সোনারগাঁয়ে শিশু রিমন হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৪ আসামি গ্রেপ্তার

নজরুল ইসলাম শুভ, সোনারগাঁ(নারায়ণগঞ্জ)।।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের নোয়াগাঁও ইউনিয়নের নয়ানগর এলাকার ধানক্ষেতে ৭ বছর বয়সী শিশু রিমন হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সোমবার ( ২৫ এপ্রিল) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অবস্থিত পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়। এর আগে গত রোববার সোনারগাঁয়ের নয়ানগর এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ইমন (১৭), ( অপ্রাপ্তবয়স্ক), মো. আল-আমিন (৩৫), মো. আনোয়ার হোসেন বাবু (২৫) এবং মো. মানিক মিয়া (৪২)।

সংবাদ সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জ জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, গত ১৬ এপ্রিল বিকেলে ভিকটিম মো. জুনায়েদ হাসান রিমন বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলার জন্য বাসা থেকে বের হয়। তারপর থেকে রিমন আর বাসায় ফিরে না আসায় খোঁজাখুঁজি করে কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরদিন ১৭ এপ্রিল সকালে নয়ানগর এলাকার একটি ধান ক্ষেতে রিমনের লাশ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে রিমনের বাবা বাদি হয়ে ওইদিন ১৭ রাতে সোনারগাঁ থানয় মামলা দায়ের করেন। পিবিআই নারায়ণগঞ্জ গত ২৩ এপ্রিল মামলাটি গ্রহণ করে ২৪ ঘন্টার মধ্যে হত্যাকান্ডের ঘটনার সাথে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করে।

তিনি আরো জানান, হত্যাকান্ডের দুইদিন আগে বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তারকৃত আসামি আল-আমিনের ভাইয়ের ছেলের সাথে মৃত ভিকটিম জুনায়েদ হাসান রিমনের খেলার ছলে ইটের টুকরা দিয়ে ঢিল ছোড়াকে কেন্দ্র করে বিবাদ হয়। ওই বিবাদ ছোটদের পর্যায় থেকে একপর্যায়ে বড়দের পর্যায়ে চলে যায়। এ বিষয়সহ পূর্বের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গ্রেপ্তারকৃত আসামি আল আমিন এবং তার ভাই অপর আনোয়ার হোসেন বাবুর মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ঘটনার আগের দিন দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত আসামি আল-আমিন এবং তার ভাই অপর আনোয়ার হোসেন বাবু ১৭ বছর বয়সী অপ্রাপ্তবয়স্ক ইমনকে এক হাজার টাকার প্রলোভনে মৃত ভিকটিম জুনায়েদ ও রিমনকে খেলার ছলে একা নির্জন স্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজি করে।

পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মৃত ভিকটিম জুনায়েদ ও রিমনকে চক থেকে একটু দূরে ধানক্ষেতের আইলে নিয়ে যায়। সেখানে পূর্ব থেকেই অপেক্ষায় থাকা আসামি আল-আমিন এবং তার ভাই অপর আসামী আনোয়ার হোসেন বাবু অবস্থান করছিল। ভিকটিম জুনায়েদ রিমন তাদের কাছাকাছি আসলেই আসামি আল-আমিন তার কোমর থেকে গামছা বের করে মৃত ভিকটিম জুনায়েদ রিমনের মুখ চেপে ধরে এবং সাথে সাথে ইমন আসামির হাতে থাকা চাকু নিয়ে মৃত ভিকটিম জুনায়েদ রিমনের গলায় উপর্যুপরি আঘাত করে। পরে ওই স্থানে লাশ ফেলে আসে। পরদিন এলাকাবাসীর ধানক্ষেতে লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্বার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা মর্গে প্রেরণ করে।

মামলার পরবর্তী তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন।

আরো দেখুনঃ