সোনারগাঁয়ে ঝুকিঁপূর্ন সেতু দীর্ঘ দিনেও সংস্কার না হওয়ায় একাংশ ভেঙ্গে ট্রাক পড়লো খালে
নজরুল ইসলাম শুভ, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ)।।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার সাহাপুর এলাকায় খালের উপর সড়ক ও জনপথ (সওজের) নির্মিত একটি সেতু দীর্ঘ দিনেও সংস্কার না হওয়ায় একটি ট্রাক সহ সেতুর একাংশ ভেঙ্গে খাদে পড়ে যায়। গতকাল বুধবার দুপুরে মালবাহী একটি ট্রাক পারাপার হওয়ার সময় সেতুর একাংশ ভেঙ্গে খালে পড়ে যায়। এ ঘটনায় বৈদ্যরবাজার ঘাট এলাকার কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালবাহী গাড়ী চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং সাধারন মানুষ ঝুকি নিয়ে রিকসা দিয়ে চলাচল করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সোনারগাঁ উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ও কুমিল্লা মেঘনা উপজেলা ও আড়াইহাজার উপজেলার বাসিন্দাদের চলাচলের একমাত্র পথ এটি। দীর্ঘ দিনে ধরেই উপজেলার মোগরাপাড়া- বৈদ্যেরবাজার সড়কের সাহাপুর এলাকার সড়ক ও জনপথ (সওজের) রাস্তায় নির্মিত সেতুটির একাংশ ভেঙে রয়েছে। সেতুর মাঝখানের একটি বড় অংশ ধসে বিশাল গর্ত তৈরি হয় ও সেতুর রেলিং ভেঙ্গে যায়। ফলে সেতু দিয়ে চলাচল বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে। পরে সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) সেতুর মাঝে একটি স্টিলের প্লেট বসিয়ে এবং সওজ ঝুঁকিপূর্ণ সেতু চিহ্নিত করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়। কোনো রকম যান চলাচল করার জন্য তাদের দায় শেষ করেন। গতকাল বুধবার টাইলস ভর্তি একটি ট্রাক ওই সেতুর একাংশ ও রেলিং ভেঙ্গে খালে পড়ে যায়। ঘটনায় ট্রাকের চালক আক্তার হোসেন ও হেলপার গুরুত্বর আহত হন। তাদের স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় বৈদ্যরবাজার ঘাট এলাকার কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালবাহী গাড়ী চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং সাধারন মানুষ ঝুকি নিয়ে রিকসা দিয়ে চলাচল করছেন।
সেতুটির থেকে কয়েকশ ফুট সামনে গেলেই বৈদ্যেরবাজার ঘাট, যেখানে প্রতিদিন নদীর অপর প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ এ প্রান্ত দিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করে। শুধু তাই নয়, প্রতিদিন ঐতিহাসিক এই ঘাটে মেঘনা নদী থেকে মাছ ধরে জেলেরা বাজার বসাচ্ছে। এলাকার মানুষসহ এই সেতু দিয়ে শত শত যানবাহন চলাচল করছে। সেতুর ওপারে বেশ নদীরঘাটে কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যাদের মালবাহী লরি/ট্রাক এই সেতুর ওপর দিয়েই চলাচল করছে প্রতিনিয়ত। সেতুটির কয়েকটি অংশ ধসে যাওয়ার পাশাপাশি পুরো সেতুটি ফাটলও দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সাহাপুর গ্রামের বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম জানান, এ সেতু দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। তাছাড়া এলাকায় বিভিন্ন ধরনের কৃষিপণ্য ও কোম্পানির মালামাল আনা-নেওয়া করতে হয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে। সেতুটি খালের উপর হলেও এ সেতু দিয়ে তিনটি কোম্পানির ভারি যানবাহনসহ এ অঞ্চলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের যানবাহন চলাচল করে। দ্রæত এ সেতুটি নির্মাণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মেহেদী ইকবাল বলেন, সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে সাইনবোর্ড দেওয়া হয়েছে। ভারি যান চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। সেতুর রেলিং ভেঙ্গে ট্রাক খালে পড়ে যাওয়ার খবর শুনেছি। এ সেতু নির্মাণের জন্য মাটি পরীক্ষা করে নকশা তৈরি করে মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। বাজেট হলেই চলতি অর্থ বছরে এ সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে।