরাপর শিক্ষকরাতো সংরক্ষিত ছুটির আওতায় নেই। তবু কেন সরকারি নিয়ম না মেনে এক যোগে বিদ্যালয়গুলো বন্ধ ঘোষণা করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সচেতন মহলে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, শিক্ষক ও অভিভাবকমহল সূত্রে জানা গেছে, সোনাগাজী উপজেলায় ১১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। শনিবার ২২ অক্টোর সরকারি ছুটি, ২৩ অক্টোবর প্রধান শিক্ষকদের সংরক্ষিত ছুটি ও ২৪ অক্টোবর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শ্যামা কালি পূজার বন্ধ সহ তিন দিন ছুটি ঘোষণা করে বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিজেদের ব্যবহৃত ফেইসবুকে এসব ছুটির ঘোষণা দিয়েছেন।

আমিনুল হক নামে এক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সোনাগাজীর প্রত্যন্তঞ্চলের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো থেকে শিক্ষার্থীরা ঝরে যাচ্ছে। অথচ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এভাবে ছুটি ঘোষণা কোনভাবেই কাম্য নয়। তিন দিনের ছুটির কবলে পড়ে শিক্ষার্থীরা পাঠে অমনোযোগি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মানবাধিকার নেতা কাজী মিজানুর রহমান মিস্টার বলেন, এভাবে এক যোগে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ রাখার বিধান নেই। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। যারা এমন কান্ডে জড়িত রয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

সোনাগাজী উপজেলা সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি, আর এম হাট কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাস্টার শরীয়ত উল্যাহ বলেন, অতিতেও এক যোগে প্রধান শিক্ষকরা ছুটি নিয়েছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে এক যোগে ছুটির আবেদন করলে ছুটি মঞ্জুর করা হয়েছে। ২৫ অক্টেবর বিদ্যালয়গুলো খোলা হবে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষকদের পক্ষ থেকে এক যোগে ছুটির আবেদন করলে তা মঞ্জুর করে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু ভিন্ন কথা বললেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর চট্রগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক ড. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, এক যোগে বিদ্যালয়গুলো বন্ধ রেখে ছুটি ঘোষণার কোন বিধান নেই। বিষয়টি তিনি জেনেছেন, কোয়ারি করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরো দেখুনঃ